Hare to Whatsapp
প্রাক্তন ও বর্তমান দুই মুখ্যমন্ত্রীই ত্রিপুরা ইনফো ডটকম এর মেগা ক্যুইজ এর উচ্ছসিত প্রশংসা করলেন
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ১০, ২০২৪: ত্রিপুরাইনফো ডটকম এবং রাজ্যের সরকার ও বেসরকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের আন্তরিক সহযোগিতায় আজ অল ত্রিপুরা মেগা ক্যুইজের ১৯তম উৎসব রবীন্দ্র ভবনের হল ভর্তি প্রতিযোগী ও দর্শকদের ব্যাপক উপস্থিতিতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এবং গত ১৯ বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে লাগাতার ক্যুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজনের জন্য ত্রিপুরা ইনফো ডটকম ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুলিকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। আজ সকাল সাড়ে দশটা থেকে স্ক্রুটিনি টেস্টের মাধ্যমে রাজধানীর রবীন্দ্র ভবনের ১ নং হল- এ ১৯ তম অল ত্রিপুরা মেগা ক্যুইজ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। স্ক্রুটিনি টেস্ট হয়েছে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে এবং প্রথমে ষোলটি দলকে বাছাই করা হয়। সেখান থেকে ফাইনাল রাউন্ড ক্যুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে ছয়টি দলকে নিয়ে। বিকেল চারটা থেকে ফাইনাল রাউন্ড শুরু হয়।
জানা গেছে এবছর ত্রিপুরা ইনফো ডটকম আয়োজিত মেগা ক্যুইজে প্রথম স্থান অর্জন করেন চিরাগ মজুমদার ও দিক্ষিত বিশ্বাস জুটি। এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন পার্থ প্রতিম ভট্টাচার্য ও প্রীতম ঘোষ জুটি। এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন সাক্ষর দত্ত মজুমদার ও অনির্বাণ কর জুটি। উদ্যোগক্তারা আজ তাদের প্রেস রিলিজে আরও জানিয়েছেন, ১৯তম ত্রিপুরাইনফো অল ত্রিপুরা মেগা ক্যুইজ-এ প্রথম পুরস্কার বিজয়ী জুটিকে এবছর দেওয়া হয়েছে নগদ ৫০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার জুটিকে দেওয়া হয়েছে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও তৃতীয় পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হয়েছে নগদ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া অডিয়েন্স রাউন্ডে মোট দুই শতাধিক আকর্ষণীয় বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা রয়েছে। এবছর দর্শকাসনে বসে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পেরে সেরা ক্যুইজারের পুরষ্কার জিতেছেন ডাঃ সপ্তিক চক্রবর্তী। তিনি মোট ৩ টি পুরষ্কার জিতে “ ত্রিপুরা ইনফো সেরা ক্যুইজার-২০২৪” পুরষ্কার হিসেবে নগদ পাঁচ হাজার টাকা জিতেছেন। এবং এবছর মোট যুগ্মভাবে ৩টি করে পুরষ্কার জিতে রাজ্যের সেরা ক্যুইজিং স্কুল এর পুরস্কার জিতেছে রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল, শ্রীকৃষ্ণ মিশন স্কুল ও আনন্দমার্গ স্কুল । এছাড়া মোট ৪টি পুরষ্কার জিতে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ (টি এম সি) সেরা ক্যুইজিং কলেজের শিরোপা দখল করেছেন। অডিয়েন্স রাউন্ডে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদানকারী স্কুল ও কলেজকে পুরষ্কার হিসেবে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও ছয় হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও অডিয়েন্স রাউন্ডে বাই সাইকেল, স্মার্ট ফোন, আগরতলা-কোলকাতা যাওয়া আসার বিমান টিকিট, রাজধানী আগরতলা শহরের বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিযাপন সহ একাধিক নগদ ও দুই শতাধিক আকর্ষণীয় বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। স্পন্সরড অডিয়েন্স রাউন্ডে প্রতি এক ঘন্টা অন্তর অন্তর বিশেষ প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য একাধিক আকর্ষণীয় বিশেষ পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে।
এটি উল্লেখযোগ্য যে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা এদিন দুপুর ২ টায় অল ত্রিপুরা মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। ক্যুইজের প্রতি রাজ্যের ছেলে মেয়েদের অভূতপূর্ব আকর্ষণ প্রত্যক্ষ করে মুগ্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সত্যিই এগুচ্ছে। ত্রিপুরাইনফো মেগা ক্যুইজে এলেই যে কেউ এটা বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরাইনফো ডটকম এর এই মেগা ক্যুইজের অনুষ্ঠান আজ সত্যিই একটা উৎসব। এর জন্য ছেলেমেয়েরা সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকেন। শুধু ত্রিপুরাইনফোর মেগা ক্যুইজের গুণমান নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা প্রশংসা করেননি, ক্যুইজ মাস্টার ও অডিয়েন্সদের প্রশ্ন ও উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের বুদ্ধিমত্তারও প্রশংসা করেন।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ত্রিপুরা ইনফো ডটকম আয়োজিত মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠান আজ সকলের বার্ষিক অনুষ্ঠান। তবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন মেগা ক্যুইজে এসে দামী পুরষ্কার জিতলেই হবেনা। দেশ ও বিশ্বে কোথায় কি কি ভাল খারাপ হচ্ছে তার বিষয়েও নজর রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ত্রিপুরাইনফো ডটকম এর মেগা ক্যুইজ মানুষকে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করতে শেখায়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীও। পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তিনি বলেন, এধরনের অনুষ্ঠান রাজ্যের স্কুল গুলোতেও হওয়া দরকার। ১৯ বছর ধরে মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠানকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি ত্রিপুরা ইনফো ডটকম ও তাদের সহযোগী সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গুলিকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দিত করেন । বিচারপতি অরিন্দম লোধ, প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমানে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এস সি দাস, লোকায়ুক্ত ত্রিপুরা ডঃ বি কে কিলিকদার, ও এন জি সি ত্রিপুরা এসেট ম্যানাজার শ্রী কৃষ্ণ কুমার, স্বাস্থ্য সচিব কীরন গিত্যে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনের বৃজেশ পান্ডে সহ আরও বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ও সন্মানীত ব্যক্তি বর্গ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। এবং রাজ্যের ছেলেমেয়েদের মধ্যে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে জ্ঞান চর্চার একটি সার্বজনীন অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য উদ্দ্যোক্তা ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুলির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
প্রসঙ্গত, অল ত্রিপুরা মেগা ক্যুইজ, ত্রিপুরাইনফো এবং ত্রিপুরার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার দ্বারা আয়োজিত একটি যৌথ প্রয়াস যা এই বছর ১৯ তম বছরে পদার্পণ করেছে৷ স্কুল অব সায়েন্সের অধ্যক্ষ অভিজিৎ ভট্টাচার্য যিনি ২০০৬ সাল থেকে আয়োজিত প্রথম ত্রিপুরাইনফো মেগা ক্যুইজের একমাত্র ক্যুইজ মাস্টার ছিলেন এই বছরও তাকে অন্যান্য ক্যুইজ মাস্টারদের সাথে দেখা গেছে। অন্যান্য বছরের মতো এই বছরের আরেকজন ক্যুইজ মাস্টার ছিলেন নন্দু কুমার পানিক্কর, যিনি রাজ্য পরিকল্পনা দপ্তেরর একজন দক্ষ অফিসার। তিনি ২০১০ সাল থেকে ত্রিপুরাইনফো মেগা ক্যুইজে একজন ক্যুইজ মাস্টার হিসেবে যুক্ত আছেন। এছাড়া, আগরতলার অক্সিলিয়াম গার্লস স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মাত্র ১২ বছর বয়সী মধুজা দেবনাথ (মাহি) এবছর তিনজন ক্যুইজ মাস্টারের একজন ছিলেন। খুদে এই ক্যুইজ মাস্টারের পারফরম্যান্সও সবার নজর কেড়েছে।
এছাড়া, এই বছরের মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠানের প্রধান উপস্থাপক ছিলেন রাজ্যের স্বনামধন্য অ্যানকার সুভ্রজিৎ ভট্টাচার্য, প্রকৌশলী (ইটিডিসি) সুভাশীস কর এবং আগরতলা দূরদর্শনের খণ্ডকালীন ভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপক শাশ্বতী ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে অল ত্রিপুরা মেগা কুইজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে, ত্রিপুরাইনফো ডটকমের প্রধান সম্পাদক শেখর দত্ত বলেন যে, ত্রিপুরাইনফো মেগা ক্যুইজ ইভেন্টের উদ্দেশ্য হল যুব ও ছাত্রছাত্রী সহ সমাজের সকল স্তরের লোকেদের জ্ঞান আহরণ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্দীপনার জন্য তথ্য আদান-প্রদানের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা। আয়োজক সংগঠনের প্রধান জয়ন্ত দেবনাথ (সম্পাদক এবং এমডি) জানান, এবছর প্রায় আট শত ছেলেমেয়ে তাদের নাম নিবন্ধন করেছিল। এত বড় একটা অনুষ্ঠান আয়োজনে রাজ্যের সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে তিনি ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।