Hare to Whatsapp
রাজ্যে ধর্মীয় পর্যটনের বিকাশে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ১, ২০২৪: অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে শুভ শক্তির আহ্বানে প্রতিবছর দীপাবলি উৎসব পালন করা হয়। দেশ বিদেশের অগণিত ধর্মপ্রাণ মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে এই দিনটি উদযাপন করার জন্য। ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরে দীপাবলি উৎসব ও মেলার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রথমে কল্যাণ সাগরে কল্যাণ আরতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং রাজ্যের কল্যাণার্থে দেবী মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন। তারপর তিনি মন্দির সংলগ্ন ধন্যমানিক্য মুক্তমঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে ৩ দিনব্যাপি দীপাবলি উৎসব ও মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। দীপাবলি উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ধর্মীয় পর্যটনের বিকাশে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। প্রসাদ প্রকল্পের মাধ্যমে উদয়পুর মাতাবাড়ি মায়ের মন্দিরকে নবরূপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই মাতাবাড়ি মন্দিরে পুণ্যার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ফলে দেশ বিদেশের লাখো পর্যটক এই ত্রিপুরাসুন্দরী মায়ের দর্শন করতে আসেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রাজ্যের সকল অংশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। সরকার সর্বদা সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে তৎপর থাকে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য শ্রেষ্ঠ হলেই, ভারত শ্রেষ্ঠ হবে। মাতাবাড়ি দীপাবলির উৎসব ও মেলা জাতি জনজাতি অংশের মানুষের মিলনক্ষেত্র হিসেবে পরিগণিত, যা সর্বদা ঐক্যের বার্তা বহন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব বলেন, দীপাবলি উৎসব ও মেলা শুধুমাত্র সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী লোকেদের মেলা নয় । এই উৎসব ও মেলা প্রত্যেকটি ধর্মের ও জাতির মিলন মেলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, উদয়পুর পুরপরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার, গোমতী জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি সুজন কুমার সেন, মাতাবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান শিল্পী দাস, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ত্রিপুরা বিভূষণ ড. অরুণোদয় সাহা, জেলা পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন মাতাবাড়ি উৎসব ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক অভিষেক দেবরায়। তিনি আগত সকল পুণ্যার্থী, দর্শণার্থীদের সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এই মেলা উপভোগ করার জন্য আবেদন জানান। তিনি বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে মন্দিরে মায়ের পূজার্চনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে অতিথিগণ দীপাবলি উৎসবের উপর স্বরণিকার আবরণও উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে মাতাবাড়ি উৎসব ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক অভিষেক দেবরায় ১ লক্ষ টাকা, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ত্রিপুরা বিভূষণ ড. অরুণোদয় সাহা ৬ লক্ষ টাকা, সমাজসেবী সুকান্ত সাহা ৫০ হাজার টাকা এবং এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং উইংস-এর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক ত্রিপুরাসুন্দরী টেম্পল ট্রাস্টে দান হিসেবে ত্রিপুরাসুন্দরী টেম্পল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিগণ মেলায় বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি প্রদর্শনী মণ্ডপগুলি ফিতা কেটে দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা।