Hare to Whatsapp
এভাবে ত্রান বিলি ? সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, মাক্স পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে না, অশনিসংকেত!
By Our Correspondent
আগরতলা, মে ২, : সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, মাক্স পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে না। এবং এভাবেই গাদাগাদি করে ত্রান সামগ্রী নেওয়া হচ্ছে। যারা বা যে সংস্হা ত্রান দিচ্ছে তাঁরা ও এই ভয়ংকর বিপদকে আমল দিচ্ছে না। এঁরা যে অজান্তেই শতশত লোকজনের ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে তা বোঝার চেষ্টা করছে না। এতো শিয়রে মৃত্যুদূতের হানা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।
এই ভয়ংকর চিত্র , যেখানেই ত্রান দেওয়া হচ্ছে এর অধিকাংশ স্হানেই দেখা যাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে যেসব ছবি আসছে সেগুলো ভালো ভাবে দেখলেই তা ভেসে উঠবে।
মানবসভ্যতার অস্তিত্ব আজ প্রচন্ড সংকটে। প্রতিদিন শতশত লোকজনের প্রান গিলে খাচ্ছে হায়েনারুপি করোনা ভাইরাস। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই আজ মহামারীই বলুন আর অতিমারীই বলুন তার গোগ্রাস। সবাই ঘরবন্দি। চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা নিজেদের বিপন্ন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা চালাতে গিয়ে ওঁরা ও করোনার কবলে পড়ছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের দিন কবে আসবে তাও বলা যাচ্ছে না।
বিপন্নদের কাছে ত্রান পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে নানা ভাবে। সরকার তো আছেই এছাড়াও আছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ক্লাব, সরকারী সংস্থা। এঁরা পালা করে ত্রান বিতরন করছে। প্রতিদিনের সংবাদপত্রে চোখ বোলালেই বোঝা যায় সাহায্যের ব্যাপকতা। যারা ত্রান সাহায্য পাচ্ছেন তাঁরা তো অস্বাভাবিক ভাবেই উপকৃত হচ্ছেন। কিন্তু খোঁজ নিলেই দেখা যাবে অসংখ্য মুখ রয়েছে যারা দিনভর ছুটতে থাকে বিভিন্ন অঞ্চলে। মানে এদের কাছে খবর থাকে কোথায় কোথায় ত্রান দেওয়া হবে। এঁরা সেখানেই সাতসকালে ছুটে যাচ্ছে আর চাল, ডাল, তেল,সেনিটাইজার ও মাক্স নিয়ে ফিরছে। এদের একটা বড় অংশের অবস্হা হচ্ছে তাদের মত, যারা বিয়ে বাড়ীতে,অন্নপ্রাশনের সময় পৌঁছে যায় আর মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় তাদের মতো। এদের বাড়ীতে গেলে দেখা যায় ঘরে চাল, ডাল, তেলের প্যাকেটের স্তুপ।
কোন এক বিখ্যাত সংস্হার রাজ্যশাখা থেকে ঠিক করা হল কোন এক অঞ্চলে ত্রান দেওয়ার দিনক্ষণ। ঠিক এর আগের দিন রাজ্যিক প্রধান দুজন কর্মী পাঠালেন বেনিফিসিয়ারিদের খোঁজ খবর নিতে। যথারীতি এরা গেলেন, দু-তিন বাড়ী গিয়ে ওদের চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম। কেননা প্রত্যেকের ঘরেই ১০/১৫ টি করে ৫কেজি চাল,ডাল ও অন্যান্য সামগ্রীর স্তুপ। ওরা তো তাজ্জব। এদের আবার কিভাবে সাহায্য দেওয়া হবে। ফিরে এসে কর্মীরা জানালেন সব কিছু রাজ্যিক প্রধানকে। তাৎক্ষণিকভাবে কর্মসূচি বাতিল করে অন্যত্র দেওয়া হল। রামকৃষ্ণ মিশন এখন যেখানে ত্রান সাহায্য বন্টন করে ,তার আগেই তাঁরা সব খোঁজ খবর নেন। তারপর দেওয়া হয়ে থাকে সাহায্য।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এখন যে হারে ত্রান দেওয়া হচ্ছে, এবং যাদের দেওয়া হচ্ছে তাদের ৫০ শতাংশ ওই সুবিধাভোগীও সুযোগসন্ধানী। যদি উদ্যোক্তাদের তরফে বিস্তর খবর নিয়ে ত্রান দেওয়া হয় তাহলে প্রকৃত দূঃস্হদের কাছেই পৌঁছবে । অনেকেই বলছেন রান্না করা খাদ্য দিতে। তাঁদের যুক্তি এরাতো ইতিমধ্যেই সরকারী সাহায্য, বিনেপয়সার চাল, টাকা পেয়েছেন। তাদের মধ্যে এভাবে চাল ডাল দেওয়ার তো কোন মানেই হয় না। এতে করে একশ্রেনীর কাছে মজুত গড়ে উঠছে, অন্যরা বিপন্ন হচ্ছে।
সরকার বা দাতা সংস্থাগুলি এগুলো ভাবনা চিন্তা করা প্রয়োজন। প্রয়োজন সবার মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব এবং মাক্স ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।