Hare to Whatsapp
সরকার সমস্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নিয়োগ নীতি প্রণয়ন করেছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, অক্টোম্বর ৬, ২০২৪: নবীন টিসিএস ও টিপিএস গ্রেড-টু অফিসারদের রাজ্যের এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। ৫ অক্টোবর বিকেলে মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে টিপিএসসির মাধ্যমে নবনিযুক্ত টিসিএস এবং টিপিএস গ্রেড-টু অফিসারদের মধ্যে চাকরির অফার হাতে তুলে দিয়ে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী এই আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার কাজের মাধ্যমেই স্বচ্ছতা প্রমাণ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য স্থির রেখে পড়াশুনা চালিয়ে গেলে সফলতা আসবেই। টিসিএস ও টিপিএস অফিসার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারা এই প্রচেষ্টার ফল। সফলতা অর্জন করার জন্য সুস্থ পরিবেশেরও প্রয়োজন হয়। বর্তমান সরকার রাজ্যে এই সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার সমস্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নিয়োগ নীতি প্রণয়ন করেছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাকেই মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনার অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগের জন্য রাজ্যে জেআরবিটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাছাড়াও টেটের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। আরও নিয়োগ করার প্রক্রিয়া চলছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে যারা চাকরিতে অফার পাচ্ছেন তারা প্রত্যেকেই স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রত্যেক চাকরি প্রাপকই নিজেদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। আজকে যারা অফার পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই সরকারের অংশ হিসেবে নিজেদের যুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, প্রশাসন পরিচালনায় টিসিএস এবং টিপিএস অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে টিসিএস অফিসাররাই জনগণ এবং সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেন। সরকারি জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি প্রান্তিক মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। প্রশাসনকে গতিশীল ও জনকল্যাণমুখী করে গড়ে তুলতে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতিসাধন করেছে। এখন রাজ্যে দূরবর্তী স্থান বলে কিছুই নেই। টিসিএস এবং টিপিএস অফিসারগণ যে যেখানেই কাজ করুন স্বচ্ছ নীতি নিয়ে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হবে। এতেই মানুষ তাকে মনে রাখবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কর্মক্ষেত্রে নিজেদের প্রযুক্তিগতভাবে তৈরি রাখতে হবে। রাজ্য সরকার টিসিএস অফিসারদের নিবিড় অভিজ্ঞতা অর্জনের স্বার্থে রাজ্যের বাইরেও তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা এখন পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত ই-অফিস বাস্তবায়নে দেশের মধ্যে একটি অগ্রণী রাজ্য।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসের (ডা.) মানিক সাহা বর্তমান সরকারের সময় বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগ এবং শিক্ষক নিয়োগের পরিসংখ্যান এবং আগামীতে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়ার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সরকারের কাজকর্মের মূল অভিমুখই হচ্ছে স্বচ্ছতার সাথে জনকল্যাণকর কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন এবং ত্রিপুরাকে শ্রেষ্ঠ রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা। এক্ষেত্রে এই নবীন অফিসারদের সরকারের সাথে সমন্বয় রেখে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি আজকের এই অফার প্রাপক প্রত্যেক অফিসারদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে রাজ্য মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, অফার প্রাপক নবীন টিসিএস এবং টিপিএস গ্রেড-টু অফিসারদের জন্য আজকের দিনটি উল্লেখযোগ্য। মুখ্যসচিব নবীন অফিসারদের নতুন এই চাকরিকে নিছক পেশা হিসেবে না নিয়ে মানুষের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ এসেছে বলে ধরে নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, মানুষের স্বার্থে কাজ করতে পারলেই এই চাকরির আসল স্বার্থকতা আসবে। সর্বদা সেবামূলক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। নিজেকে প্রযুক্তিগতভাবে গড়ে তুলতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি ই-ক্যাবিনেট ই-অফিস ইত্যাদির কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরাকে শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং বিকশিত ত্রিপুরা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে টিসিএস এবং টিপিএস অফিসারদের বড় ভূমিকা রয়েছে। উল্লেখ্য, আজ মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে টিসিএস গ্রেড-টু ৩০ জন এবং টিপিএস গ্রেড-টু ১০ জনের মধ্যে অফার বন্টন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা সহ উপস্থিত অতিথিগণ তাদের হাতে অফার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জিএ পি অ্যান্ড টি সচিব অপূর্ব রায়। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন জিএ পি অ্যান্ড টি অতিরিক্ত সচিব ড. সমিত রায় চৌধুরী।