Hare to Whatsapp
স্বচ্ছ পরিবেশ বজায় রাখতে স্বচ্ছ মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, অক্টোম্বর ৩, ২০২৪: স্বচ্ছ পরিবেশ বজায় রাখতে স্বচ্ছ মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। স্বচ্ছতার কোনও সমাপ্তি হতে পারে না। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ২ অক্টোবর আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং হলে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক স্বচ্ছতা হি সেবা অভিযান ২০২৪-র সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্বচ্ছতা হি সেবা অভিযান কর্মসূচি রাজ্যের উদয়পুর থেকে শুরু হয়েছিল। আজ ২ অক্টোবর জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে পক্ষকালব্যাপী এই অভিযানের সমাপ্তি হচ্ছে। এই অভিযানের থিম ছিল ‘স্বভাব স্বচ্ছতা, সংস্কার স্বচ্ছতা'। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিনের জীবনযাপনে স্বচ্ছতার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস স্কুল, কলেজ, অফিস, বাসস্থান, পাড়া, রাস্তাঘাট, বাজার, বাসস্ট্যান্ড সর্বত্র বজায় রাখা সুস্থ সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে স্বচ্ছ ভারত গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকল পেশার মানুষ স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অংশ নেন। এক অভূতপূর্ব জনজাগরণ পরিলক্ষিত হয়। রাজ্যে স্বচ্ছতা কর্মসূচিতে মহিলা স্বসহায়ক দলগুলিও যুক্ত হয়েছে। এরফলে তাদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়ন ঘটেছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী স্বচ্ছ স্ট্রিট ফুড উদ্যোগ হিসেবে শিশু উদ্যান পরিসরে ভেন্ডিং জোনেরও উদ্বোধন করেন। তাছাড়াও বর্জ্য থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরির প্রদর্শনীটিও মুখ্যমন্ত্রী ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার বলেন, স্বচ্ছতার কোনও সীমারেখা নেই। স্বচ্ছতা সারা জীবন আমাদের সঙ্গে জড়িত। স্বচ্ছতা হি সেবা অভিযানে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্বচ্ছতার গুরুত্বকে সমস্ত অংশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। স্বচ্ছতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার আগরতলা পুরনিগমকে দু'বার পুরস্কৃতও করেছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পূর্ত (পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান) দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, স্বচ্ছ ভারত মিশন (আরবান)-র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর পদ্মশ্রী জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বচ্ছ ভারত মিশন (আরবান)-র মিশন ডিরেক্টর রজত পন্থ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নগর উন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং। অনুষ্ঠানে স্বচ্ছতার উপর সঙ্গীত সহ একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বচ্ছতার উপর শপথ বাক্যও পাঠ করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বচ্ছতা কর্মসূচিতে উৎকৃষ্ট কাজের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কার দেওয়া হয়। বর্জ্য থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরির ক্ষেত্রে সিপাহীজলা জেলা এবং স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা ধর্মনগর পুরপরিষদ শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছে। সেরা ব্ল্যাক স্পট ক্লিনিং-এর ক্ষেত্রে গোমতী ও দক্ষিণ জেলা এবং বিলোনীয়া পুরপরিষদ এবং সোনামুড়া নগর পঞ্চায়েত পুরস্কৃত হয়েছে। এক পেড় মা কে নাম অভিযানে উৎকৃষ্ট কাজের জন্য খোয়াই জেলা এবং উদয়পুর পুরপরিষদ সেরা পুরস্কার পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া কভারেজের ক্ষেত্রে উত্তর ত্রিপুরা জেলা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছে। বেশি সংখ্যায় সাফাই মিত্র শিবির আয়োজনের জন্য পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা এবং আগরতলা পুরনিগম পুরস্কৃত হয়েছে। স্বচ্ছতায় সার্বিকভাবে উৎকৃষ্ট কাজের জন্য খোয়াই জেলা এবং আমবাসা পুরপরিষদ পুরস্কার পেয়েছে। তাছাড়া ক্লিন অফিস গ্রিন অফিস অভিযানে ডাইরেক্টরেট স্তরে অফিসের ক্ষেত্রে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের ডাইরেক্টরেট, জেলাশাসক কার্যালয়ের ক্ষেত্রে খোয়াই এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক কার্যালয়, মহকুমা শাসক কার্যালয়ের ক্ষেত্রে করবুক মহকুমা শাসক কার্যালয়, স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা অফিসের ক্ষেত্রে আমবাসা পুরপরিষদ অফিস পুরস্কার পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট পুরস্কার প্রাপকদের হাতে পুরস্কারগুলি তুলে দেন। তাছাড়া অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী কয়েকজনের হাতে ভেন্ডিং লাইসেন্স সার্টিফিকেট তুলে দেন।