Hare to Whatsapp
মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তরে ১২৬৭টি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪: মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তরে ১,২৬৭টি পদে নিয়োগ ও ১৯৩টি নতুন পদ সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, বন দপ্তরের অধীনে ১৯৪ জন ফরেস্ট গার্ড নিয়োগ করা হবে। দপ্তরের উদ্যোগে খুব শীঘ্রই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। রাজস্ব দপ্তরের অধীনে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৫৪টি (গ্রুপ-সি) শূন্য পদে লোক নিয়োগ করা হবে। এই ২৫৪টি পদের মধ্যে রয়েছে ১৪টি রেভিনিউ ইন্সপেক্টর, জুনিয়র সার্ভেয়র ১০টি, তহশিলদার ১৬৪টি, মোহড়ার ৩৭টি এবং আমিন রয়েছে ২৯টি। খাদ্য মন্ত্রী জানান, নির্বাচন দপ্তরের অধীনে প্রোগ্রামার (গ্রুপ-বি) নন-গেজেটেড পদে ১ জন এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার (গ্রুপ-সি নন-গেজেটেড) পদে ২ জন লোক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় গৃহিত হয়েছে। টিপিএসসি'র মাধ্যমে এই পদগুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। রাজ্য অর্থ দপ্তরের অধীনে ১২টি মাল্টিটাস্কিং স্টাফ (পিওন) গ্রুপ-ডি (নন-টেকনিক্যাল) পদে লোক নিয়োগ করা হবে। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে ২১৮টি সাব- ইন্সপেক্টর (মহিলা ও পুরুষ) শূন্যপদে লোক নিয়োগ করা হবে। টিপিএসসি'র মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। জিএ এবং এসএ (GA & SA) দপ্তরের অধীনে ১৯ জন ড্রাইভার পদে লোক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জিএ এবং এসএ (GA & SA) দপ্তরের অধীনে ৮৮ জন মাল্টি টাস্কিং স্টাফ (গ্রুপ-ডি) পদে লোক নিয়োগ করা হবে। শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ৩৫২টি পদে প্রি-প্রাইমারি টিচার নিয়োগ করা হবে। টিআরবিটি'র মাধ্যমে এই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ১২৫টি স্কুল লাইব্রিয়ান পদে লোক নিয়োগ করা হবে। মন্ত্রী জানান, দপ্তরের উদ্যোগে শীঘ্রই এই বিভিন্ন পদগুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। খাদ্য মন্ত্রী আরও জানান, শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ১১৮টি স্নাতকোত্তর শিক্ষক (কম্পিউটার সায়েন্স) পদ সৃষ্টির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভায়। পাশাপাশি যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধীনে ৭৫টি জুনিয়র পিআই পদ পুনঃসৃষ্টি করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান, গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরের অধীনে দূর্গাপুজা উপলক্ষ্যে সারা রাজ্যের ৯ লক্ষ ৮৩ হাজার রেশন কার্ড হোল্ডারদের বিনামূল্যে ১ কেজি চিনি, ২ কেজি ময়দা এবং ৫০০ গ্রাম সুজি প্রদান করা হবে। এতে করে রাজ্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৬ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে ভোক্তারা এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন বলে মন্ত্রী জানান। তিনি আরও জানান, প্রতিবছরই দপ্তরের উদ্যোগে রেশন কার্ড ভোক্তাদের ভুর্তুকি মূল্যে পণ্য দ্রব্য দেওয়া হয়ে থাকে।
কিন্তু এবছর বন্যা পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আসন্ন দুর্গাপূজায় বিনামূল্যে এই পণ্য সামগ্রী ন্যায্য মূল্যের দোকানের মাধ্যমে ভোক্তাদের প্রদান করা হবে। তিনি আরও জানান, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধীনে প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ (ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণী) যা ৪০০ টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় গৃহীত হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যের কৃষি কলেজে একজন পূর্ণ সময়ের জন্য অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্যও মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী জানান, নজরুল কলাস্থিত রাজ্যের একমাত্র টিএফটিআই (TFTI)-কে আপগ্রেডিং করার লক্ষ্যে একজন পরামর্শদাতা নিয়োগ করার অনুমোদন মন্ত্রিসভায় দেওয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী জানান, রাজ্যের নিজস্ব একটি লোগো/প্রতীক নির্ধারণের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠানোর জন্য মন্ত্রী সভায় অনুমোদন দিয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বাইরে খাদ্য দপ্তর সম্পর্কিত কিছু সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি জানান, সারারাজ্যে খাদ্য দপ্তরের অধীনে ৬২৫ জন শ্রমিক রয়েছে। তাদের সবাইকে পূজার বোনাস উপলক্ষ্যে ২ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হবে। খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তর এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। খাদ্য মন্ত্রী আরও জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর স্টেট লেভেল সেমিনার অন কনজিওমার প্রোটেকশান আয়োজন করা হবে। সেখানে রাজ্যের সব কাগজের রেশন কার্ডগুলিকে পিভিসি কার্ডে রূপান্তরিত করার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে। পাশাপাশি দপ্তরের উদ্যোগে ভোক্তা সংবাদ যা প্রতি তিনমাসে একবার ভোক্তাদের জনসচেতনতায় প্রকাশ করা হবে এবং একটি তথ্য চিত্রের সূচনা করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার, খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারি প্রমুখ।