Hare to Whatsapp
বিদেশী দর্শনকে অবলম্বন করে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করতেন পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪: পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখর রাষ্ট্রবাদী পুরুষ ও একাত্ম মানবতাবাদের প্রণেতা। স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে উন্নয়ন ও জনকল্যাণে কি কি পন্থা অবলম্বন করতে হবে তা পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জীবন দর্শন, সাহিত্য রচনার মধ্যে বারবার ফুটে উঠছে। ২৫ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের রাজ্যভিত্তিক জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মরণোত্তর পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জাতীয় সংহতি পুরস্কার ব্রজেশ চক্রবর্তীকে দেওয়া হয়। সামাজিক কাজ এবং জনসংযোগ রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য তাঁর পরিবারের সদস্যা গায়িত্রী চক্রবর্তীর হাতে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ এই পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার হিসেবে নগদ ১ লক্ষ টাকার চেক, স্মারক, শাল তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে মহাবিদ্যালয়স্তরের পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের উপর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে শচীন দেববর্মণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী স্নেহা সাহা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী দেবাত্রি নন্দী এবং রামঠাকুর কলেজের ছাত্র মুজিবর রহমান। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জীবনী নিয়ে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতীয় সভ্যতার ঐতিহ্য আমাদের গণতন্ত্র। বিদেশী দর্শনকে অবলম্বন করে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করতেন পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি-পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মতো মনীষীদের দর্শন ও ভাবনাকে ভিত্তি করে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু বিগত দিনের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কখনোই এইসব মহাপুরুষদের জীবন দর্শন ও কর্মপন্থা দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করার উদ্যোগ নেয়নি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর তাঁদের দেখানো পথেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। যার ফলে দেশের প্রতিটি প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া মানুষের কল্যাণে একের পর এক জনকল্যাণমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা নয়াদিল্লিস্থিত ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অনির্বাণ গাঙ্গুলি বলেন, পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ছিলেন রাজনৈতিক দার্শনিক, সুসংগঠক, লেখক, সম্পাদক এবং সর্বোপরি একজন দেশভক্ত। ভারতবর্ষের কল্যাণে তাঁর পরিকল্পনা ছিল দূরদর্শিতায় পরিপূর্ণ। তিনি সবসময় জাতীয় সত্ত্বার কথা বলতেন। তিনি বলতেন, জাতীয় সত্ত্বা ছাড়া স্বাধীনতা কোনও কাজে আসবে না। অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শ্রীগাঙ্গুলি এবং তাঁর স্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ২২টি মহকুমাতেও পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবতী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য প্রমুখ। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ওপেন ক্যুইজ প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়।