Hare to Whatsapp
ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনে রাজ্য সরকারও রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর আগরতলার টাউন হলে রাজ্যের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার যাত্রাকে আরও সহজতর করার লক্ষ্যে সিএম-সাথ (CM - SATH) প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে সফল হওয়া মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সিএম-সাথ প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচি তৈরি করা এবং প্রকৃত অর্থে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, গুণগত শিক্ষা ও শিক্ষন প্রক্রিয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিশ্চিত করা, অবহেলিত, দরিদ্র, জনজাতি, মহিলা ও সংখ্যালঘুদের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করা, যোগ্য ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ, ঋণ ইত্যাদির মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা এবং রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে জাতীয় শিক্ষানীতি ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করা।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের মেধাক্রম অনুযায়ী ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য ৫ হাজার টাকা করে এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ফলাফলের মেধাক্রম অনুসারে ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ৩ বছরের জন্য মাসিক ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।এই প্রকল্পে ব্লকস্তরে ১৫২ জন, নগর পঞ্চায়েত স্তরে ১২ জন, পুর পরিষদ স্তরে ২৬ জন এবং আগরতলা পুর নিগম স্তরে ১০ জন করে মোট ২০০ জন সুবিধাভোগীকে নির্বাচন করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রতিটি জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিকের মাধ্যমে এই ২০০ জন সুবিধাভোগীকে নির্বাচন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটি একটি বৃত্তিমূলক প্রকল্প, যা পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবে।
আর্থিক অভাবে কোন শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সে লক্ষ্যেই এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রথম বছরে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় বছরে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা এবং তৃতীয় বছর থেকে ৩ কোটি টাকা করে ব্যয় করা হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তা কার্যকরও করছে। দশম শ্রেণী পাশ ৩০ জন সেরা ছাত্রছাত্রীকে নীট, জেইই ইত্যাদির পরীক্ষার জন্য উন্নতমানের কোচিং নিতে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘সুপার-৩০’ নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের জন্য প্রতিবছর ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হচ্ছে। নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘ত্রিপুরা সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন' এবং 'ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন' চালু করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মৌলিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘নিপুন ত্রিপুরা' প্রকল্প চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজ্যে ২০২২ সালে 'বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প' চালু করা হয়। রাজ্যে এখন পর্যন্ত ১২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। নবম শ্রেণী উত্তীর্ণ প্রায় ১ লক্ষ ছাত্রীদের মধ্যে বাইসাইকেল প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের তথ্য মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে মধ্যশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা বলেন, মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের যাতে আর্থিক অভাবে পড়াশোনায় বাধাপ্রাপ্ত না হয় সেই লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষা দপ্তর সিএম-সাথ প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যা আজ থেকে চালু করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল ২০০ জন শিক্ষার্থীকে তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন এসসিইআরটি'র অধিকর্তা এল, ডার্লং। অনুষ্ঠানে মঞ্চে ৮টি জেলা থেকে ২ জন করে শিক্ষার্থীকে এই প্রকল্পের অর্থরাশির প্রতীকি চেক তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা তাদের হাতে এই চেক তুলে দেন।