Hare to Whatsapp
রাজ্যের উচ্চ শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে সকল অংশের জনগণের সহযোগিতা কামনা মুখ্যমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪:
চলতি মাসের ২২শে সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহারাজা বীর বিক্রম শতবার্ষিকীভবনে অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘ, ত্রিপুরা (মহাবিদ্যালয় শিক্ষা)-র এক বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এদিনের এই মহতী সভার শুভ উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. মানিক সাহা। এই পর্বে অংশগ্রহণ করেন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি অর্থাৎ অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক মহেন্দ্র কাপুরজী এবং শৈক্ষিক মহাসংঘের সি ইউ কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর অরবিন্দ মাহাতো। মূল অনুষ্ঠানের শুরু হয় মাতৃবন্দনা পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘ, ত্রিপুরা (মহাবিদ্যালয় শিক্ষা)-র সভাপতি অধ্যাপক ড.অর্জুন গোপ। তিনি বলেন,নিয়োগ নিয়ে সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে । ড.গোপ তার ভাষণে সংঘের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা এবং পেশাগত সুযোগ সুবিধা ও ছাত্র-স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। এনআরএফ তালিকায় ত্রিপুরার প্রাচীন বিভিন্ন কলেজের নাম নথিভুক্তকরণ, নৈতিক শিক্ষা, ইউজিসি স্কেলের সঠিক প্রয়োগ, আত্মনির্ভরশীল ভারত গঠন এবং অনুসন্ধান রিচার্জ ফাউন্ডেশন সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন। মঞ্চে আসীন অতিথিদের সম্মুখে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শৈক্ষিক মহাসংঘের উদ্যোগে "বিকশিত ভারত"শিরোনামে একটি সম্পাদিত পুস্তকের আবরণ উন্মোচন করা হয়।
সভাকক্ষে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানানোর পর, বক্তব্য উপস্থাপন করেন শৈক্ষিক মহাসংঘের সি ইউ কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর অরবিন্দ মাহাতো। তিনি তাঁর বক্তব্যে শিক্ষকতা সমাজকে কিছু দেওয়ার জন্য, রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য, রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য এই বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।বক্তব্য রাখেন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘের আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি মহেন্দ্র কাপুর জী। কাপুর জী তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন,শিক্ষকের কর্তব্যবোধ, ভারতের গৌরব, সংস্কৃতি বিষয়ে । সেই সঙ্গে শিক্ষক সমাজের সব সমস্যার সমাধান করতে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে, বলে আশা প্রকাশ করেন । তিনি বলেন "সব শিক্ষার্থী আমাদের আরাধ্য" । অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘ- ত্রিপুরা(মহাবিদ্যালয় শিক্ষা)-র পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে এক লাখ টাকা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন মহাসংঘের সভাপতি ড. অর্জুন গোপ এবং সাধারণ সম্পাদক তীর্থরাম রিয়াং।" বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৪"- এর মূল কেন্দ্রে আসীন থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থাৎ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তার ভাষণে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষার সাথে জড়িত সকল অংশের জনগণের কাছে আহ্বান রাখেন উচ্চ শিক্ষাঙ্গনের সার্বিক উন্নতি উত্তরোত্তর আরো কিভাবে শ্রীবৃদ্ধি করা যায়, সেই বিষয়ের দিকে নজর দেওয়ার জন্য। ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্ক, শিক্ষাঙ্গনের শান্তি-শৃঙ্খলা, পঠন পাঠনের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, একজন শিক্ষককে সবাই মান্যতা প্রদান করেন, শিক্ষক সমাজের মেরুদন্ড বলেই তিনি মনে করেন।এই শৈক্ষিক মহাসংঘের রাষ্ট্রবাদী চিন্তাধারাকে তিনি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। যুবসমাজকে এইচ আই ভি- র মতো ভয়াবহ সংক্রমণ এর ব্যাপারে সচেতনতা প্রদান করা ও শিক্ষকদের দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন।এই সময়ে এ বি আর এস এম -এর মতো একটি সংগঠনের প্রয়োজন ছিল বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন। কলেজগুলোর জন্য শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজটি ও খুব শিঘ্রই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন।পরবর্তী পর্বে বিরতি শেষ হলে সভা পুনরায় শুরু হয় "খন্ড প্রমুখ রিপোর্ট" পেশ করার মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি পেশ করা হয় বার্ষিক সাধারণ রিপোর্ট। রিপোর্ট পেশ করেন শৈক্ষিক মহাসংঘের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তীর্থরাম রিয়াং।সভাগৃহে "অডিট রিপোর্ট" পেশ করেন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘ, ত্রিপুরা (মহাবিদ্যালয় শিক্ষা)-র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শ্যাম সুন্দর সরকার । পুরোনো কার্যনির্বাহী কমিটি ভেঙে দিয়ে আগামী তিন বছরের জন্য একটি নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।এই নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন অধ্যাপক তীর্থরাম রিয়াং এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক দেবাশিস রায় চৌধুরী উৎসাহ ও উদ্দীপনাসহ সভাগৃহে ৬৫০ জনের উপর উপস্থিত ছিলেন শৈক্ষিক মহাসংঘের সাধারণ সদস্য সদস্যা। অবশেষে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৪ এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক শ্যাম সুন্দর সরকার। সমাপ্তি পর্বে অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘের সাধারণ সদস্য সদস্যাবৃন্দ একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন।