Hare to Whatsapp
ত্রিপুরায় পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪: রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে মানুষের আর্থসামাজিক মানোন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। বিগত বছরগুলিতে যারা এ রাজ্যে সরকার পরিচালনা করেছে তাদের মধ্যে ত্রিপুরার পর্যটন শিল্পের বিকাশের কোনও চিন্তা ভাবনা ছিল না। বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ত্রিপুরায় পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর কমলপুরের সানাইয়া রিয়াং পাড়াতে সুলমা ডঙ্গুর তুইসুই ঝর্ণাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথাগুলি বলেন। এই অনুষ্ঠানের আগে মুখ্যমন্ত্রী কমলপুরের নাকাশিপাড়ায় আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, স্বদেশ দর্শন প্রকল্পে সিপাহীজলা, নীরমহল, উদয়পুর, উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ, জম্পুইহিল প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়নের কাজ চলছে। রাজ্যে বিভিন্ন পর্যটন স্থলগুলিকে কেন্দ্র করে পরিবেশবান্ধব ৪১টি লগহাট চালু করা হয়েছে। আরও ১০টি লগহাট শীঘ্রই চালু করা হবে। আগরতলার উজ্জয়ন্ত প্রাসাদে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে রাজবংশের ইতিহাস প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রসাদ প্রকল্পে মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের উন্নয়ন হচ্ছে। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডম্বুর জলাশয়, ছবিমুড়া এবং জম্পুইহিলে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম চালু করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আরও বলেন যে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার অন্তর্দেশীয় পর্যটক এসেছেন। এছাড়া বিদেশি পর্যটক ত্রিপুরাতে এসেছেন ৭৫ হাজার জন। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের প্রকল্পে ১.৮০ কোটি টাকা ব্যয় করে ফটিক সাগর, অমর সাগর, নীরমহল, ছবিমুড়া প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়ন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যটকদের রাজ্যে ভ্রমণের সময় তাদের কাছে রাজ্যের শিল্প সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে। সৌরভ গাঙ্গুলিকে ত্রিপুরা ট্যুরিজমের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার পর ত্রিপুরার পর্যটন সম্পর্কে সারা বিশ্বের মানুষ জানতে পারছে এবং রাজ্যে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ত্রিপুরার পর্যটনকে কিভাবে ভারতের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকৃষ্ট করা যায় তারজন্য ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। স্বদেশ দর্শন-১ প্রকল্পে ৫ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করে সুলমা ডঙ্গুর তুইসুই ঝর্ণাকে ভিত্তি করে গড়ে তোলা পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশে কাজ করা হয়েছে। বর্তমানে স্বদেশ দর্শন প্রকল্পে উনকোটি পর্যটন কেন্দ্রে ৬৯ কোটি টাকা ব্যয় করে উন্নয়ন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক স্বপ্না দাস পাল। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মনোজ কান্তি দেব, ধলাই জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুস্মিতা দাস, এমডিসি ধীরেন্দ্র দেববর্মা, সালেমা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান বীণা দাস, কমলপুর নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন প্রশান্ত সিনহা, ধলাই জেলার জেলাশাসক সাজু বাহিদ এ, ধলাই জেলার পুলিশ সুপার অভিনাশ রাই, পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত বাদল নেগি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্গা চৌমুহনি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান ভানু প্রতাপ লোধি।
কমলপুরের নাকাশিপাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরের (পিএইচসি) নতুন ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মনোজ কান্তি দেব, বিধায়ক স্বপ্না দাস পাল, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, ধলাই জেলার জেলাশাসক সাজু বাহিদ এ, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস প্রমুখ। নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৪৬ লক্ষ ৯ হাজার ২০০ টাকা।
নাকাশিপাড়া আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরে প্রাক প্রসবকালীন চেকআপ, টিকাকরণ কর্মসূচি, পরিবার পরিকল্পনার সুবিধা, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, কুষ্ঠরোগী সনাক্তকরণ, দত্ত রোগের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া জননী সুরক্ষা যোজনা, জননী শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম, আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা ইত্যাদির সুবিধাও রয়েছে। নতুন ভবনের উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী আশাকর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যাপক সংখ্যায় এলাকার জনগণ উপস্থিত ছিলেন।