Hare to Whatsapp
ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যুগান্তরী ভূমিকা নিতে চলেছে ত্রিপুরা স্টেট এলাইড এবং হেলথকেয়ার কাউন্সিল
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরো জনমুখী দক্ষ করে তুলতে নতুন উদ্যোগ নিল স্বাস্থ্য দপ্তর। এ ব্যাপারে (ন্যাশনাল কমিশন ফর এলাইড এন্ড হেলথ কেয়ার প্রফেশান'স এক্ট ২০২১) মান্যতা দিয়ে রাজেরও ত্রিপুরা স্টেট এলাইড এবং হেলথকেয়ার কাউন্সিল গঠন করল দপ্তর। এন.সি.এ.এইচ.পি. এক্ট ২০২১ আইনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো হেলথ কেয়ার শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখা এবং পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের মান সরকারী মাপকাঠি অনুযায়ী হচ্ছে কিনা তা পর্যালোচনা, নজরদারী ও প্রয়োজনে পরিদর্শন করা। এ ব্যাপারে হেলথ কেয়ার কাউন্সিল কমিটি রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে থাকা বিভিন্ন বিভাগের কাজকর্ম পরিদর্শনের পাশাপাশি এ ব্যাপারে কোন অনিয়ম নজরে এলে সেব্যাপারে রাজ্য সরকারকে অবগত করবে। রাজ্য সরকার চারটি স্ব-শাসিত বোর্ড গঠন করতে শীঘ্রই নোটিফিকেশান জারী করতে চলেছে।
১) পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট এলাইড এন্ড হেলথ কেয়ার, এডুকেশান বোর্ড: এই বোর্ড পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং সুপার স্পেশালটি শিক্ষার গুণমান সঠিক রয়েছে কিনা যাচাই করবে। ২) আন্ডার গ্র্যাজুয়েট এলাইড এন্ড হেলথ কেয়ার এডুকেশান বোর্ড: এই বোর্ড আন্ডার গ্র্যাজুয়েট যাবতীয় কোর্সের পাঠ্যসূচীর গুণমান যাচাই ও পরিদর্শন করবে। ৩) এলাইড এন্ড হেলথ কেয়ার এসেসমেন্ট এন্ড এটিং বোর্ড: এই বোর্ড বিভিন্ন ক্লিনিক এবং সংস্থার পরিকাঠামোগত গুণমান সঠিক রয়েছে কিনা তা পরিদর্শন করবে।
৪) এলাইড এন্ড হেলথ কেয়ার এথিক্স এন্ড রেজিস্ট্রেশান বোর্ড: সরকারী বিধি মেনে অনলাইনে লাইসেন্স কিংবা পেশাগত রেজিস্ট্রেশান সঠিকভাবে নেওয়া হচ্ছে কিনা তার উপর নজরদারি রাখবে এই বোর্ড। ত্রিপুরা স্টেট এলাইড হেলথকেয়ার কাউন্সিল গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের পাশাপাশি সরকারী বিধি কিংবা প্রস্তাবিত মাপকাঠি লঙ্ঘন করা হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখা। ফলে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাজে একদিকে যেমন গতি আসবে তেমনি সঠিক দিশায় চালিত করা সম্ভব হবে। আগে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব ছিলো চীফ মেডিক্যাল অফিসারের উপর। এবার সেই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়ার পাশাপাশি গোটা বিষয়ে ত্রিপুরা স্টেট এলাইড এবং হেলথকেয়ার কাউন্সিল-এর উপর ন্যস্ত করা হচ্ছে। ফলে এককেন্দ্রীক ভূমিকা থেকে বহুমুখী কার্যকরিতার উপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
ত্রিপুরা স্টেট এলাইড এবং হেলথকেয়ার কাউন্সিল-এর মুখ্য কার্যকারিতা: ১) ত্রিপুরা স্টেট এলাইড হেলথকেয়ার কাউন্সিল-এর প্রধান কাজ হলো রাজ্যের সমস্ত অনিয়ন্ত্রিত হেলথ কেয়ার পেশাগুলিকে পঞ্জীভূত করা ও নিয়ন্ত্রণ করা। ২) স্বাস্থ্য পেশার সঙ্গে জড়িতদের নূন্যতম যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নির্ণয় করা।
৩) স্বাস্থ্য শিক্ষার মান নির্ণয় করা। ৪) ইতস্তত ব্যাঙের ছাতার মতো রাজের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমাতে গজিয়ে ওঠা সমস্ত বেসরকারী প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, এক্স-রে ক্লিনিক, ফিজিওথেরাপি ক্লিনিক, চশমার দোকান নির্দিষ্ট মাপকাঠি মেনে কাজ করছে কিনা তা পরিদর্শন করে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৫) স্বাস্থ্যশিক্ষার সাথে জড়িত সমস্ত সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মী, অশিক্ষক কর্মী এবং শিক্ষার কাজে ব্যবহার্য্য যন্ত্রপাতি, ল্যাবরেটরি এবং সরকারী বিধি মোতবেক প্রয়োজনীয় জায়গা নির্ধারণ করা।
হেলথ কেয়ার এবং এলাইড হেলথ কেয়ারের অধীনে কারা রয়েছেন? ১) হেলথ কেয়ার পেশা হলো এমন কিছু পেশা যাদের স্ব-স্ববিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নূন্যতম চার বছরের ডিগ্রী থাকবে। তারা নিজস্ব বিষয়ে সরাসরি রোগীদের উপদেশ দিতে পারেন। যেমন, অপটোমেট্রিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ডায়েটিশিয়ান ইত্যাদি। ২) এলাইড হেলথ পেশা হলো যাদের নূন্যতম দুই বছরের ডিপ্লোমা অথবা ৩/৪ বছরের ডিগ্রী থাকবে এবং তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের পরিষেবা প্রদান করবে। যেমন ল্যাবরেটরি টেকনেশিয়ান, রেডিওগ্রাফার, ইসিজি টেকনেশিয়ান, ওটি অ্যাসিস্টেন্ট, এক্সরে টেকনেশিয়ান ইত্যাদি।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই আইনকে কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে রাজ্য সরকারের মতে এর সুফল পাবেন সাধারণ মানুষ। যারা নিত্যদিন বিভিন্ন সরকারী/বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিচ্ছেন। এই আইন কার্যকর করার ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম এবং রোগীদের ভোগান্তির যে অভিযোগ থাকে তা বন্ধ হতে পারে। এই উদ্দেশ্যে ত্রিপুরা স্টেট এলাইড হেলথকেয়ার কাউন্সিল গঠন করে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর নজরদারী রাখতে চাইছে সরকার। ত্রিপুরা স্টেট এলাইড এবং হেলথকেয়ার কাউন্সিল এর চেয়ারপারসন এক বিবৃতিতে এই খবর জানিয়েছেন।