Hare to Whatsapp

মোহিনী মোহন চাকমা স্মৃতি পুরষ্কার পেলেন সঙ্গীত শিল্পী অভিক কুমার চাকমা

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪: মোহিনী মোহন চাকমা স্মৃতি পুরস্কার পেলেন আধুনিক চাকমা সংগীতের শিল্পী অভিক কুমার চাকমা। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে ৩ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে অভিক কুমার চাকমার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। রাজ্য সরকার এবছর থেকেই মোহিনী মোহন চাকমা স্মৃতি পুরস্কার চালু করেছে। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন স্মারক, মানপত্র ও ২০ হাজার টাকা। এখন থেকে প্রতি বছরই চাকমা সংগীত, শিল্প ও সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য একজনকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। মোহিনী মোহন চাকমা স্মৃতি পুরস্কারপ্রাপক অভিক কুমার চাকমা আধুনিক চাকমা সংগীতে একজন প্রথিতযশা শিল্পী। তাঁর বাড়ি পেঁচারথলের মাছমারায়। চাকরিসূত্রে তিনি বর্তমানে মিজোরামে থাকেন।

উল্লেখ্য, প্রয়াত মোহিনী মোহন চাকমার বাড়ি পেঁচারথলের মাছমারায়। ১৯৪৭ সালে লেদেরাই দেওয়ান এম ই স্কুলে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। শিশু শিক্ষার প্রসারে তিনি তাঁর মায়ের নামে জমি দান করেন এবং সেখানে তারকাদেবী সমাজ শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপিত হয়। ১৯৭০ সালে মাছমারায় তারই উদ্যোগে চাকমা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। ১৯৭৩ সালে মোহিনী মোহন চাকমার তত্ত্বাবধানে প্রথম চাকমা সাহিত্য পত্রিকা ‘দলক' প্রকাশিত হয়। তাঁরই পরামর্শে ও তত্ত্বাবধানে ১৯৭৪ সালে মাছমারায় প্রথম বিজু উৎসব শুরু হয়। ১৯৭৫ সালে মোহিনী মোহন চাকমার আন্তরিক প্রচেষ্টায় আকাশবানী আগরতলা কেন্দ্র থেকে প্রথম চাকমা ভাষায় সংগীত প্রচার শুরু হয়েছিল। প্রথম চাকমা সংগীত পরিবেশন করেন ফুলুরানী চাকমা। ১৯৮৩ সালে রাজ্য সরকার চাকমা ভাষা উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটিতে মোহিনী মোহন চাকমাকে সদস্য হিসেবে মনোনীত করে। চাকমা লিপিমালা প্রচলনের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত চাকমা লিপি সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তিনি কোচিং ক্লাস পরিচালনা করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ৫ বছরের জন্য ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের মনোনীত সদস্য হন। ২০১৪ সালে ২৪ ডিসেম্বর চাকমা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির আলোর দিশারী মোহিনী মোহন চাকমা প্রয়াত হন।

তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সভাপতি রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যে প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির বিকাশে রাজ্য সরকার কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহাও প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সাহিত্য, সংস্কৃতির সমবিকাশে আন্তরিক।

অনুষ্ঠানে স্বশাসিত জিলা পরিষদের সদস্য বিমলকান্তি চাকমা বলেন, রাজ্য সরকার জনজাতিদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করছে। রাজ্য সরকারের এই প্রয়াস সফল করতে জনজাতি অংশের নবীণ প্রজন্মকে আরও বেশী করে এগিয়ে আসার জন্য তিনি আহ্বান জানান। প্রথম পুরস্কারপ্রাপক অভিক কুমার চাকমা সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এই পুরস্কার দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানান। বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা চাকমা সমাজপতি দেবজান চাকমা। অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা সঞ্জিব চাকমা। তিনি চাকমা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির প্রসারে মোহিনী মোহন চাকমার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এখন থেকে প্রতিবছর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজুমেলা কমিটির সেক্রেটারি সজল বিকাশ চাকমা সহ বিশিষ্ট অতিথিগণ।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.