Hare to Whatsapp

বিপর্যয় মোকাবিলার পরবর্তী সময়গুলো আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, আগষ্ট ২৮, ২০২৪: সচিবালয়ে ২৭ আগস্ট রাজ্যের বন্যাজনিত উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিপর্যয় মোকাবিলার পরবর্তী সময়গুলো আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্রাণ এবং ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারের কাজে কোনও দুর্বলতা যাতে না থাকে সেদিকে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিশেষ নজর দিতে হবে। কোনও অভিযোগ থাকলে তা দ্রুত সমাধানে সকলকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।

পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা বলেন, গত ১৯ আগস্ট থেকে রাজ্যের ভয়াবহ দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে ক্ষেত্রীয়স্তরে যেসব কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন তারা নিঃসন্দহে ধন্যবাদযোগ্য। তিনি বলেন, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিজনিত সামগ্রিক অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আগামীকাল যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল রাজ্যে আসছেন তাদের কাছে রাজ্যের বন্যার সামগ্রিক ভয়াবহ অবস্থার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা প্রয়োজন। এই বন্যায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকারও অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যা ইতিমধ্যেই সর্বদলীয় সভায় উল্লেখ করা হয়েছিল। বিভিন্ন দপ্তরের রিপোর্ট অনুসারে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতির পর বর্তমান সময়ে যে যে বিষয়গুলির গুরুত্ব দিতে হবে তার মধ্যে মুখ্য হল- স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট, পানীয়জল, কৃষি ও উদ্যান, বিদ্যুৎ ও সেচ সহ অত্যাবশ্যকীয় বিষয়সমূহ। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সাথে রাস্তাঘাট চালু করার গুরুত্ব মুখ্যমন্ত্রী আরোপ করেন।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনও আপোস নয়। পানীয়জলের পরিশোধনের জন্য প্রয়োজনে আসাম থেকে ব্লিচিং পাউডার, ক্লোরিন ট্যাবলেট এবং ওআরএস সহ প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র আনতে হবে। তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া দীর্ঘকালীন। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলের সহযোগিতা আবশ্যক। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরকারের কাজের মাধ্যমেই মানুষ এগিয়ে আসছে বলে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে অভিমত ব্যক্ত করেন।

বন্যা পরিস্থিতিজনিত পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বর্তমানে চালু থাকা ত্রাণ শিবিরগুলিতে গুরুত্ব দিয়ে পরিষেবা প্রদানের প্রতি আহ্বান জানান। বিশেষ করে, খাদ্য, পানীয়জল, পোশাক-আশাক প্রভৃতি বিষয়গুলির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া সফরকারী কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের কাছেও ক্ষয়ক্ষতির সচিত্র বিস্তৃত তথ্য তুলে ধরার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন জানান, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। জাতীয় সড়ক ও হাইওয়েগুলিতে প্রয়োজনীয় টহলদারী ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় যে যে স্থান থেকে চুরি ও রাহাজানির খবর আসছে সেইসব জায়গায় পুলিশি টহলদারী ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

আজকের এই পর্যালোচনা বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তরের সচিবগণ বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য তুলে ধরেন। রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে জানান, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৪৯২টি ত্রাণ শিবির চালু রয়েছে। প্রায় ৭২ হাজার মানুষ শিবিরগুলিতে রয়েছেন। প্রয়োজনীয় সমস্ত ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি সর্বশেষ তথ্য সভায় তুলে ধরেন। এছাড়াও বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, কৃষি ও উদ্যান, পানীয়জল, সামাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা, স্বাস্থ্যবিধি, গ্রামোন্নোয়ন, পূর্ত, শিক্ষা, প্রাণীসম্পদ বিকাশ, খাদ্য, বন, নগর উন্নয়ন সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব ও আধিকারিকগণ নিজ নিজ দপ্তরের বন্যাজনিত পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.