নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং গতিশীল করে তোলার লক্ষ্যে ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন পদক্ষেপ
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মে ২৩, : নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং গতিশীল করে তোলার লক্ষ্যে ভারতের নির্বাচন কমিশন নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রয়াসের অঙ্গ হিসেবে কমিশনের পক্ষ থেকে ১৮টি নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এগুলির মধ্যে ভোটারদের সঙ্গে যুক্ত যে বিষয়গুলি রয়েছে তারমধ্যে রয়েছে একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সর্বাধিক ১ হাজার ২০০ জন ভোটার থাকতে পারবেন। অতিরিক্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র উঁচু জায়গা / কলোনীতে করতে হবে। ভোটার তালিকা পরিমার্জনের ক্ষেত্রে আর.জি.আই. ডাটাবেস থেকে সরাসরি ভোটারের মৃত্যুর বিষয়টি নথিভুক্ত করতে হবে। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এ বিষয়ে ভোটার তালিকা আপডেট করতে হবে। ভোটারদের যাতে আরও বেশি সুবিধা হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ভোটার ইনফরমেশন স্লিপ তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভোটারের ক্রমিক নম্বর এবং পার্ট নম্বর বিশেষভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে সি.ই.ও. / ডি.ই.ও. / ই.আর.ও. পর্যায়ে সর্বদলীয় বৈঠক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪,৭১৯টি বৈঠক হয়েছে। এরমধ্যে সি.ই.ও. পর্যায়ে ৪০টি, ডি.ই.ও. পর্যায়ে ৮০০টি এবং ই.আর.ও. পর্যায়ে ৩,৮৭৯টি বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকগুলিতে ২৮ হাজারের বেশি রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিগণ অংশ নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন জাতীয় এবং রাজ্য রাজনৈতিক দলগুলির প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করছে। এখন পর্যন্ত বি.জে.পি., আপ, বি.এস.পি., সি.পি.আই.(এম.), এন.পি.পি.-র সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। আই.আই.আই.ডি.ই.এম.-এ রাজনৈতিক দলগুলির বুথলেভেল এজেন্টদের দক্ষতা বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে (বিহার, তামিলনাড়ু এবং পন্ডিচেরি)। সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষ একটি জায়গায় (একক অ্যাপ ৪০ + অ্যাপ পরিবর্তন করবে) যাতে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেতে পারে তা সুনিশ্চিত করার জন্য নতুন সুসংহত ড্যাশবোর্ড ই.সি.আই.এন.ই.টি.-র সূচনা করা হয়েছে। ডুপ্লিকেট এপিক নম্বরের বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। এর সমাধান হিসেবে ইউনিক এপিক নম্বরের বিষয়ে নতুন মেকানিজম আনা হয়েছে।
আইনগত দিক দিয়ে কমিশন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তারমধ্যে রয়েছে ভোটার তালিকা তৈরি এবং নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে ২৮টি পক্ষ যুক্ত থাকার বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০, ১৯৫১, রেজিস্ট্রেশন অব ইলেক্টরস রুলস ১৯৬০, কন্ডাক্ট অব ইলেকশন রুলস ১৯৬১ এবং বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশাবলীর ভিত্তিতে যে ২৮টি পক্ষকে চিহ্নিত করা হয়েছে এরমধ্যে রয়েছে ভোটার, নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক, রাজনৈতিক দলগুলি, প্রার্থী এবং অন্যান্যরা। বিভিন্ন আইন এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশাবলীর ভিত্তিতে প্রত্যেক পক্ষকেই বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে কমিশন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তারমধ্যে রয়েছে বি.এল.ও.-দের উপযুক্তমানের সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হবে৷ এছাড়া নয়াদিল্লির আই.আই.আই.ডি.ই.এম.-এ এই কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ৩ হাজারেরও বেশি বুথলেভেল সুপারভাইজরদের এখন পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক বছরে ১ লক্ষেরও বেশি বি.এল.ও. সুপারভাইজরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৩৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের অফিসের এস.এম.এন.ও, এবং এম.এন.ও.-দের আই.আই.আই.ডি.ই.এম.-এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই সংস্থাতেই বিহারের পুলিশ আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্সের প্রচলন, ই-অফিস চালু করা, মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা ইত্যাদি। ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে কমিশনের নেওয়া এই পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন...