Hare to Whatsapp
রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিতে রাজ্যে ৫৫৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে : রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২৪, ২০২৪: আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় এবং গত ২৪ ঘন্টায় তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। বর্তমানে সারা রাজ্যে ৫৫৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ২৩ আগস্ট হেলিকপ্টারে গোমতী ও দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আজ বিকেলে স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে একথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের অধিকর্তা জে ভি দোয়াতি, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের স্টেট প্রজেক্ট অফিসার শরৎ দাস উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে জানান, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। বন্যায় গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা, ঊনকোটি জেলা এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের নদীগুলির জলস্তর বর্তমানে বিপদসীমার নীচে বইছে। তবে সোনামুড়ায় গোমতী নদী এখনও বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। তিনি জানান, ৫৫৮টি ত্রাণ শিবিরে প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে খাদ্য, পানীয়জল, ওষুধপত্র প্রভৃতি। গোমতী এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হয়েছে। আজ পর্যন্ত বন্যায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, ২ জন আহত হয়েছেন এবং ২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী রাস্তা, বিদ্যুৎ, ঘরবাড়ি, মৎস্যচাষ, গবাদি পশু এবং কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী এবারের বন্যায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখনও বন্যা কবলিত অনেক জায়গায় প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। রাজস্ব সচিব জানান, গোমতী এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় এখনও উদ্ধারের কাজ চলছে। এনডিআরএফ-এর ৬টি দল এবং এসডিআরএফ-এর ৬টি দল উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত আছে। অনেক জায়গায় ত্রাণের কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। আজ ১১ হাজার খাদ্যের প্যাকেট দুর্গতদের মধ্যে বন্টন করা হয়েছে। আগামীকালও ঐসব এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বন্টন করা হবে।
রাজস্ব দপ্তরের সচিব জানান, ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আজ এবং আগামীকাল হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জনগণকে সতর্ক থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে জানান, ৮ নং জাতীয় সড়কের মুঙ্গিয়াকামিতে যে ফাটল দেখা দিয়েছে তা দ্রুত মেরামত করা হবে। পেট্রোলের ট্যাঙ্কার পণ্যবাহী গাড়ি আমবাসা, কমলপুর, খোয়াই হয়ে আগরতলায় আসছে। তিনি জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় বিশেষ স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যবস্থা করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ পরিকাঠামো সারাই করে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে।