Hare to Whatsapp
ভারী বর্ষণে রাজ্যে কৃষি ও বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২৪, ২০২৪: বিগত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের ফলে রাজ্যে কৃষি, উদ্যান এবং বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সম্পদ ও জীবনহানির ঘটনাও ঘটেছে। ২৩ আগস্ট মহাকরণের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ একথা জানান। রাজ্যে ভারী বর্ষণের ফলে কৃষি, উদ্যান ও বিদ্যুৎ-এর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে জানাতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী জানান, বন্যা পরিস্থিতির ফলে রাজ্যের ৬৮ হাজার ৮২৬ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৫৩১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের কৃষি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এরফলে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৪০৬ জন কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এছাড়াও ১ লক্ষ ৫ হাজার ১০১ হেক্টর আমন ধানের জমি এখনও জলের তলায় রয়েছে। উদ্যান চাষের ক্ষেত্রে ৫ হাজার ৬১৪ হেক্টর জমি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪ হাজার ৯০ হেক্টর কৃষি জমি। এর ফলে ২৭ হাজারের উপর কৃষকের ১৬৭ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রী জানান, ভারী বর্ষণের ফলে রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের মোট বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৭৩ গ্রাহক নানাভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে বিদ্যুতের ১ হাজার ৬০৩টি খুটি ভেঙে পড়েছে, ৫০১টি ট্রান্সফরমার, ৬৪২ কিমি কন্ডাকটরস এবং ৩৩ কেভি ও ৬৬ কেভির ২টি সাব-স্টেশন সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ৯টি স্থানে ৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক লাইন ব্রেক ডাউন হয়ে গেছে। এরমধ্যে ৪টি স্থানে বৈদ্যুতিক লাইন সারাইয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ দপ্তরের ৯ কোটি ২ লক্ষ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে ৮-১০ জনের ১১১টি গ্রুপ কাজ করে যাচ্ছে। গোমতী এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার অনেক স্থান জলমগ্ন থাকায় বিদ্যুৎ কর্মীরা বিদ্যুৎ সারাইয়ের কাজ করতে পারছেননা।
এছাড়াও আগরতলা শহরের (সার্কেল-১) বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করে তোলার লক্ষ্যে ২৫টি দল দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, বিদ্যুৎ দপ্তর রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে, রেলওয়ে স্টেশন,আদালত সহ বিভিন্ন অফিসগুলোতে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি মন্ত্রী জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তা আগে কখনো হয়নি। ১৯৫২ সালে আগরতলা শহরের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এছাড়াও ১৯৮৩ সালে এবং ১৯৯৩ সালে রাজ্যে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। কিন্তু এবার যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তা অতীতের থেকেও ভয়ঙ্কর ছিল। সাধারণত আগস্ট মাসে রাজ্যে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল তার থেকে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান।