Hare to Whatsapp
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জিবিপি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং মেডিসিন ওয়ার্ড পরিদর্শনে স্বাস্থ্য সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ১৭, ২০২৪: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরপ্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার নির্দেশেস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে ১৬ আগস্ট ২০২৪ জিবিসি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং মেডিসিন ওয়ার্ডের হালহকিকৎ সরেজমিনে পরিদর্শন করতে যান। সম্প্রতি হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটটিতে আরও উন্নত ডায়ালিসিস পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে ESKaG সঞ্জীবনী মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরই ভিত্তিতে সেখানে ডায়ালাইসিস ইউনিটে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান থাকার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে, ডায়ালাইজারের একাধিক ব্যবহারের কারণে রোগীর কাঁপুনি এবং অন্যান্য অসুবিধে দেখা দিচ্ছে কিনা এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হয়। পাশাপাশি রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নিম্নমানের পরিষেবারও অভিযোগ উঠেছিল। স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যের নজরে এই বিষয়গুলি আসার পর অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। উল্লেখ্য ডায়ালাইসিস ইউনিটে এই মুহূর্তে একসঙ্গে ২২ জনের ডায়ালাইসিস করার বন্দোবস্তু রযেছে। প্রতি শিফটে তিনজন ডায়ালাইসিস রোগী পিছু একজন টেকনিশিয়ান থাকার কথা। বর্তমানে ছয় জন টেকনিশিয়ান রয়েছেন। এই সংখ্যাটি বাড়িয়ে সাতজন করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। ডায়ালাইসিসের সময় রোগীর কাঁপুনি হওয়া এবং ডায়ালাইজারের একাধিক ব্যবহার ক্ষেত্রেও প্রযোজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। এক বার ডায়ালাইজার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই ESKaG সঞ্জীবনী মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের কর্মচারীরা যাতে রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন সেদিকেও নজর দিতে বলা হয়।
এদিকে মেডিকেল সুপারিটেনডেন্ট ডাঃ শংকর চক্রবর্তী ডায়ালাইসিসের ইউনিটে নেফ্রোলজিস্ট যাতে নিয়মিত পরিদর্শন করেন তার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে স্বাস্থ্য সচিব মেডিসিন ওয়ার্ড পরিদর্শনকালে সেখানে আরো শয্যার বন্দোবস্ত করার জন্য এবং স্ট্যান্ড ফ্যান পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেন। তিনি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিখিল চন্দ্র রায় কে মেডিসিন ওয়ার্ড এবং আই ডিপার্টমেন্টের প্রযোজনীয় সংস্কার যথাশীঘ্র সম্ভব করার জন্য নির্দেশ দেন । মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় মেরামতি ও সংস্কারের মাধ্যমে আরো শয্যার ব্যবস্থা যাতে করা যায় সেটা সুনিশ্চিত করতেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিদর্শনে স্বাস্থ্য সচিবের সাথে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যাও জিবিসি হাসপাতালের প্রফেসর (ডাঃ) অনুপ কুমার সাহা, মেডিকেল সুপারিটেনডেন্ট ডাঃ শংকর চক্রবর্তী, উপ অধিকর্তা গিডিওন মলসুম, ডাঃ বিকাশ দেববর্মা, ডাঃ রাজেশ দেববর্মা, অরুণাভ দাশগুপ্ত এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিখিল চন্দ্র রায় প্রমুখ ও আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকাল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতালের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
এদিকে ডায়ালাইসিস ইউনিটে পর্যাপ্ত চিকিৎসকের উপস্থিতি না থাকার অভিযোগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত চিকিৎসকের ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, আনুমানিক একশ রোগী প্রতিদিন আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যাণ্ড জিবিপি হাসপাতালেডায়ালাইসিস গ্রহণ করেন।
জল ছাড়া ডায়ালাইসিস করার অভিযোগটি রোগীর পক্ষের মধ্যে একটি ভুল ধারণা মাত্র। কারণ জল ছাড়া ডায়ালাইসিস করা যায় না। বেশ কয়েকবার রোগীর আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা ও সন্দেহ দূর করার জন্য নেফ্রোলজিস্টের মাধ্যমে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। অনেক সময় অপর্যাপ্ত RO জলের কারণে ডায়ালাইসিস মেশিনগুলি কয়েক মিনিটের জন্য চালু রাখার কারণে সন্দেহটি তৈরি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
ডায়ালাইসিসের সময় কাঁপুনি হওয়ার অভিযোগের ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত জলের গুণমান নিশ্চিত করার জন্য, এজেন্সি দ্বারা ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত জলের নমুনা DWS দপ্তরের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ডায়ালাইসিস ক্যাথিটারের সংক্রমণ কমানোর জন্য, আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যাও জিবিসি হাসপাতালের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কমিটিকে প্রতি পনেরোদিনে পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডায়ালাইজারের একাধিক ব্যবহারের ক্ষেত্রেসংস্থাটিকে একাধিকবার একটি ডায়ালাইজার ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ নির্দেশিকা অনুসারে ডায়ালাইজার বহু সময় (আনুমানিক ৭ বার) বা একবার ব্যবহার করা যেতে পারে। ডায়ালাইজারের একাধিক সময় ব্যবহারের নিজস্ব সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যাণ্ড জিবিপি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ মাত্র এক বার ডায়ালাইজার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডায়ালাইসিস এর সময় রোগী যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়ে এবং তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করতে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং এ বিষয়ক অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ রাজেশ কিশোর দেববর্মার নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানানো হয়েছে।