Hare to Whatsapp
বিদ্যুৎ ভোক্তাদের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ৬, ২০২৪: বিদ্যুৎ ভোক্তাদের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে কাজ করছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি রূপায়ণে গুণগতমান যাতে বজায় থাকে সে বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকলে তা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ৫ আগস্ট সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে বিদ্যুৎ দপ্তরের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। সভায় বিদ্যুৎ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি ও সাফল্য পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের যেসমস্ত প্রকল্প রয়েছে তা রূপায়ণে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। রাজ্যে যেসমস্ত এলাকায় পুরাতন বিদ্যুৎ পরিবাহী তার রয়েছে তা দ্রুত পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারগুলোতে প্রয়োজনীয় লোডের সমতা বজায় রাখার জন্য এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে দপ্তরকে উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারগুলি নিয়মিত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিগুলোকে কিভাবে আরও উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বিদুৎ দপ্তরকে। সৌরশক্তির ব্যবহার আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষ অভিযানও শুরু করতে হবে। বেসরকারি ও বিভিন্ন সরকারি বিল্ডিংগুলোতে আরও বেশী করে সৌরশক্তি ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। বিদ্যুৎ বিল আদায়ের লক্ষ্যে দপ্তরকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। প্রয়োজনে রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় শিবির করে বিল আদায় করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়াও ১৯১২ নম্বরে বিদ্যুতের বিভিন্ন সমস্যাজনিত কল পেলে তা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
পর্যালোচনা সভায় বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, বিদ্যুৎ বিল সময়মতো প্রদান করার জন্য ভোক্তাদের সচেতন করতে হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী অবৈধভাবে যারা বিদুৎ ব্যবহার করছেন তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
পর্যালোচনা সভায় বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং দপ্তরের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। তিনি জানান, রাজ্যে বর্তমানে বিদ্যুতের যোগান রয়েছে ৪৫৭ মেগাওয়াট এবং বিদ্যুতের চাহিদা হচ্ছে প্রায় ৩৬২ মেগাওয়াট। তিনি জানান, রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণে দপ্তর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যেই বিশ্রামগঞ্জে এনইসি প্রকল্পে একটি ১৩২ কেভি নতুন সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে যা শ্রীঘ্রই চালু করা হবে। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি প্রকল্পে বোধজংনগরে ১৩২/৩৩ কেভি সাব-স্টেশন পরিবর্ধনের কাজ চলছে। এর জন্য ২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। রাজ্য সরকারের বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রকল্পে সূর্যমনিনগর থেকে মনারচক এবং সূর্যমনিনগর থেকে রুখিয়া পর্যন্ত ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। এর জন্য মোট ৩৪ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে।
পর্যালোচনা সভায় সচিব আরও জানান, রিভাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিমে রাজ্যে এলটি লাইনকে এবি ক্যাবল লাইনে রূপান্তর, হাই ভোল্টেজ ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম স্থাপন, স্মার্ট মিটার, প্রি-পেইড মিটার স্থাপন ইত্যাদি কাজ চলছে। এই প্রকল্পের জন্য ৮০২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এছাড়াও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর উন্নয়নে ১,১৫৫ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। পর্যালোচনা সভায় এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জনমন, ট্রেড়া ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় এছাড়াও মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিশ্বনাথ বসু, মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি পরমানন্দ ব্যানার্জী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।