Hare to Whatsapp
রাজ্য সরকারের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ-সবকা বিকাশের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ১০, ২০২৪: রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পৌছে দিতে সরকার আন্তরিক প্রয়াস নিয়েছে। উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে সরকার কখনও আপোষ করবেনা। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ- সবকা বিকাশের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা। ৯ জুলাই সিপাহীজলা জেলার টাকারজলা সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দয়ারামপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন এবং জম্পুইজলার সুধন্বা দেববর্মা স্মৃতি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় মাঠে সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন ও সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠের উদ্বোধন উপলক্ষে সুধন্বা দেববর্মা স্মৃতি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সার্বিক বিকাশে সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কৃষি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র ও খেলাধুলার উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার কাজ করছে। পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নেও সরকার অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ত্রিপুরাকে দেশের সামনে একটি আদর্শ রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা। এজন্য শিক্ষা-স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে খেলাধুলার বিকাশ এবং মানুষের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নে কৃষি, উদ্যান, প্রাণীসম্পদ, মৎস্য, বন, যোগাযোগ, পরিশ্রুত পানীয়জল সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, দয়ারামপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ২০২১ সালে ৬ শয্যাবিশিষ্ট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ১০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৯২১ সালের ২২ এপ্রিল৷ নতুন ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। টাকারজলা সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটি অনেক পুরনো হওয়ার ফলে নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়৷ নবনির্মিত দ্বিতলবিশিষ্ট ভবনটি ৩০ শয্যাবিশিষ্ট। এই ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। টাকারজলা সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন ও পরিষেবা চালু হওয়ায় এই এলাকার ৫০ হাজারেরও বেশী মানুষ উপকৃত হবেন। এই সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে ৬টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পে জম্পুইজলার সুধন্বা দেববর্মা দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় মাঠে সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৯৯ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। রাজ্যে এখন ৬টি জাতীয় সড়ক রয়েছে। আরও ৪টি জাতীয় সড়কের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন পাওয়া গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে ত্রিপুরার অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত হচ্ছে। রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলীকে ব্র্যান্ড অ্যামবাসেডর করা হয়েছে। এতে রাজ্যে বিদেশী পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এরফলে পর্যটন ক্ষেত্রে রোজগারের সম্ভাবনাও বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের জন্য রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, রাজ্যে ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। ক্রীড়া ক্ষেত্রের মান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই, বিধায়ক মানব দেববর্মা, জম্পুইজলা বিএসি'র চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ডা. সিদ্ধার্থশিব জয়সবাল।