Hare to Whatsapp
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বনসৃজনে ত্রিপুরা ভাল অবস্থানে রয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ৬, ২০২৪: প্রকৃতি ও পরিবেশ সবার জন্য। প্রকৃতি থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু রয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর পরিবেশ যাতে আমরা দিয়ে যেতে পারি সেদিকে সকলকে দায়িত্ববান হতে হবে। ৫ জুলাই সকালে মোহনপুরের তারানগরে রাজ্যভিত্তিক গণ বৃক্ষরোপণ অভিযানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। রাজ্যে আজ একই সঙ্গে ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ গাছের চারা রোপণ করার লক্ষ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা ছাড়াও কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ ও বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা জাতীয় সড়কের পাশে বৃক্ষ রোপণ করেন। এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গাছ লাগাতে হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ইকোলজিক্যাল ভারসাম্য রক্ষা করা প্রয়োজন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বনসৃজনে ত্রিপুরা ভাল অবস্থানে রয়েছে। বনকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, বন যারা ধ্বংস করছে সেইসব বনদস্যুদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার কোন অবস্থাতেই এই ধরনের কার্যকলাপ মেনে নেবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বই উপহার দেওয়ার অভ্যাস যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি পরিবেশ রক্ষায় গাছও উপহার দিতে হবে। এই ধরণের অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অভিনব উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন-২০২২ সালে একই সময়কালে অর্থ্যাৎ ৫ মিনিটে প্রায় ১ লক্ষাধিক গাছ, ২০২৩ সালে ২ লক্ষাধিক এবং এবছর ৫ লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছে। এই বার্তা যখন সারা ভারতবর্ষে পৌছবে তখন দেশের মানুষ ত্রিপুরাকে নতুনভাবে জানবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, প্রকৃতির সহায়তা ছাড়া আমরা ১ মিনিটও বাচঁতে পারবো না। আমাদের সবকিছুই প্রকৃতির দান। সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য গাছ কাটতে হবে, কিন্তু যত গাছ কাটা হবে তার চেয়ে আরও বেশি গাছ লাগাতে হবে। তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কাজের জন্য একটি গাছ কাটলে আগেই ১০ গুণ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিতে হবে। তিনি বলেন, যত বেশি গাছ কমবে ততই আমাদের শারীরিক সমস্যা বাড়বে। বিশ্ব উষ্ণায়ণের প্রসঙ্গ টেনে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। তা কমতে পারে একমাত্র গাছ লাগানোর মাধ্যমেই। সারা বছর বৃক্ষরোপণ উৎসব করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ।
অনুষ্ঠানে বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা বলেন, পরিবেশকে বাঁচাতে এই আয়োজন একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক। রাজ্যের সর্বত্র আজ ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ গাছ রোপণ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্যই হল- আমাদের বন ও পরিবেশ রক্ষা করা। এই গণ বৃক্ষরোপণ অভিযানে বিভিন্ন স্কুল, কলেজের ছাত্রছাত্রী, বিএসএফ, সিআরপিএফ, বন দপ্তর, ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ নাগরিকগণ অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, বন দপ্তর আগামী দু'বছরের মধ্যে রাজ্যে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ ফুলের বাগান গড়ে তুলবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক আর কে শ্যামল এবং রাজ্য সরকারের প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত নাগরিকদের মধ্যে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক সংখ্যক ফুল, ফল ও গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। আজ অনুষ্ঠান শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী মোহনপুরের ফটিকছড়া এলাকায় পৌছলে এলাকার জনগণ মুখ্যমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। মুখ্যমন্ত্রীকে হুডখোলা জিপে করে সুদৃশ্য বাইক র্যালীর মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক উৎসাহী জনগণ তারানগরে মূল অনুষ্ঠান স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই গণ বৃক্ষরোপণ অভিযানে মোহনপুর তারানগর এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।