অফিসারদের দক্ষতা এবং নিরলসভাবে কাজ করার মানসিকতা বর্তমানে রাজ্য ও সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মে ১৯, : রাজ্যের জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলিকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ণ করা, বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের মাধ্যমে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এবং মানুষের সেবায় অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সিভিল সার্ভিস অফিসারদের কাজের নিরিখেই মানুষ তাদের কথা মনে রাখেন। তাই নিজের কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। সঠিক সময়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এভাবে কাজ করলেই সরকারের জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি প্রতিটি মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। ১৮ মে আগরতলার কুঞ্জবনে সিভিল সার্ভিস অফিসার্স ইনস্টিটিউটের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত অফিসার্সদের ‘স্টিল ফ্রেম অব ইন্ডিয়া' বলে সম্বোধন করেছিলেন। এই বক্তব্য যথার্থই বাস্তবিক। কারণ সকল স্তরের অফিসারদের দায়িত্বশীল প্রয়াসের ফলেই রাজ্য প্রশাসনকে প্রান্তিক এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরাতে সাফল্যের সঙ্গে এনইসি প্লেনারী সেশনের আয়োজন, গত আগস্ট মাসে রাজ্যের ভয়াবহ বন্যায় সিভিল সার্ভিস অফিসারদের অনবদ্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সিভিল সার্ভিস অফিসারদের মানুষের জন্য কাজ করার বিরাট সুযোগ রয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে সবাইকে কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। রাজ্যের মেয়েরাও এখন প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সমান দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। রাজ্যে বর্তমানে ৫৯ জন আইএএস অফিসার, ৪২ জন আইপিএস অফিসার, ৪০ জন আইএফএস অফিসার ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে অনেক অফিসার কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও রাজ্যে ৪৭০ জন টিসিএস অফিসার ১৫২ জন টিপিএস অফিসার এবং ৫০ জন টিএফএস অফিসার কর্মরত রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই নতুন বাড়ির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সিভিল সার্ভিস অফিসারদের জন্য একটি মাইলফলক। এই ভবন নির্মাণ হলে অফিসারদের এবং তাদের পরিবারের জন্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ভবনটি অত্যন্ত সহায়ক হবে। পাশাপাশি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কও সুদৃঢ় হবে এই ধরণের উদ্যোগের ফলে। সিভিল সার্ভিস অফিসারগণ রাজ্যে আরও বেশি কাজ করার প্রতি আকৃষ্ট হবেন। তিনি বলেন, অফিসারদের দক্ষতা এবং নিরলসভাবে কাজ করার মানসিকতা বর্তমানে রাজ্য ও সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নতিতে কাজ করছেন। তাই এক ত্রিপুরা শ্রষ্ঠ ত্রিপুরা এবং এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সার্বিক উন্নতিতে সিভিল সার্ভিস অফিসারদের আন্তরিক প্রয়াস এবং আজকের রক্তদানের মতো মহতি উদ্যোগের জন্য শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠান শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী রক্তদান শিবির পরিদর্শন করেন এবং রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন।
অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, ছোট রাজ্য ত্রিপুরায় বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ণে বিশেষত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা দেশব্যাপী সমাদৃত হচ্ছে। রাজ্যের ক্রমবর্ধমান উন্নতির সঙ্গে সিভিল সার্ভিস অফিসারদের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন রাজ্যের উন্নতির একটি প্রতিচ্ছবি। নির্বাচনের সময়, উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণ বা বিপর্যয় মুহুর্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে সিভিল সার্ভিস অফিসারদের গুরু দায়িত্ব রয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের কাজের মাধ্যমে তা প্রামাণিতও হয়েছে। তিনি সিভিল সার্ভিস অফিসারদের পক্ষপাতহীন এবং স্বচ্ছনীতি নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। ত্রিপুরাকে আগামী দিনে উন্নতির শিখরে পৌছতে সিভিল সার্ভিস অফিসারদের কাজ সহায়ক ভূমিকা নেবে বলে মুখ্যসচিব আশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সুশাসন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, স্বচ্ছ সামাজিক পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে সিভিল সার্ভেন্টদের অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। নতুন এই ভবন নির্মাণ হলে ভবনটিতে অফিসরদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির সুবিধা থেকে শুরু করে লাইব্রেরী, ইন্ডোর গেমস সহ সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকবে। অনুষ্ঠান মঞ্চে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, পিসিসিএফ আরকে সামাল।
আরও পড়ুন...