Hare to Whatsapp
৫ হাজারেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ, খোলা হয়েছে ২২টি ত্রাণ শিবির
By Our Correspondent
আগরতলা, এপ্রিল ২৩, : মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ সিপাহীজলা জেলার ঝরে বিধ্বস্ত বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেছেন। সেখানে কোভিড-১৯ সংকটের মাঝেই গতকাল শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সিপাহীজলা জেলার অন্তর্গত বাইদ্যার দিঘি, গোলাঘাটি বাজার, মোহনপুর এডিসি ভিলেজ, পাথালিয়া পঞ্চায়েত, গোলাঘাটি পঞ্চায়েত (মারাক পাড়া), চিকনছড়া পঞ্চায়েত (ভাটিলারমা) এবং টাকারজলা সফরকালে, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের তদারকি করেছেন। কিছু জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্থদের তাৎক্ষণিক আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছেন।
গতকাল ভারী ঝড়ের জেরে ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৫০০০টি বাড়ি ও প্রচুর কৃষি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং বড় গাছ ভেঙে পড়েছে।
ঝড়ে বিধ্বস্ত মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য সিপাহীজলায় ১৭ টি এবং খোয়াই জেলায় ৫ টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৪২০০ জন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সিপাহীজলা জেলার ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং প্রশাসন তাদের খাবার ও অন্যান্য প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ করছে।
বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করার সময় মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্থ লোকদের সাথেও কথা বলেছেন এবং তাদের সম্ভাব্য সকল সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
পরে সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা ও গোলাঘাটি এবং খোয়াই জেলার কল্যাণপুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষিক্ষেত্র, রাবারের বাগান এবং অনেকগুলি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বিপ্লব কুমার দেব বলেন “প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুসারে, প্রায় ৫৫০ টি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে তিন জায়গায় বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ১ কোটি টাকার।
তিনি আরও বলেন যে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ ও ত্রাণ সরবরাহের জন্য সমস্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা ইতিমধ্যে নিযুক্ত রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির নিবন্ধকরণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা এক বা দু'দিনের মধ্যে রাজ্য দুর্যোগ ত্রাণ তহবিল (এসডিআরএফ) থেকে সহায়তা পাবে বলেও জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, তাৎক্ষণিক ত্রাণ হিসাবে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ৫০০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ৯৫,০০০ টাকা দেওয়া হবে এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ৩২০০ টাকা করে দেওয়া হবে। শিলাবৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও পশুপালকদেরও ক্ষতির পরিমাণ দেখে সহায়তা করা হবে।
এদিকে, গতকালই, রাজ্যে ঝড়ের কবলে পরা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের কাছে ত্রাণ সরবরাহের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য সচিবকে নির্দেশিকা দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সংশ্লিষ্ট জেলা শাসকের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেছেন, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ যাতে কোভিড-১৯ এর ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াইকে প্রভাবিত না করে। তিনি বলেন, মাতা ত্রিপুরসুন্দরীর আশীর্বাদে সরকার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ , উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই করবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার জনগণকে সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত।