Hare to Whatsapp
আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর হলে দশম আন্তর্জাতিক যোগা দিবসে মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুন ২২, ২০২৪: যোগা আমাদের দেশের ঐতিহ্য এবং পরম্পরা। নিজেকে চেনা এবং মনকে শান্ত রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে যোগা। তাই নিয়মিত যোগাভ্যাসের উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ২১ জুন হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর হলে ১০ম আন্তর্জাতিক যোগা দিবস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে এবং আয়ুষ মিশনের সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশের সংস্কৃতি ও পরম্পরা বসুধৈব কুটুম্বকম শ্লোগানকে সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার ও এক ভবিষ্যতের' কথা সব সময় বলে থাকেন। যোগার মাধ্যমেই ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার ও এক ভবিষ্যত' চিন্তাধারা আরও সমৃদ্ধ হবে। আমাদের দেশের সংস্কৃতি ও পরম্পরাকে সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে রাষ্ট্রসংঘে যোগা দিবস পালনের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীর এই চিন্তাভাবনাকেই রাষ্ট্রসংঘ মর্যাদা দিয়ে এবং যোগাভ্যাসের প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধি করে প্রতিবছর ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস রূপে পালনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর হলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক যোগা দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল এবং পদ্মশ্রী দীপা কর্মকার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ যোগায় অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবছর আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি মিলেট জাতীয় শস্য সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উপরও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মিলেটের গুণাবলীকে সামনে রেখেই ২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রসংঘের কাছে দাবি রেখেছিলেন।
পাশাপাশি মিলেটের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এর খাদ্যগুণ সম্পর্কে প্রচার প্রসারের জন্যও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারও প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে রাজ্যে মিলেট উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এর খাদ্যগুণের উপর গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ শুরু করেছে।
অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, শরীরচর্চা এবং মনকে ভালো রাখার জন্য নিয়মিত যোগাভ্যাস করা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে যোগার গুরুত্ব অনুধাবন করে রাজ্য সরকার যোগাকে ত্রিপুরা স্পোর্টস পলিসিতে সংযুক্ত করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয় সহ ক্রীড়াদপ্তর পরিচালিত বিভিন্ন সেন্টারগুলিতেও যোগাকে সামিল করা হয়েছে। এবছর খেলো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি গেমস্-এর যোগা ইভেন্ট রাজ্যে আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে ত্রিপুরা রাজ্য দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিল। এছাড়াও রাজ্যের ছেলেমেয়েরা জাতীয়স্তরের যোগা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে রাজ্যের সুনাম বৃদ্ধি করছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ডঃ প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রতিবছর ২১ জুন বিশ্বব্যাপী যোগা দিবস পালন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের ফলেই রাষ্ট্রসংঘ ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। রাজ্য সরকার যোগার প্রচারের লক্ষ্যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। যোগা প্রশিক্ষণের জন্য এন এস আর সি সি-তে একটি স্টেট যোগা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ২০০ জন ছেলেমেয়েকে যোগা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি এবছর মিলেট উৎপাদন বৃদ্ধি ও সচেতনতার উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই রাষ্ট্রসংঘ ২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে। রাজ্য সরকারও মিলেট উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অনুষ্ঠান শেষে যোগায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, বি এস এফ, সি আর পি এফ, টি এস আর জওয়ান সহ এন এস এসের স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে মিলেট খাদ্য বিতরণ করা হয়।