Hare to Whatsapp
রাজ্যে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে ৬৫ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা অনুমোদন : শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুন ৮, ২০২৪: রাজ্যে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রক ৬৫ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রকের ‘রেম্প’ কর্মসূচিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ত্রিপুরাকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে আগামী তিন বছরে রাজ্যের ৩২ হাজার শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৭ জুন সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগ সমূহ তুলে ধরে একথা জানান। তিনি জানান, এই রেম্প কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের মধ্যে শিল্প উদ্যোগী এবং বিপণনের দক্ষতা গড়ে তোলা। তিনি জানান, রাজ্যের এবং বহির্রাজ্যের নিজস্ব পণ্য বিক্রয় এবং প্রচারের উদ্দেশ্যে আগরতলা জুটমিল কমপ্লেক্সে ‘পিএম একতা মল’ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আধুনিক মল নির্মাণের জন্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ডুকলি সার্কেলে ৪.১৮ একর জায়গায় এই মলটি নির্মিত হবে। আগরতলা স্মার্ট সিটি লিমিটেড কর্তৃক এর ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব জানান, উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ রাজ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যেই কয়েকটি ইনভেস্টমেন্ট সামিট করা হয়েছে। গত ৬ মার্চ, ২০২৪ নয়াদিল্লিতে উত্তর পূর্বাঞ্চল ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ১৮৬১.৫১ কোটি টাকার ১৪টি মউ স্বাক্ষরিত হয়। এরমধ্যে ৬ জন বিনিয়োগকারী ইতিমধ্যেই রাজ্যে ২৯.৮৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তিনি জানান, উদ্যম প্রকল্পের আওতায় ৩১ মার্চ, 2024 পর্যন্ত ৫৭,১১৪ জনকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। তিনি জানান, কারিগরি শিল্পকর্মে যুক্ত শ্রমিকদের সহায়তা এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্প দেশব্যাপী চালু করা হয়। মূলত কারিগরদের দক্ষতা এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রসারের লক্ষ্যেই এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৭ জুন, ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে রাজ্যের ১০,৯০৪ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য নিবন্ধিত করা হয়েছে। তিনি জানান, ত্রিপুরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট ইনসেনটিভ স্কিমে রাজ্যে ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৩ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ইনসেনটিভ স্কিমের আওতায় ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত ৫২ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে সচিব আরও জানান, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের সাথে ৭১৫ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা বাণিজ্য হয়েছে। তিনি জানান, রাজ্যের শ্রীনগর সীমান্ত হাটটি চালু রয়েছে এবং খুব শীঘ্রই কমলাসাগর সীমান্ত হাটটি পুনরায় চালু করা হবে। সচিব জানান, ত্রিপুরা শিল্পোন্নয়ন নিগম ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লিজ রেন্ট এবং লিজ প্রিমিয়াম বাবদ ৯ কোটি ৮০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছে, যা রাজ্যের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
সাংবাদিক সম্মেলনে সচিব আরও জানান, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই রাজ্যে আগরতলা টি অকশন সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়েছে। ব্রহ্মকুন্ড টি প্রসেসিং ফ্যাক্টরিটিকে আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাছমারায় একটি মিনি টি- প্রসেসিং ফ্যাক্টরি গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে টি-ম্যানেজমেন্ট কোর্স চালু করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের ১৯টি সরকারি আইটিআই-এ ৩,৯৭৫ আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ থেকে শুরু হবে। এছাড়াও তিনি ‘উন্নতি’ প্রকল্প, পিএমএফএমই প্রকল্প ইত্যাদির তথ্যও তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা বিশ্বশ্রী বি উল্লেখিত দপ্তরের বিভিন্ন উদ্যোগ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।