Hare to Whatsapp
২৭ ও ২৮ মে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, রাজ্য প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে : রাজস্ব সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মে ২৭, ২০২৪: বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল'-এর প্রভাবে রাজ্যেও ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলাশাসকদেরকেও পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবরকম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৬ মে সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সন্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে রেমালের প্রভাবে রাজ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের মোকাবেলায় সরকারের গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে একথা জানান। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য তীব্রতাকে বিবেচনা করে মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ সচিবালয়ে জরুরি ভিত্তিতে ত্রিপুরা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির স্টেট এক্সিকিউটিভ কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সচিব, সচিবগণ, ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের অধিকর্তা, এনডিআরএফ বাহিনীর প্রতিনিধি, এমবিবি বিমানবন্দরের অধিকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে রাজ্যের আবহাওয়া পূর্বাভাস সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে জানান, ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাকে বিবেচনা করে আগামী ২৭ ও ২৮ মে ২০২৪ রাজ্যের স্কুল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকবে। জনগণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পরিবহন দপ্তরকে রেল, এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ ও সড়ক পরিবহনের সাথে সমন্বয় রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিমান, রেল ও অন্যান্য পরিবহন বাতিল হলে তা জনসাধারণকে অবগত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। দক্ষিণ ও গোমতী জেলায় সম্ভাব্য উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এনডিআরএফ-এর একটি টিমকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এসডিআরএফ টিমগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মজুত সুনিশ্চিত করতে খাদ্য দপ্তরকে বলা হয়েছে। রাজ্যের মৎস্যচাষীদের সতর্ক করতে মৎস্য দপ্তরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতেও বলা হয়েছে বলে সচিব জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের রাজ্য অধিকর্তা ড. পার্থ রায় জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২৬শে মে থেকে ২৯শে মে পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভারি বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৩ দিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলাগুলিতে এই বিষয়ে সতর্কতামূলক সংকেত জারি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে এমবিবি এয়ারপোর্ট-এর অধিকর্তা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আগাম সতর্কতা হিসেবে কলকাতা-আগরতলা রুটের সমস্ত বিমান ২৭শে মে সকাল ৯টা পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে। তবে দিল্লী, ব্যাঙ্গালুরু, গুয়াহাটি বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। সময়ে সময়ে এয়ার ট্রাফিক সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে সময় সময়ে অবহিত করা হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী বিমান সংস্থা বা এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে। সচিব জানান, রাজ্য প্রশাসন যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে। জনগণকে এবিষয়ে অহেতুক আতঙ্কিত না হতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির স্টেট প্রজেক্ট অফিসার শরৎ দাস জানান, রাজ্যস্তরে ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টারের টোল ফ্রি নম্বর হচ্ছে ১০৭০ এবং জেলাস্তরে ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টারের টোল ফ্রি নম্বর হচ্ছে ১০৭৭। তাছাড়া ইমার্জেন্সী রেসপন্স সার্পোট সিস্টেম ১১২ টোল ফ্রি নম্বর থেকেও সহায়তা পাওয়া যাবে।