Hare to Whatsapp
মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৭.৫৪ শতাংশ ও উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ৭৯.২৭ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ২৫ , ২০২৪: ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত উচ্চতর মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ফাজিল এবং মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষার ফলাফল ২৪ মে প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৮৭.৫৪ শতাংশ এবং উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৭৯.২৭ শতাংশ। পর্ষদ সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণ চৌধুরী আজ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কার্যালয়ের মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান। তিনি বলেন, এবারই প্রথম জুন মাসের পরিবর্তে মে মাসেই বোর্ডের ফল প্রকাশিত হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি আরও জানান, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের ১,০৫৭টি বিদ্যালয়ের ৩৩,৭৩৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১৫,৭৮২ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ১৭,৯৫৭ জন। মোট পাশ করে ২৯,৫৩৪ জন, ফেল করে ৪,২০৫ জন এবং পরীক্ষায় বসেনি ২০৫ জন। মোট ৩১০টি বিদ্যালয়ের পাশের হার একশ শতাংশ এবং একজনও পাশ করেনি এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬টি। পাশের হার বিচারে ১ম, ২য়, ও ৩য় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা ও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা। তিনি আরও বলেন, উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪০৯টি বিদ্যালয়ের ২৫,৩৫০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১২,০১৫ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ১৩,৩৩৫ জন। মোট পাশ করে ২০ হাজার ৯৫ জন। পাশের হার ৭৯.২৭ শতাংশ। ফেল করে ৫,২৫৫ জন এবং পরীক্ষায় বসেনি ১৬৮ জন। উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় একশ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাশ করেছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৯টি এবং সবাই ফেল করেছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৩টি। পাশের হারের ক্ষেত্রে ১ম, ২য় ও ৩য় হয়েছে যথাক্রমে সিপাহীজলা, পশ্চিম ত্রিপুরা এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সচিব ড. দুলাল দে বলেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ধলাই জেলার আনন্দমোহন রোয়াজা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র পরিতোষ নাথ সংশোধনাগার থেকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চতর মাধ্যমিকস্তরে বছর বাঁচাও পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা রয়েছে যথাক্রমে ৩,২১৩ জন এবং ৪,২৩৫ জন ছাত্রছাত্রীর। তিনি বলেন, এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২ মার্চ এবং শেষ হয় ২৩ মার্চ। মোট ৬৯টি কেন্দ্রে মাধ্যমিক পরীক্ষা গৃহীত হয়। মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রেগুলার ৩২, ১৯৩ জন, কন্টিনিউইং ৩১৬ জন, কম্পার্টমেন্টাল ১,০২৬ জন, এক্সাটানাল ১৭৪ জন এবং অন্যান্য ৩০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। মাদ্রাসা আলিম বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩০ জন এবং পাশ করেছে ৯৯ জন। এছাড়াও দিব্যাঙ্গজন পরীক্ষার্থী ছিল ১৫৯ জন এবং তাদের মধ্যে পাশ করেছে ১১১ জন। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় পাশের হার ৮৫.০১ শতাংশ। এছাড়াও তিনি বলেন, রাজ্যে উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ১ মার্চ এবং শেষ হয় ৩০ মার্চ। মোট ৬০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গৃহীত হয়। মোট উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রেগুলার ২৪,২৬৬ জন, কন্টিনিউইং ৩৩৯ জন, কম্পার্টমেন্টাল ৫২৬ জন, এক্সটার্নাল ১৯২ জন এবং অন্যান্যদের মধ্যে ২৭ জন ছাত্রছাত্রী ছিল।
মাদ্রাসা ফাজিল আর্টস বিভাগে ২২ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসে এবং সবাই পাশ করেছে। মাদ্রাসা ফাজিল থিওলজি বিভাগে ৪৯ জন পরীক্ষায় বসে এবং ৪৮ জন পাশ করেছে। এবারের উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২ জন দিব্যাঙ্গজন পরীক্ষায় বসে এবং পাশ করে ৫৮ জন। তাছাড়াও এবছর ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের পরীক্ষার্থীও উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় এবং পাশ করে। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদে এক্ষেত্রে পাশের হার ৭০.৫৭ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, মধ্যমিক ও উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণের কাজ গত ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়। শেষ হয় ১২ মে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণ চৌধুরী, এবারের সকল পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণের কাজে নিযুক্ত প্রায় ২,৫০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ধন্যবাদ জানান। রাজ্যের প্রথম সারির ১২৫ টি বিদ্যালয় বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় চলে যাওয়ার পরও পর্ষদের ফলাফল নিয়ে পর্ষদ সভাপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে পরীক্ষার কাজের সাথে যুক্ত সকলস্তরের কর্মীগণকে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আরক্ষা বাহিনীকেও ধন্যবাদ জানান।