Hare to Whatsapp
২০ মার্চ ১-ত্রিপুরা পশ্চিম লোকসভা আসনের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে : মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক পুনীত আগরওয়াল
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মার্চ ২০, ২০২৪: ১-ত্রিপুরা পশ্চিম লোকসভা আসনের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি ২০ মার্চ জারি করা হবে। নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হবে। ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক অফিসের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক পুনীত আগরওয়াল একথা জানান। তিনি জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হচ্ছে ২৭ মার্চ, ২০২৪। মনোনয়নপত্রগুলি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে ২৮ মার্চ, ২০২৪। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৩০ মার্চ, ২০২৪৷ এই আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে ১৯ এপ্রিল, ২০২৪। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হবে। তিনি জানান, ২-ত্রিপুরা পূর্ব (এসটি) সংসদীয় আসনের ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি হবে ২৮ মার্চ, ২০২৪। ঐ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হচ্ছে ৪ এপ্রিল, ২০২৪। মনোনয়নপত্রগুলি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে ৫ এপ্রিল, ২০২৪। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ এপ্রিল, ২০২৪। ভোট নেওয়া হবে ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত সময়ে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, ৫ জানুয়ারি, ২০২৪ রাজ্যে যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়, তাতে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিলো ২৮ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯২৫ জন। কিন্তু এরপরও ভোটার তালিকায় সংশোধনীর প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় ১৪ মার্চ, ২০২৪ পর্যন্ত রাজ্যে মোট ভোটারের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৯৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪৯১ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১৪ লক্ষ ২২ হাজার ৪৩৫ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৭০ জন। এরমধ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা সংসদীয় আসনের জন্য মোট ভোটার রয়েছেন ১৪ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৭৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮৪২ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৯৭৭ জন। পূর্ব ত্রিপুরা সংসদীয় আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ১৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ১২১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ লক্ষ ১ হাজার ৬৪৯ জন। মহিলা ভোটার ৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪৫৮ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১৪ জন। ৭- রামনগর বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪৫ হাজার ৬৬৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৪০ জন এবং মহিলা ভোটার ২৩ হাজার ৬২৯ জন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী দুটি সংসদীয় নির্বাচনী ক্ষেত্রে সার্ভিস ভোটার রয়েছেন ১০ হাজার ২৬৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৭৯ জন। মহিলা ভোটার ১৮৭ জন। ১-পশ্চিম ত্রিপুরা সংসদীয় আসনের জন্য সার্ভিস ভোটার রয়েছেন ৫ হাজার ৯১৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৮০১ জন এবং মহিলা ভোটার ১১৬ জন। ২-পূর্ব ত্রিপুরা (এসটি) সংসদীয় আসনের জন্য মোট সার্ভিস ভোটার রয়েছেন ৪ হাজার ৩৪৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ২৭৮ জন এবং মহিলা ভোটার ৭১ জন। ২০২৪ সালে প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী রাজ্যে ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী মোট ভোটার রয়েছেন ৬৯ হাজার ৭৮২ জন। এরমধ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের জন্য ভোটার রয়েছেন ৩৩ হাজার ১৫২ জন ও পূর্ব ত্রিপুরা আসনের জন্য ভোটার রয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৩০ জন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরও জানান, রাজ্যে ৮৫ বা তার বেশি বয়সের ভোটার রয়েছেন ১৮ হাজার ৬৭৬ জন। এরমধ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা সংসদীয় ক্ষেত্রে এই অংশের ভোটার রয়েছেন ৯ হাজার ৭০২ জন। পূর্ব ত্রিপুরা সংসদীয় ক্ষেত্রে এই বয়সের ভোটার রয়েছেন ৮ হাজার ৯৭৪ জন। ১৪ মার্চ, ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে দিব্যাঙ্গ অংশের ভোটার রয়েছেন ১৯ হাজার ৮৬৬ জন। এরমধ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা সংসদীয় ক্ষেত্রে ৮ হাজার ৪৮৬ জন এবং পূর্ব ত্রিপুরা সংসদীয় ক্ষেত্রে ১১ হাজার ৩৮০ জন ভোটার রয়েছেন। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, দুটি সংসদীয় আসনের জন্য ১টি অক্সিলিয়ারি পোলিং স্টেশন সহ মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে ৩ হাজার ৩৫০টি। ব্লু শরণার্থীরা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে ১টি অক্সিলিয়ারি পোলিং স্টেশন খোলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাজ্যে মহিলা পরিচালিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকবে ১৫৪টি। দিব্যাঙ্গ অংশের ভোটকর্মীদের নিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকবে ৬০টি।
অনুরূপভাবে তরুণ বয়সের ভোটকর্মীদের নিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকবে ৬০টি। রাজ্যে সবমিলিয়ে মডেল পোলিং স্টেশন হবে ১২১টি।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শ্রী আগরওয়াল জানান, ভোটগ্রহণকর্মী, পুলিশ কর্মী এবং অন্য নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মীগণ যারা নিজ নির্বাচনী কেন্দ্রের (যেখানে তার নাম ভোটার হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে) বাইরে কর্তব্যে নিয়োজিত থাকবেন তারা সাধারণ ভোটারদের মতো ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন না। তারা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কিন্তু ভোটগ্রহণকর্মী, পুলিশ কর্মী এবং অন্য নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মীগণ নিজ সংসদীয় ক্ষেত্রে (যেখানে তার নাম ভোটার হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে) কর্তব্যে নিয়োজিত থাকবেন তারা ইডিসির মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন। লোকসভার সাধারণ নির্বাচনে পুলিশকর্মী, ড্রাইভার / কনডাক্টর / গাড়ির ক্লিনার, ভিডিওগ্রাফি ও ওয়েব কাস্টিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিগণ সহ অধিকাংশ ভোটকর্মীই নিজ সংসদীয় আসন থেকে বাছাই করা হবে। ফলে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত অধিকাংশ ভোটারই ইডিসির মাধ্যমে ভোট দেবেন। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, ইডিসি ইস্যু করার জন্য আবেদন ভোটগ্রহণের অন্তত ৪দিন আগে রিটার্নিং অফিসার / এআরও-র কাছে গিয়ে পৌঁছাতে হবে। পোস্টাল ব্যালট ইস্যু করার ক্ষেত্রেও আবেদন ভোটগ্রহণের অন্তত ৭দিন আগে গিয়ে পৌঁছাতে হবে। তিনি জানান, যাদের নামে পোস্টাল ব্যালট ইস্যু হবে তারা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে শুধুমাত্র ফেসিলিটেশন সেন্টারেই ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত একজন ভোটার শুধুমাত্র ফেসিলিটেশন সেন্টারেই পোস্টাল ব্যালট গ্রহণ করে সেখানেই ভোট দেবেন ও পোস্টাল ব্যালট জমা দেবেন। একজন ভোটারের নামে পোস্টাল ব্যালট ইস্যু হয়ে গেলে তিনি ফেসিলিটেশন সেন্টার ছাড়া অন্য কোনও পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবেন না। ডাকযোগে বা বিশেষ ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালট প্রেরণের কোনও ব্যবস্থা থাকবে না। এছাড়া রিজার্ভ ডিউটিতে থাকা ভোটকর্মী ও অন্য আধিকারিকগণ ইডিসির মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। তারা যে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটার হিসেবে তার নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে তার বাইরেও যে কোনও কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ইডিসির মাধ্যমে এভাবে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু হওয়ায় কোনও কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটদানের হার বেড়ে যেতে পারে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, ভোটদান পর্ব সুষ্ঠু ও অবাধভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ৭০ কোম্পানি সিএপিএফ রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। তারা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় টহলও দিচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক ছাড়াও অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক উসা জেন মগ, অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, স্টেট পুলিশ নোডাল অফিসার জি কে রাও উপস্থিত ছিলেন।