Hare to Whatsapp
সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগে বহির্রাজ্যে রাজ্যের চায়ের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মার্চ ১৫, ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ভোকাল ফর লোকাল' স্লোগান বাস্তবে রূপদিতে আরও একধাপ এগুলো ত্রিপুরা। রাজ্যে ১৪ মার্চ প্রথম চা নিলাম কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হল। এতে চা বাগান মালিকারা সহজেই চা পাতা বিক্রির সুযোগ পাবেন। তাছাড়াও চা উৎপাদকরাও নায্য মূল্য পাবেন। আজ আগরতলার গুর্খাবস্তিতে রাজ্যের প্রথম চা নিলাম কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এক সময় রাজ্যের চায়ের কোন পরিচিতি ছিলনা। বর্তমান রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে চায়ের ব্র্যান্ড সহ লোগো চালু করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগে বহির্রাজ্যে রাজ্যের চায়ের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজন্য শাসিত ত্রিপুরায় মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্য প্রথম রাজ্যের চা শিল্পের পত্তন করেন। কৈলাশহরে রাজ্যের প্রথম চা বাগান হিরাছড়া গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সারা রাজ্যে ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর এলাকায় চা চাষ হচ্ছে। রাজ্যে ৫৪টি চা বাগান রয়েছে। কিন্তু একটা সময় রাজ্যের এই চা শিল্প প্রায় ভগ্নদশায় পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বর্তমান রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে রাজ্যের চা আবার মর্যাদা ফিরে পেয়েছে। আগে রাজ্যের চা বিক্রির জন্য চা বিক্রেতাদের বাইরে যেতে হত। এই চা নিলাম কেন্দ্র গড়ে উঠলে রাজ্যেই চায়ের বেচা-কেনা সম্পন্ন করা যাবে। এতে বাইরে চা নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ আর লাগবেনা। তিনি বলেন, প্রতিবছর ভাল পরিমাণ চা পাতা রাজ্যেই উৎপাদিত হয়। দেশের মধ্যে চা পাতা উৎপাদনে রাজ্যের স্থান পঞ্চম।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার চা শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। চা শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করে এখন দৈনিক ১৭৬ টাকা করা হয়েছে। চা শ্রমিকদের ২ গন্ডা করে বসবাস করার জন্য জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বর্তমান সরকার। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৭৭ জন শ্রমিককে ২ গন্ডা করে জমির পাট্টা বিতরণ করা হয়েছে। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়ের উপর পাঠ্যক্রম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের উৎপাদিত পণ্যের উপর ভিত্তি করে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলছে এই সরকার। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বাঁশ এবং রাবার ভিত্তিক শিল্পের বিভিন্ন দিকের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে ত্রিপুরার চা আগামী দিনে রাজ্যকে আত্মনির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ দেখাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, রাজ্যের জন্য আজ এক উল্লেখযোগ্য দিন। রাজ্যে ভারতের ৮ম চা-নিলাম কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হল। এই নিলাম কেন্দ্র গড়ে উঠলে চা শিল্পের সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছেন তারা উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্ত্যে বলেন, রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ফলে এই চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে। এই কেন্দ্র চালু হলে চা চাষিরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি রাজ্যও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। পাশাপাশি রাজ্যের চায়ের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা বিশ্বশ্ৰী বি. প্রমুখ।