Hare to Whatsapp
এইচ আই ভি/এইডস রোগ প্রতিরোধে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মার্চ ১৫, ২০২৪: রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে সপ্তাহে একদিন এইচ আই ভি/এইডস ও হেপাটাইটিস রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ জনসচেতনতাই হচ্ছে এইচ আই ভি/এইডস রোগ প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। ১৪ মার্চ আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং প্রেক্ষাগৃহে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ত্রিপুরা স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির উদ্যোগে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ ও প্রিন্সিপালদের নিয়ে এইচ আই ভি/এইডস- এর উপর আয়োজিত সচেতনতামূলক আলোচনাচক্রের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, যারা এইচ আই ভি/এইডস আক্রান্তের শিকার হয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের সমবেদনা থাকা উচিত। কোনভাবেই তাদের তিরস্কার করা ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এইচ আই ভি/এইডস বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিতভাবে সচেতন করতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। কারণ ছাত্র-ছাত্রীরাই আমাদের দেশ, রাজ্য ও সমাজের সম্পদ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রয়োজনে বিদ্যালয়ের গন্ডির বাইরে গিয়ে সমাজ সচেতনতায় এগিয়ে আসতে হবে। কারণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা সমাজে সবচেয়ে বেশী মান্যতা পায়। মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিদ্যালয়ের ক্লাসে শুধু পুঁথিগত জ্ঞান প্রদানই নয়, ক্লাসে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত হওয়া প্রয়োজন। ছাত্র-ছাত্রীদের সামাজিক পারিপার্শ্বিক বিষয় সম্পর্কেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নজরদারি থাকা আবশ্যক। কোনও শিক্ষার্থী যদি বিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে অনুপস্থিত থাকে তাহলে প্রয়োজনে তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর করা দরকার। কেউ যদি স্বাভাবিক জীবন থেকে সরে গিয়ে উশৃংখল জীবনযাপন বা মাদক দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়ে তাহলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচিত তাদের চিহ্নিত করে নজরদারিতে রাখা। তিনি বলেন, শুধুমাত্র আরক্ষা প্রশাসন, শিক্ষা দপ্তর দিয়ে তা প্রতিহত করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকা বা সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এলাকায় বা পাড়ায় কি হচ্ছে সেই বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি চালানো দরকার।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ত্রিপুরায় এইচ আই ভি/এইডস আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৩৩০ জন। এরমধ্যে মহিলা ১ হাজার ৩৩ জন, পুরুষ ৪ হাজার ২৯৫ জন, তৃতীয় লিঙ্গ ২ জন। এর মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন ৫৫৮ জন। প্রতিমাসে রাজ্যে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ এর মধ্যে নতুন এইচ আই ভি আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এইচ আই ভি/এইডস রোগ প্রতিরোধে রাজ্যে ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সিলিং এন্ড টেস্টিং সেন্টার, ফ্যাসিলিটি ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সিলিং এন্ড টেস্টিং সেন্টার, পিপিপি ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সিলিং এন্ড টেস্টিং সেন্টার এবং মোবাইল ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সিলিং এন্ড টেস্টিং ভ্যান কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ব্রাহ্মিত কৌড় বলেন, এধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এইচ আই ভি/এইডস থেকে মুক্ত রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই এবিষয়ে জনসচেতনতা উপর গুরুত্ব দিতে হবে।এইচ আই ভি/এইডস আমাদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবেও ক্ষতি করে। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তা এন সি শর্মা বলেন, এইচ আই ভি/এইডস এই সামাজিক ব্যধি থেকে ছাত্রছাত্রীদের দূরে রাখতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আরও বেশী সচেতন হওয়া প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ডাঃ সমর্পিতা দত্ত। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিসেস'র অধিকর্তা ডাঃ সঞ্জীব দেববর্মা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা স্টেট এনএস এস সেলের স্টেট এনএসএস অফিসার প্রবাল কান্তি দেব।