Hare to Whatsapp
উন্নততর ত্রিপুরার পাশাপাশি বিবাদমুক্ত ত্রিপুরার দিকে আরও এক কদম অগ্রসর হয়েছি : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মার্চ ৩, ২০২৪: নয়াদিল্লীতে আজ ভারত সরকার, ত্রিপুরা সরকার ও তিপ্রা মথা দলের মধ্যে যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তা রাজ্যের জন্য ঐতিহাসিক। রাজ্যকে এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে তুলতে ও জাতি-জনজাতিদের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতিকে সুদৃঢ় করতে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা:) মানিক সাহা একথা বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ে এই চুক্তির প্রয়োজনীয়তা ছিলো। এই চুক্তির মাধ্যমে জনজাতিদের ইতিহাস, জমির অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিচিতি, সংস্কৃতি, ভাষা ইত্যাদি বিষয়গুলিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পাদনের জন্য রাজ্যবাসীর পক্ষ থেকে দেশের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি তিপ্রা মথা দলের পক্ষে প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দদেরও অভিনন্দন জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের এই চুক্তির মাধ্যদিয়ে আমরা ‘এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা' উন্নততর ত্রিপুরার পাশাপাশি বিবাদমুক্ত ত্রিপুরার দিকে আরও এক কদম অগ্রসর হয়েছি। এই চুক্তি জনজাতি অংশের জনগণের অধিকার রক্ষা ও বিকাশের ধারায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায়শই বলে থাকেন যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন না হলে দেশের উন্নয়নও সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষ্মী আখ্যা দিয়ে এই অঞ্চলের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াসের মূলমন্ত্রকে কার্যকরি করতে এই চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব পীযুষ গোয়েল এবং তিপ্রা মথা দলের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রদ্যুৎ বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা, বিজয় কুমার রাঙ্খল ও অনিমেষ দেববর্মা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দশক ধরে উত্তর পূর্বাঞ্চলকে হিংসামুক্ত-উগ্রবাদমুক্ত-বিবাদমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এই সময়কালে কমপক্ষে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন সংগঠনের কয়েক হাজার বিপথগামী লোক হিংসার পথ পরিত্যাগ করে উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত হয়েছেন। ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলও আজ বিকাশের মূল ধারায় যুক্ত হয়েছে। ব্লু রিয়াং সমস্যা হোক কিংবা সীমানা নির্ধারণ সমস্যা- সবটাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে এন এল এফ টির সাথে চুক্তি, ২০২০ সালে ব্লু রিয়াং শরণার্থীদের সাথে চুক্তি ও বোরো চুক্তি, ২০২১ সালে কার্বি চুক্তি, ২০২২ সালে আদিবাসী চুক্তি এবং পরে আসাম-মেঘালয় আন্তঃরাজ্য সীমানা নির্ধারণ চুক্তি, ২০২৩ সালে আসাম-অরুণাচল প্রদেশ সীমানা নির্ধারণ চুক্তি, ২০২৩ সালে ডিমাসা চুক্তি, ইউএনএলএফ (UNLF) চুক্তি ও পরে ইউএলএফএ (ULFA) শান্তি চুক্তি ও আজকের এই ঐতিহাসিক ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মোট ১১টি ভিন্ন ভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলে শান্তি স্থাপন ও সশস্ত্র সংঘর্ষ সমাপ্ত করতে কাজ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা ও মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড: প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী।