Hare to Whatsapp
গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মার্চ ১, ২০২৪: গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রাজ্যে এখন কৃষি সহ কৃষি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে মহিলাদের যুক্ত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। স্বসহায়ক দলের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার মহিলারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছেন। ২৯ ফেব্রুয়ারি আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের উদ্যোগে এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের সহায়তায় আয়োজিত ‘ত্রিপুরায় নারী কৃষকদের ক্ষমতায়ন' শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। সেমিনারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহিলাদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। মহিলাদের উন্নয়ন হলেই দেশ ও রাজ্য এগিয়ে যাবে। সমাজ উন্নত হবে। তাই মহিলাদের সামনের সারিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে পাঠরত ছাত্রীদের বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে।
সেমিনারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্যে ৯টি মহিলা থানা, ৬টি ফ্যামিলি কোর্ট, ওয়ান স্টপ সেন্টার ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে। দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য মহিলাদের ক্ষেত্রে স্টাম্প শুল্ক ১ শতাংশ কমানো হয়েছে। রাজ্যের জনগণ বিশেষ করে মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণী পালক সম্মান নিধি প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদানে সরকার উদ্যোগী হয়েছে ।তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰাণী সম্পদ বিকাশ যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী গোধন প্রকল্প রাজ্যে রূপায়িত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী স্ব-সহায়ক দলগুলির উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর গুণমানের পাশাপাশি ফিনিসড প্রোডাক্টকে আকর্ষণীয় করে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের মহিলারা কোন অংশে পিছিয়ে নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যের মহিলারা দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। রাজ্যের মহিলারা এখন পাইলটও হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ। দেশের অর্থনীতি কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই কোভিড অতিমারি ভারতবর্ষের অর্থনীতিতে ততটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মানেই উন্নয়নের নিশ্চয়তা। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গির ফলে ত্রিপুরার চেহেরা বদলে গেছে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও প্রয়াস এই মূল মন্ত্রকে পাথেয় করে রাজ্যের জনগণের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির মাধ্যমে প্রতিবছর কৃষকদের ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রায় ১১ কোটি কৃষককে এখন পর্যন্ত প্রায় ২.৮১ লক্ষ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। ২৩.৩৮ লক্ষ কৃষক প্রধানমন্ত্রী কিষান মনধন যোজনায় নথিভুক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, রাজ্যে বর্তমানে ৫৬ হাজার ৪৭৯টি স্ব-সহায়ক দল রয়েছে। এই স্ব-সহায়কদলগুলির সাথে প্রায় ৫ লক্ষ মহিলা যুক্ত আছেন।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, ভারতবর্ষ একমাত্র দেশ যেখানে তার ভূমিকে মাতৃভূমি বা ভারত মা হিসেবে সম্মান জানানো হয়। এ থেকে প্রমাণ হয় ভারতবর্ষ অন্যদেশ থেকে আলাদা। ভারতবর্ষে মহিলাদের যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা হয়। দেশের বিভিন্ন সর্বোচ্চ পদে আমাদের দেশের মহিলারা আসীন রয়েছেন। মহিলাদের স্বশক্তিকরণে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। মহিলাদের আর্থসামাজিক অবস্থার মানোন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে। শুধু প্রয়োজন মহিলাদের কিছু করার জন্য দৃঢ় ইচ্ছা শক্তি।
অনুষ্ঠানে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা ডেলিনা খঙদুপ বলেন, কৃষকরা হচ্ছেন আমাদের জীবন। তাই ত্রিপুরা মহিলা কমিশন আয়োজিত এই ধরণের সেমিনার খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ঝর্ণা দেববর্মন বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মহিলাদের স্বশক্তিকরণে বিভিন্ন প্রয়াস নিয়েছে। নমো ড্রোন দিদি কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি কাজকে আরও সহজতর করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের সদস্য সচিব মাধব পাল। অনুষ্ঠানে মা-কালী স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যা পাপিয়া দাস নন্দি তার নিজস্ব তৈরী উপহার সামগ্রী মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।