Hare to Whatsapp
মানুষের মৌলিক সমস্যা সমাধান করে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা হচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪: রাজ্যের মানুষের মৌলিক সমস্যা সমাধান করে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা হচ্ছে। উন্নয়নের কাজে কোন রাজনীতি হয়না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সারা দেশে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে। ত্রিপুরাতেও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি উদয়পুরে জগন্নাথ দীঘির সৌন্দর্যায়ণ ও পার্কের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী আজই গোমতী জেলা হাসপাতাল কমপ্লেক্সে নির্মিত ৫০ আসনবিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্বোধন করেন। তিনি উদয়পুরস্থিত রাজারবাগ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরেরও (রাজারবাগ আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার) উদ্বোধন করেন।
জগন্নাথ দীঘির সৌন্দর্যায়ণ ও পার্কের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের ৪৩৫টি রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। আগরতলাস্থিত বাধারঘাট রেলস্টেশনকে আধুনিক রূপ দিয়ে বিমানবন্দরের মত সুযোগ সুবিধা যাত্রীদের প্রদানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মানুষের আর্থসামাজিক ও পরিকাঠামো উন্নয়নের গ্যারান্টি দিয়েছেন। প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচি রূপায়ণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সমস্ত প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা মানুষের ঘরে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে প্রতি মাসে ৫ কেজি করে চাল ৮০ কোটি ভারতবাসীকে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় চার কোটির বেশী দরিদ্র মানুষকে ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে জলজীবন মিশনের আওতায় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরাতে এই জলের সংযোগ ৩ শতাংশ থেকে এখন ৭৬ শতাংশে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প, স্বচ্ছ ভারত মিশন, স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের ঋণের ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অধীনে সুযোগ সুবিধা পান না এমন ৪ লক্ষ ১৫ হাজার পরিবারকে সুবিধা প্রদানের জন্য চিফ মিনিষ্টার জন আরোগ্য যোজনা চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থব্যবস্থাকে মজবুত করার জন্য কাজ চলছে। মহিলাদের স্বশক্তিকরণে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কাজ করছে। মহিলাদের উন্নয়ন হলে দেশের উন্নয়ন হবে। লোকসভায় ও বিধানসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন ভারত আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে।
তিনি বলেন, ত্রিপুরার পর্যটন ক্ষেত্রকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকার কাজ করছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। করোনার সময় দেশের নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য ভ্যাকসিন এর ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতবর্ষের ইতিহাসে ২২ জানুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ঐদিন অযোধ্যায় রাম মন্দিরে রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, উদয়পুর শহর প্রাচীন শহর, সরোবর নগরী। মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীর পবিত্র পূন্য ভূমি। উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোন শহরে এমন দীঘি বা জলাশয় দেখা যায় না। তিনি বলেন, দীঘির সৌন্দর্যায়ণে রাজ্য সরকার কাজ করছে। দীর্ঘদিনের দাবীর বাস্তবায়ন হয়েছে আজ। উন্নয়ন এই সরকারের লক্ষ্য। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির পরামর্শে ত্রিপুরাকে সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে।
মহাদেব দীঘিকে সাজিয়ে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চন্দ্রসাগর লেককে সাজিয়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার মানুষের কল্যাণে কাজ করছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পর্যটন দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা এবং ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ। উল্লেখ্য এই দীঘির সৌন্দর্যায়ণে খরচ হয়েছে ১৬ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা।
এছাড়া এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা গোমতী জেলা হাসপাতাল কমপ্লেক্সে নির্মিত ৫০ আসন বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্বোধন করেন। সেখানে তিনি উদ্বোধকের ভাষণে বলেন, মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাজ্য সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনেই বিভিন্ন জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডক্টর সুপ্রিয় মল্লিক। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রঞ্জিত দাস, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শীতলচন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ। উল্লেখ্য এই পাকা বাড়িটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। আজ উদয়পুরস্থিত রাজারবাগ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির (রাজারবাগ আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার) এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। উদ্বোধকের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ চলছে। এখন উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করার জন্য রাজ্যের বাইরে যেতে হয়না।
অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের কাছে সরকারি সাহায্য পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বর্তমান সরকার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্ৰ মজুমদার। এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অভিষেক দেব রায়, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ। উল্লেখ্য এই পাকা বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩ হাজার টাকা।