Hare to Whatsapp
চিকিৎসার উলটপুরাণ, দফারফা স্বাস্হ্য, ত্রিপুরা জুড়ে ঔষুধের ফাটকাবাজী
By Our Correspondent
আগরতলা, এপ্রিল ১৭, : লকডাউনের পর থেকে রাজধানীতে চিকিৎসা পরিষেবা প্রায় বিপর্যস্ত। কোথাও চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। মহা বিপাকে নানা ধরনের রোগের আক্রান্তরা। অন্য কোথাও যাবেন তারও উপায় নেই। এক্ষেত্রে রোগীদের ভরসা করতে হচ্ছে ফার্মেসির উপর। এরা যে নিদান দেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় রোগীদের। কিন্তু এখন রাজ্য সরকার জানিয়েছে আইএলএস ও টিএমসি-র আউট পেন্টেস ডোর(ওপিডি) এ শুক্রবার থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে। বিনামূল্যেই এই দুই হাসপাতালে এর চিকিৎসকরা ওপিডিতে রোগী দেখবেন। এই সিদ্ধান্ত সবাই সাধুবাদ জানিয়েছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো রোগীরা সেখানে যাবেন কিভাবে? সবার তো বাইক বা স্কুটি নেই। যাদের আছে তাঁরাও যাবেন কিভাবে? উল্টোতো বাইকে মেতে গিয়ে টিএসআর এর লাঠিপেটা খেতে হবে। আর ওরা তখন পেটাতে শুরু করে তখন উন্মাদ হয়ে যায়। হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা টিএসআর এর একাংশ জোয়ানের। এদের মারে বেশ কজন শয্যাশায়ী। গাঙাইল রোডের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা তো এমন মার খেয়েছেন তার হাত পা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। প্রথিতযশা আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন ভদ্রলোক কি ভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তা তুলে ধরেছেন এই পোর্টাল এ।
ওই দুই হাসপাতালের আশপাশের লোকজন হয়তো পরিষেবা নিতে পারবেন হেঁটে গিয়ে। কিন্তু বৃহত্তর আগরতলার বাকী লোকজন কি করবেন। তাদের যে সমস্যা ছিল তাই রয়ে গেল।
দ্বিতীয়ত পরীক্ষা নিরীক্ষা আইএলএসে পাওয়া যাবেনা, এই পরিষেবা নিতে হবে এজিএমসি,নয় আইজিএম এ। এও মহা বিড়ম্বনা। সরকার যে উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতো বিফলে যাওয়ার সামিল। এবং রোগীদের দূর্ভোগ বিড়ম্বনা যেখানে ছিল সেখানেই থাকবে।
এমনিতেই লকডাউনের পর থেকে স্বাস্হ্য পরিষেবা বিপন্ন। উচ্চ রক্তচাপ,ডায়াবেটিক, হার্টের রোগীদের দফারফা। তাদের জীবন ধরে রাখাই প্রচন্ডভাবে মুশকিল হয়ে পড়েছে।
যখন চিকিৎসা পরিষেবা বিপন্ন, ঠিক তখন খোদ রাজধানী আগরতলায় ঔষুধের কৃত্রিম সংকট অব্যাহত রয়েছে। না পাওয়া যাচ্ছে ইনসুলিন, না পাওয়া যাচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও কিডনীর ঔষুধ। এমনকি জ্বরের টেবলেটও উধাও। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে প্রতিটি মেডিকেল ষ্টোরেই লুপিসুলিন,সিলাকার,গারজিয়ান নেট সব রয়েছে। মেডিক্যাল ষ্টৌর এর মালিকদের বড় অংশ করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ফাটকাবাজী করছে। ফাটকাবাজী রোধে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, লোক দেখানো অভিযান করেছে, কিন্তু এখন সব কিছু যথারীতি চলছে। চলছে ভোক্তাদের গলাকাটা, ব্যবসায়ীদের বড় অংশের ফাটকাবাজী আর মর্দনবাজী। সেনিটাইজার, মাক্স, গ্লাভস তো একশ চক্কর কাটলেও মেলেনা। শুরু থেকেই এই অবস্থা। শুরুতেই যে অভাবিত সংকট ছিল এখন তা আরো তীব্রতর হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ কোথায় পরিত্রান পাবেন তা ওরা নিজেরাই জানেন না। তবে সাধারণ মানুষ কিন্তু এটা জানেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গেলে হয়তো সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ওঁরা পৌঁছাবেন কি ভাবে? এক্ষেত্রে কিন্তু বিধায়কদের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু এরা কি দায়িত্ব পালন করছেন। হয়তো বলা চলে না শাসক দলীয় বিধায়ক, না বিরোধী দলের বিধায়ক কেউ কোন দায়িত্ব পালন করছেন না। করলে তো সমস্যার সমুদ্রে হাবুডুবু খেতে হতো না বিপন্নদের।