Hare to Whatsapp
আগামী বছর রাজ্যে জৈব চাষের এলাকা বেড়ে হবে ২৫,৬৬১ হেক্টর : কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪: ২০২৪-২৫ সাল থেকে রাজ্যে আরও ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে জৈব চাষের এলাকা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরফলে আগামী বছর রাজ্যে মোট জৈব চাষের এলাকা বেড়ে হবে ২৫ হাজার ৬৬১ হেক্টর। বর্তমানে ত্রিপুরায় মোট চাষযোগ্য জমির ৮ শতাংশ এলাকায় জৈব চাষ পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। আগামীতে এই জৈব চাষের এলাকা ২০ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকার। ২৩ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সংবাদ জানান কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, জৈব চাষের ক্ষেত্রে ভারতের স্থান চতুর্থ। ভারতে মোট ২৩ লক্ষ হেক্টর এলাকায় জৈব চাষ করা হচ্ছে। তিনি জানান, ২০১৮ সালের আগে ত্রিপুরায় জৈব চাষের এলাকা ছিল ২ হাজার হেক্টর। বর্তমান রাজ্য সরকার ক্ষমতায় এসে ১৮ হাজার ১৬১ হেক্টর এলাকাকে জৈব চাষের আওতায় নিয়ে এসেছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমানে মোট জৈব চাষের এলাকা হয়েছে ২০ হাজার ১৬১ হেক্টর। ২০১৮ সালের আগে জৈব চাষ করে এমন কৃষকের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫০৪ জন। বর্তমান রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর জৈব চাষীর সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৯ হাজার ৮৪১ জন। অর্গানিক ক্লাস্টার ২০১৮ সালের আগে ছিল ১৩২টি। এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ৭৩টি। কাস্টম হায়ারিং সেন্টার ছিল ২০১৮ সালের আগে শূন্যের কোঠায়। এখন হয়েছে ৩৮টি। জৈব কালেকশন সেন্টার ২০১৮ সালের আগে একটিও ছিল না। বর্তমানে রয়েছে ১৪টি। তিনি আরও জানান, জৈব পদ্ধতিতে রাজ্যে চাষ হওয়া ফসলগুলি হল- সুগন্ধি ধান, আনারস, গোল মরিচ, আদা, হলুদ, লঙ্কা, লেবু, সুপারি ইত্যাদি। ফসল ভিত্তিক সার্টিফাইড এলাকার ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬,০৮৮ হেক্টরের সার্টিফিকেশন হয়ে গেছে। তৃতীয় পর্যায়ের ১৪,০০০ হেক্টর এলাকায় জৈব চাষের জন্য সার্টিফিকেশনের কাজ চলছে। তিনি আরও জানান, চাষের এলাকা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনে বৃদ্ধির ফলে রাজ্য সরকার উৎপাদিত জৈব ফসল অধিক দামে বহিঃরাজ্যে বাজারজাত করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই ‘ত্রিপুরা অর্গানিক' নামের ব্র্যান্ড, লোগো এবং প্যাকেজিং-র ডিজাইন করা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী জানান, কোলকাতার বিগ-বাসকেট, দিল্লীর মাদার ডেয়ারি, সিমফেড, হায়দ্রাবাদের কেসিএস কোয়ালিটি ইনস্পেকশন প্রাইভেট লিমিটেড, বিহারের জিৎবান সাপ্লাই চেইন প্রাইভেট লিমিটেড, ব্যঙ্গালোরের আইকোয়া এবং গৌহাটির আনজিবি গ্রীণ, রাজ্যের পরমেশ্বরী ফুড প্রাইভেট লিমিটেড ইত্যাদির সঙ্গে রাজ্যের উৎপাদিত জৈব ফসলগুলিকে বহিঃরাজ্যে বাজারজাত করার জন্য প্রয়োজনীয় মার্কেট লিঙ্কেজ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে জৈব ফসলের জনপ্রিয়তা ও বিপনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগরতলায় উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ ডাইরেক্টরেট অফিসে একটি জৈব ফসল বিপনন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্য থেকে ২৬ মেট্রিক টন সুগন্ধি চাল, ৬২ মেট্রিক টন আঁদা, ১৪ মেট্রিক টন হলুদ এবং ১৪৯ মেট্রিক টন আনারস রাজ্যে এবং বহিঃরাজ্যে বাজারজাতকরণ করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী রতন লাল নাথ সম্প্রতি জার্মানী এবং সুইজারল্যান্ড সফরের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, জার্মানীর নুরেমবার্গ-এ অনুষ্ঠিত জৈব চাষ সম্পর্কিত বিষয়ের উপর ইন্টারনেশনাল অর্গানিক ট্রেড ফেয়ারে রাজ্যের হয়ে তিনি অংশ নেন। তাঁর সাথে কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস ছিলেন। তিনি জানান, এই ইন্টারনেশনাল ট্রেড ফেয়ারে দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মূলত অর্গানিক চাষ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী এই দুটি দেশের সফরের সঞ্চিত অভিজ্ঞতাগুলি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।