Hare to Whatsapp
সচেতনতা ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমেই সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব : মুখ্যমন্ত্ৰী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪: একমাত্র সচেতনতা ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমেই সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব। তাই যানবাহন চালক, সহযাত্রী, ও পথচারিদের সড়ক সুরক্ষা বিষয়ক সমস্ত নিয়মবিধি মেনে চলা আবশ্যক। ২০ ফেব্রুয়ারি আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে জাতীয় সড়ক সুরক্ষা মাস- ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, বহু মানুষ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর আহত বা প্রাণ হারান। কম বয়সী ছেলে-মেয়েরাই এর শিকার হন বেশি। অধিকাংশই ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী। ফলে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সড়ক সুরক্ষা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। এজন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারও সড়ক দূর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনা সরকারের লক্ষ্য। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে ব্ল্যাকস্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেসব অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা বেশী হয় সেই জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করে পরিবহণ ও আরক্ষা দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন রাস্তাগুলি প্রশস্ত হচ্ছে। সেই সাথে যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি ১৯৭১ সাল এবং বর্তমানে যানবাহন বৃদ্ধির তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাজ্য সরকার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। গাড়ির বেপড়োয়া গতির লাগাম টানতে সিসি ক্যামেরা সহ বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দূরপাল্লার গাড়ি চালকদের স্বাস্থ্য ও বিশ্রামের কথা বিবেচনা করে সারা দেশে ১ হাজারেরও বেশি বিশ্রামাগার বানানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারও গাড়ি চালকদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
অনুষ্ঠানে পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, জাতীয় সড়ক সুরক্ষা মাস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সমস্ত নাগরিক বিশেষ করে আগামী প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে সড়ক সুরক্ষা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিনিয়ত যানসন্ত্রাসের কবলে পড়ে অকালে অনেকেই প্ৰাণ হারাচ্ছেন। সরকার, প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসন চাইলেই তা রোধ করা সম্ভব হবে না, যতক্ষণ না নিজেদের মধ্যে এবিষয়ে সচেতনতা বাড়বে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাজ্য সরকার প্রতিনিয়ত জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে চলেছে। পরিবহন মন্ত্রী বলেন, আজকের দিনে গাড়ি চালক বা সহযাত্রী হিসাবে সিট বেল্ট ব্যবহার এবং দ্বিচক্রযান চালক ও আরোহী হিসাবে হেলমেট ব্যবহারের জন্য আমাদের শপথ নেওয়া প্রয়োজন৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, পরিবহন দপ্তরের সচিব ইউ. কে. চাকমা, ট্রান্সপোর্ট কমিশনার উত্তম মন্ডল, পরিবহন দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ সড়ক সুরক্ষা ক্যুইজ পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করেন। এছাড়াও কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে হেলমেট বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় সড়ক সুরক্ষা মাস উদযাপন উপলক্ষ্যে সড়ক সুরক্ষা শপথ বাক্য পাঠ করান। পরিশেষে মুখ্যমন্ত্রী সড়ক সুরক্ষার ভ্রাম্যমান গাড়ি পতাকা নেড়ে সূচনা করেন এবং সড়ক সুরক্ষা বেলুন উড়িয়ে দেন।