Hare to Whatsapp
সমাজের অস্তিম ব্যক্তির কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিতে ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলি সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪: রাজ্যে গণবন্টন ব্যবস্থায় ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গণবন্টন ব্যবস্থার সাথে বহু মানুষের জীবনজীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। সমাজের অন্তিম ব্যক্তির কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিতে ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলি সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে। ৮ ফেব্রুয়ারি অরুন্ধুতীনগরে পঞ্চায়েত রাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের গ্রাম স্বরাজ ভবনে অনুষ্ঠিত ত্রিপুরা ন্যায্য মূল্যের দোকান পরিচালক সমিতির ২৬তম রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। সম্মেলনের সার্বিক সাফল্য কামনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ন্যায্যমূল্যের দোকান পরিচালক সমিতি হচ্ছে সরকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মানুষ যাতে সহজেই রেশনশপের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন তারজন্য সরকার সবসময় সচেষ্ট। রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করা। এই লক্ষ্যে সরকার জনস্বার্থে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্গদর্শনে রাজ্য সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে ২,০৬০টি রেশন শপের মধ্যে মহিলা পরিচালিত রেশনশপ রয়েছে ২৮ ১টি। রাজ্যে ৩টি ট্রানজিট খাদ্য গোদাম রয়েছে। তাছাড়া ৭৬ হাজার ৩০০ মেট্রিকটন ক্ষমতা সম্পন্ন ৬২টি বিভিন্ন স্থানে ১৩৭টি খাদ্য গোদাম রয়েছে। এফ সি আই-এর ডিপো রয়েছে ৭টি স্থানে। এগুলির ক্ষমতা ৪৭ হাজার ২০০ মেট্রিকটন। গত ৫ বছরে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ৭ হাজার মেট্রিকটন ক্ষমতাসম্পন্ন ১১টি খাদ্য গোদাম গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি গত ৫ বছরে রাজ্যে ২৫২টি ন্যায্যমূল্যের দোকান খোলা হয়েছে। ৫ হাজার ৭০২টি ব্লু রিয়াং শরণার্থী পরিবারকে অন্ত্যোদয় রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের খাদ্য গোদামে নিযুক্ত ২৬ জন মহিলা ক্লিনারের দৈনিক মজুরির পরিমাণ ১৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০৬ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে গণবন্টন ব্যবস্থায় ফর্টিফায়েড চাল, গম, আটা, আয়োডিন যুক্ত লবন, মসুর ডাল, চিনি, সরিষার তেল এবং কেরোসিন তেল দেওয়া হয়। তিনি জানান, ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যে বছরে দু'বার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। এক দেশ এক রেশন কার্ড কর্মসূচির মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকরাও দেশের যেকোনও ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে তাদের প্রাপ্য রেশনসামগ্রী সংগ্রহ করতে পারছেন। বর্তমানে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতাধীন প্রায়োরিটি হাউজহোল্ড রেশন কার্ডধারী পরিবারগুলিকে প্রতিমাসে মাথাপিছু ৫ কেজি করে এবং অন্ত্যোদয় রেশন কার্ডধারী পরিবারগুলিকে প্রতি মাসে কার্ড পিছু ৩৫ কেজি করে চাল বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে খাদ্য জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার রেশন ডিলার বান্ধব একটি সরকার। রাজ্য সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের কাছে বিভিন্ন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। গণবন্টন ব্যবস্থা হচ্ছে এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এক্ষেত্রে রেশন ডিলারগণ প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে চলেছেন। কোভিড অতিমারির সময়েও রেশন ডিলারগণ জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষের কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌছে দিয়েছিলেন। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ সফল করতে গেলে রেশন ডিলারদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী বলেন, রাজ্যের গণবন্টন ব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী রেশনশপের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার সচেষ্ট। রাজ্য সরকার রেশন ডিলারদের দাবিদাওয়া পূরণের বিষয়েও আন্তরিক। বর্তমানে রাজ্যের গণবন্টন ব্যবস্থা অনেকটাই সুষ্ঠু ও শক্তিশালী হয়েছে। রেশন শপের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বিধায়ক মীনা রানী সরকার, সম্মেলনের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক শেখর আচার্য্য উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা ন্যায্যমূল্যের দোকান পরিচালক সমিতির আহ্বায়ক প্রদীপ চন্দ৷