Hare to Whatsapp
ড. আম্বেদকর পরাধীন ভারতে কুসংস্কার, বর্ণপ্রথা, জাতপাত ব্যবস্থা দূরীকরণে আপোষহীন সংগ্রাম করে গেছেন : তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪: সংবিধান প্রণেতা ভারতরত্ন বাবাসাহেব ড. বি আর আম্বেদকর সারা জীবন দেশের অবহেলিত, দলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে গেছেন। তিনি এক নতুন ভারত গড়তে চেয়েছিলেন। যেখানে সকলের সমান অধিকার থাকবে। তাই বর্তমান প্রজন্মকে ড. আম্বেদকরের মত, পথ ও আদর্শ গ্রহণ করতে হবে। তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস ৩ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং প্রেক্ষাগৃহে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত ২০২৩ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ১ম থেকে ১০ম স্থানাধিকারী ৯ জন তপশিলি জাতি অংশের ছাত্রছাত্রীদের ড. বি আর আম্বেদকর বিশেষ মেধা পুরস্কার, স্বর্ণপদক এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ তপশিলি জাতিভুক্ত ৭১৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে মেধা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, ড. আম্বেদকরের জীবন ও সংগ্রাম আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। তাঁর কর্ম ও কৃতিত্বের জন্য পুরো বিশ্ব আজ ড. আম্বেদকরকে শ্রদ্ধা করে। তিনি বলেন, ড. আম্বেদকর পরাধীন ভারতে কুসংস্কার, বর্ণপ্রথা, জাতপাত ব্যবস্থা দূরীকরণে আপোষহীন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, পরীক্ষায় সফলতা পাওয়া কোন চূড়ান্ত বিষয় নয়। এটা চলমান প্রক্রিয়া। একে অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, স্থপতি, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী হবে। সমাজ তাদের কাছ থেকে অনেক আশা করে। তাই সংকীর্ণতা পরিহার করে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন ব্লকে বিদ্যাজ্যোতি স্কুল, পিএম শ্রী স্কুল এবং নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। এইসব কিছুর মূল কারণ হলো আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে দেশের বিভিন্ন বড় শহরের ছেলে মেয়েদের থেকে শিক্ষায় পিছিয়ে না থাকে। তিনি বলেন, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তর তপশিলি জাতির ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রি- মেট্রিক, পোস্ট মেট্রিক স্কলারশিপ প্রদান সহ বোর্ডিং হাউজ ও শিক্ষা পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা প্রবেশন্যাল কোর্স যেমন ডাক্তারি, ইঞ্জিনীয়ারিং, নার্সিং, ফার্মাসিস্ট, এগ্রি বিএসসি, ভেটেরিনারি পড়তে চায় তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তর তাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।
সম্মানিত অতিথির ভাষণে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য বলেন, শিক্ষা হলো জাতির মেরুদন্ড। তাই রাজ্য সরকার সকলের কাছে শিক্ষা পৌছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাগত ভাষণে তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব বি এস মিশ্র তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১ম থেকে ১০ম স্থানাধিকারি ৯ জন তপশিলি জাতির ছাত্রছাত্রীর প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া প্রত্যেককে দেওয়া হয় স্বর্ণপদক, শংসাপত্র ও বই। এছাড়া ২০২৩ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সদর, জিরানীয়া এবং মোহনপুর মহকুমায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ মোট ৪৭১ জন তপশিলি জাতির ছাত্রছাত্রীকে ১৫০০ টাকা করে পুরস্কৃত করা হয়। দেওয়া হয় শংসাপত্র। এছাড়াও সদর মহকুমায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ মোট ২৪৪ জন নবম শ্রেণীর তপশিলি জাতি মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে ৭০০ টাকা করে পুরস্কৃত করা হয়। দেওয়া হয় শংসাপত্র। অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। উপস্থিত ছিলেন তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা অসীম সাহা, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকগণ। অনুষ্ঠান শুরুর আগে অতিথিগণ ড. আম্বেদকরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। সভাপতিত্ব করেন ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ কনজিউমার ফেডারেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান টুটন দাস।