Hare to Whatsapp
পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে : পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪: বিশ্বের দরবারে রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে তুলে ধরতে রাজ্য সরকার বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করছে। পর্যটন শিল্পের বিকাশে গত বছরের অক্টোবর মাসে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীকে ত্রিপুরা পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যে পর্যটকদের আগমন ও রাজস্ব আয়ের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর এই তিন মাসে রাজ্যে পর্যটকদের আগমন এবং পর্যটন দপ্তরের রাজস্ব আয়ের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর এই তিন মাসে ৮৪ হাজার ২১৭ জন পর্যটক রাজ্যে এসেছেন। এর মধ্যে বৈদেশিক পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৯৬৪ জন এবং রাজস্ব আদায় হয় ১ কোটি ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। 2023-24 অর্থবছরে এই তিন মাসে রাজ্যে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ১৮৩ জন পর্যটক ত্রিপুরা ভ্রমণ করেন। এর মধ্যে বৈদেশিক পর্যটক ছিল ১৯ হাজার ৬১৪ জন এবং দপ্তরের রাজস্ব আদায় হয় ১ কোটি ২৩ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। তিনি জানান এই পরিসংখ্যানেই প্রতিফলিত হচ্ছে সৌরভ গাঙ্গুলীকে পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার ফলে রাজ্যে পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামীদিনে রাজ্যে পর্যটকদের আসার সংখ্যা আরও বাড়বে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী জানান, রাজ্য পর্যটনের বিকাশে আরও কিছু উন্নয়নমূলক কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ছবিমুড়াতে ৫১টি লগ হাট নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে ৪১টি লগ হাট চালু করা হয়েছে, বাকি ১০টি লগ হাটগুলিও শীঘ্রই চালু করা হবে। প্রাথমিকভাবে নারকেলকুঞ্জের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ১১টি হোম স্টে এবং জম্পুই হিলে ৪টি হোম স্টে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি হোম স্টে শীঘ্রই চালু করা হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, আগামী দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই রকম হোম স্টে চালু করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এছাড়াও রাজ্য সরকারের লক্ষ্য রয়েছে হোম স্টে পলিসি তৈরী করা। তিনি জানান, ডোনার মন্ত্রকের আওতাধীনে নর্থ ইস্ট স্পেশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট স্কিমে নারকেলকুঞ্জের আশেপাশে আরও ৪টি আই ল্যান্ড যথাক্রমে চিত্তপাড়া, অমূল্যসাধন পাড়া ও টুইন আইসল্যান্ড ইত্যাদি পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নর্থ ইস্ট স্পেশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট স্কিম থেকে ৩০ কোটি টাকা প্রাথমিকভাবে অনুমোদন পাওয়া গেছে এবং এর জন্য ডিপিআর তৈরীর কাজ চলছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী জানান, পর্যটন পরিকাঠামো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহায়তায় ছবিমুড়া, কৈলাশহরের সোনামুখী এলাকা, চতুর্দশ দেবতা মন্দির এবং কসবা কালী মন্দির চত্বরের পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। চতুর্দশ দেবতা মন্দির এবং কসবা কালী মন্দিরের জন্য এই প্রকল্পে ব্যায় করা হবে যথাক্রমে ১২ কোটি ৫১ লক্ষ এবং ১৭ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। পর্যটন মন্ত্রী আরও জানান, মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের উন্নয়নে ভারত সরকার প্রসাদ প্রকল্পে ৩৭ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে এবং এর কাজ চলছে। এই প্রকল্পে ইতিমধ্যে ২৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পে আগরতলা ও ঊনকোটি ডেস্টিনেশনকে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই দুটি ডেস্টিনেশনের জন্য প্রায় ৭০ কোটি করে ১৪০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। তিনি জানান, ডম্বুর জলাশয়ের জন্য অত্যাধুনিক হাউজবোট ক্রয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ কে চাকমা ও অধিকর্তা তপন দাস।