Hare to Whatsapp
বর্তমান সরকারের লক্ষ্য রাজ্যের জিডিপিতে শিল্পের অংশ ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৪: রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশে শিল্পক্ষেত্রের উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাজ্যে এখন শিল্পের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বিনিয়োগকারীরাও রাজ্যে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য রাজ্যের জিডিপিতে শিল্পের অংশ ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া। ২৫ জানুয়ারি হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে ৩৪তম শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে গত ৫-৬ বছরে গড়ে ২৫-৩০টি নতুন মাঝারি শিল্প কারখানা স্থাপিত হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের অধীনে ১৪টি শিল্পনগরীতে ৩১৫টি মাঝারি ও বড় শিল্প ইউনিট চালু রয়েছে। এই শিল্প ইউনিটগুলিতে ৭ হাজারেরও বেশি কর্মী কর্মরত রয়েছেন। এর বাইরেও রাজ্যে বহু শিল্প কারখানা রয়েছে। উল্লেখ্য, এবারের মেলায় ৪৪টি আন্তর্জাতিক, ১৩০টি বহির্রাজ্যের, ২৪৬টি স্থানীয় এবং অন্যান্য ৮৩টি সরকারি ও সরকার অধিকৃত স্টল সহ মোট ৫০৩টি স্টল খোলা হয়েছে। মেলায় বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড ও দুবাই ছাড়াও দেশের ১৭টি রাজ্য থেকে উদ্যোগীরা তাদের স্টল খুলেছেন। ৩৪তম শিল্প ও বাণিজ্য মেলার সমাপ্তি হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আরও বলেন, বিগত সরকারের সময়ে রাজ্যে শিল্প স্থাপনের পরিবেশ প্রায় ছিলো না। বর্তমানে এই অবস্থার পরিবর্তনের ফলে স্থানীয় ও বহির্রাজ্যের উদ্যোগীগণ ছোট ও মাঝারি শিল্প কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্যোগীরা রাবার, আগর, চা ভিত্তিক শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমান সরকারের সময়ে স্বাগত পোর্টাল, ইন্ডাস্ট্রি পলিসি, ত্রিপুরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনসেনটিভ স্কিম ২০২২ লাগু করার ফলে রাজ্যে শিল্প স্থাপনের পরিবেশ এক অন্যমাত্রা পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাজ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ বিরাজ করছে। এই শান্তিই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। ভোকাল ফর লোকালের স্লোগান, স্বসহায়ক দল গঠন, রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় হীরা মডেল সহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনার ফলে রাজ্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। অচিরেই এই মেলা প্রাঙ্গণের সন্নিকটে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ইউনিটি মল স্থাপন করা হবে। যেখানে সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদিত সামগ্রীগুলি প্রদর্শিত করা হবে। উদ্দেশ্য একটাই বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বন্ধনের সাথে সাথে শিল্প ও উৎপাদিত সামগ্রীর বৈচিত্র্যকে তুলে ধরা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে ন্যাশনাল ব্যাম্বো মিশনে ৬৪টি বাঁশ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এরজন্য ১০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে ৬.৫ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর রাজ্যে শিল্প স্থাপনের পরিবেশকে উন্নত করার জন্য গ্রোথ সেন্টার, ইন্ডাস্ট্রি পার্ক, ফুড পার্ক, রাবার পার্ক, আইটি পার্ক স্থাপন করেছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য, বিধায়ক মীনারাণী সরকার, আগরতলাস্থিত বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ, ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান নবাদল বণিক প্রমুখ। উল্লেখ্য, এবারের শিল্প ও বাণিজ্য মেলার থিম হচ্ছে ‘প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন'। মেলার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে টেকনোলজি প্যাভেলিয়ন ও পলিসি প্যাভেলিয়ন করা হয়েছে। মেলায় প্রতিদিন বাঁশ, আগর, রাবার, স্টার্ট আপ, সেলফ এমপ্লয়মেন্ট স্কিম, পিএম-বিশ্বকর্মা, মহিলা ক্ষমতায়ন প্রভৃতি নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।