Hare to Whatsapp
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও দেশাত্ববোধের ভাবনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ২৫ , ২০২৪: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাঁরা নিজের জন্য ভাবেননি। তাঁরা আমাদের জন্য ভেবেছেন। শহীদ হয়েছেন। এজন্যই আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও দেশাত্ববোধের ভাবনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আজ সন্ধ্যায় ওএনজিসি ব্যাঙ্ক চৌমুহনীতে চিরসাথী সংঘের পাঁচদিনব্যাপী শিশু উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী চিরসাথী সংঘের স্বরণিকা ‘কাকলী’ এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন।
শিশু উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন ক্লাব শিশু মেলার আয়োজন করছে। এটা শুভ উদ্যোগ। একটি চারা গাছকে যেমন যত্ন করে বড় করতে হয়, তেমনি শিশুদেরও যত্ন করে বড় করতে হবে। শিশুদের ভবিষ্যৎ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য শিশুদের নিজ নিজ এলাকায় সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। সুস্থ পরিবেশ পরিমন্ডল শিশু মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মেধা ও মননের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুর মানসিক বিকাশে মা বাবা, অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই রাজ্যকে, এই দেশকে শ্রেষ্ঠ করার স্বপ্ন শিশুদের মনে বপন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী চিরসাথী সংঘের বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন তাদের এই সামাজিক কর্মকান্ড আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুরনিগমর মেয়র দীপক মজুমদার। তিনি বলেন, শিশুদের মানসিক, সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য এধরণের উদ্যোগ খুবই প্রয়োজন। তিনি শিশু উৎসবের সাফল্য কামনা করেন। বক্তব্য রাখেন বিধায়ক মীনা রাণী সরকার। উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেটর সবিতা কর। সভাপতিত্ব করেন চিরসাথী সংঘের সভাপতি শান্তি দেব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু উৎসব উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ মজুমদার।
আজ সন্ধায় চিরসাথী সংঘের শিশু উৎসবের উদ্বোধনের পর ভট্টপুকুরস্থিত মর্ডাণ ক্লাবের হীরকজয়ন্তী বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ক্লাব সংস্কৃতি বহু পুরোনো। এলাকার জনগণের মধ্যে সমাজসেবামূলক পরিষেবা প্রদানে অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ক্লাব। আমিত্ব ত্যাগ করে সবার জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে এধরণের প্ল্যাটফর্ম খুবই প্রয়োজন। তিনি বলেন, সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে সুস্থ সমাজ গঠনেও ক্লাবগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। এলাকার জনগণের বিভিন্ন সমস্যা নিরপেক্ষভাবে সমাধানে ক্লাবগুলি এলাকাবাসীর আস্থার প্রতীক হিসেবে গড়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বিগতদিনে ক্লাবগুলির মধ্যে সব সময় একটা আতঙ্কের পরিবেশ লক্ষ্য করা যেত। বর্তমানে এই অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ক্লাবগুলি এলাকার বিভিন্ন সমস্যার যেমন গার্হস্থ সমস্যা, জমি সংক্রান্ত সমস্যা সহ নানা সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ শান্তি চায়। রাজ্য সরকার রাজ্যে শান্তির পরিবেশ বজায় রাখার উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ত্রিপুরা আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বারে পরিণত হলে ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, মর্ডাণ ক্লাব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াক্ষেত্রে রাজ্যে একটা বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। বর্তমান ক্লাবগুলি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজেও এগিয়ে এসেছে। ক্লাবগুলির মধ্যে এখন একটা সুস্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শানিত দেবরায় এবং মর্ডাণ ক্লাবের সভাপতি সজল চক্রবর্তী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেটর অভিজিৎ মল্লিক, কর্পোরেটর সম্পা সরকার চৌধুরী, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক সেবক ভট্টাচার্য প্রমুখ।