Share Whatsapp
রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জানুয়ারি ১৬, : রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই লক্ষ্যে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা বাস্তবায়নেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি উত্তর বাধারঘাটস্থিত শঙ্করাচার্য বিদ্যায়তন দ্বাদশ শ্রেণী বালিকা বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ১৯৬৫ সালে ব্রাহ্মলীন স্বামী বিষ্ণুপুরী মহারাজজী শঙ্করাচার্য বিদ্যায়তন প্রতিষ্ঠা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তা কার্যকর করেছে। বিভিন্ন বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষাগত গুণের তারতম্য মেটাতে ২০১৯-২০ সালে এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে। দেশে গুণগত শিক্ষার প্রসারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি রাজ্যে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও রাজ্য সরকার নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে 'ত্রিপুরা সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন” এবং “ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন' চালু করেছে। প্রতি বছর ৩০ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে জেইই / নীট পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোচিং নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, ককবরক, মণিপুরী, হালাম, চাকমা ইত্যাদি ৮টি জনজাতি ভাষার পাঠ্যবই বিলি করা হচ্ছে। কলেজস্তর পর্যন্ত ছাত্রীদের বিভিন্ন ফি মকুব করা হয়েছে, নবম শ্রেণীতে পাঠরত প্রায় ১ লক্ষ ছাত্রীকে বিনামূল্যে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মৌলিক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে নিপুণ ত্রিপুরা প্রকল্প চালু করা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের বিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে পরিচিতির জন্য মিশন মুকুল নামে কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার সমগ্র শিক্ষা প্রকল্পের অধীনে ৭৫২টি বিদ্যালয়ে ইতিমধ্যেই স্মার্ট ক্লাস চালু করেছে এবং আরও ৬০টি বিদ্যালয়ে শীঘ্রই স্মার্ট ক্লাস চালু করা হবে। রাজ্যের ১০৬টি বিদ্যালয়ে টিস্কারিং ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবং ২৯৫টি বিদ্যালয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দ্বাদশ মান পরীক্ষায় প্রথম ১০০ জন স্থানাধিকারী ছাত্রীকে বিনামূল্যে স্কুটি দেওয়া হবে। রাজ্যের দিব্যাঙ্গ দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা লাভে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে চিফ মিনিস্টার্স স্পেশাল স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, নারী শিক্ষার প্রসারকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে শঙ্করাচার্য বিদ্যায়তন সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারও নারী শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্য থেকেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে রকম শিক্ষা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শঙ্করাচার্য বিদ্যায়তন দ্বাদশ শ্রেণী বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শবরী সাহা, আগরতলা পুরনিগমের কর্পোরেটর সম্পা সরকার চৌধুরী এবং বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সম্পাদক দুলাল সাহা।