Share Whatsapp

কেন্দ্রীয় সরকার বিকশিত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে : নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, ডিসেম্বর ২১, : রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হলে পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরা নানা দিক দিয়ে উপকৃত হবে। এতে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে তেমনি রাজ্যের উৎপাদিত সামগ্রীর চাহিদা অন্যত্রও গিয়ে পৌঁছবে। এক্ষেত্রে আনারস, রাবার, আগর, বাঁশ, কাঁঠাল বড় ভূমিকা নিতে পারে। ২০ ডিসেম্বর সকালে সরকারি অতিথি নিবাসে রাজ্যের শিল্পপতি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত একথা বলেন। তাছাড়াও সরকারি অতিথি নিবাসে নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, শিক্ষাবিদ ও রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে নীতি আয়োগের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিকশিত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে কিভাবে রাজ্যগুলিকে আরও এগিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। সমাজের কোনও ব্যক্তি যাতে উন্নয়নের ধারা থেকে বাদ না যান তা সুনিশ্চিত করাই হচ্ছে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার প্রধান লক্ষ্য। এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির বড় ভূমিকা রয়েছে। সবার পরামর্শ নিয়েই বিকশিত ভারত গঠনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, নীতি আয়োগ হচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে সমন্বয় সেতু।

রাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিন নীতি আয়োগের প্রতিনিধিদলটি আজ সকালে সমাজের তিনটি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে এই রাজ্যের সমস্যাগুলি সম্পর্কে অবহিত হন। এই সব সমস্যা দূর করে কিভাবে সমন্বিত উদ্যোগে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়েও নীতি আয়োগের প্রতিনিধিদল পরামর্শ দেন।

নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত বলেন, গতকাল রাজ্যের উন্নয়নের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিবের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। একটা বিষয় পরিষ্কার যে রাজ্যের উন্নয়নের ব্যাপারে শিল্পের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। ভৌগোলিক দিক দিয়ে এই রাজ্যের নানা সমস্যা থাকলেও বিশেষ কিছু শিল্প এখানে দারুণভাবে সফল হতে পারে। নানা প্রতিকূলতা সত্বেও ত্রিপুরার আনারসের সুনাম গোটা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গেছে। একে কাজে লাগাতে হবে। চা শিল্পের ক্ষেত্রে গ্যাস ব্যবহার না করে মিথানল ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়ে ড. সরস্বত বলেন, এতে একদিকে যেমন অর্থের সাশ্রয় হবে তেমনি পরিবেশ দূষণও অনেক কম হবে। আনারসকে ভিত্তি করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তোলা হলে এটি অনেক লাভজনক হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ছোটোখাটো কোনও স্টোরেজ গড়ে তোলা হলে এই সুস্বাদু ফলের ব্যবহার দীর্ঘদিন ধরে করা যাবে। তিনি পিপিপি মডেলে ওয়ার হাউস গড়ে তোলার জন্যও শিল্পোদ্যোগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পর্যটন দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে পর্যটনের বিকাশে কাজ করার জন্যও তিনি শিল্পোদ্যোগীদের পরামর্শ দিয়েছেন।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনাকালে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বিরাট ভূমিকা রয়েছে। মানব সম্পদের বিকাশে তারা যেমন নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তেমনি রাজ্যের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সব বিষয়েই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনীমূলক অনেক কাজ করা যায় এবং এই ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বিরাট ভূমিকা নিয়েছে। সমৃদ্ধশালী ত্রিপুরা গড়ে তোলার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় এমন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ড. সরস্বত পরামর্শ দিয়েছেন। রাজ্যে উৎপাদিত রাবারের কাঠ থেকে যাতে আসবাসপত্র তৈরি করা যায় সে বিষয়ে নজর দিতেও তিনি সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় দীর্ঘ বনাঞ্চল রয়েছে। এখানে পাওয়া বায়োমাসকে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে। শুধু তাই নয় ত্রিপুরায় উৎপাদিত বাঁশকে ভিত্তি করে অনেক কিছু গড়ে তোলা যায়। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাবার টেকনোলজির উপর কোর্স চালু করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এক একটি বিষয়ের উপর রাজ্যে স্টেট অব এক্সিলেন্স থাকা উচিত বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্কের ফান্ডামেন্টাল কোর্স চালু করার উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

বৈঠকে নীতি আয়োগের সিনিয়র এডভাইজর রাজীব কুমার সেন বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ দেন। রক্তাল্পতা, মানসিক স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজের সব অংশের মানুষ যাতে উন্নয়নের সুফল পেতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। বৈঠকে নীতি আয়োগের উপসচিব হেমন্ত কুমার মীনা, এআইএম-এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর হিমাংশু যোশী, রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, শিল্প দপ্তরের অধিকর্তা বিশ্বশ্রী বি এবং তিনটি ক্ষেত্রের বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.