Hare to Whatsapp
ডেন্টাল কলেজটিকে একটি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ডিসেম্বর ১৯, : আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম ফলক। এই কলেজ রাজ্যের ছেলেমেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত তৈরি করবে। তাই এই ডেন্টাল কলেজটিকে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে 'সেন্টার অব এক্সিলেন্সে' পরিণত করার জন্য সকলকেই সচেষ্ট থাকতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যের গর্ব এই ডেন্টাল কলেজটিকে একটি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেও সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। ১৮ ডিসেম্বর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজের প্রথম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজের পরিকাঠামো দেশের যেকোনও ডেন্টাল কলেজের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। যে সমস্ত ফ্যাকাল্টি বা ইনস্পেক্টর এই ডেন্টাল কলেজ পরিদর্শন করেছেন তারা সবাই এই কলেজের পরিকাঠামোর ভূয়সী প্রশংসা করে গেছেন। এরফলে এই কলেজটি খুব দ্রুত ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুমোদন পেয়েছে। এই কলেজ স্থাপনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে নানা বাধার সম্মুখীনও হতে হয়েছিল। কিন্তু বহু প্রচেষ্টার পর রাজ্যে এই কলেজ স্থাপন সম্ভব হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ডোনার মন্ত্রক এই ডেন্টাল কলেজটির পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন যে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন না হলে দেশেরও উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে রাজ্যে বর্তমানে ২টি মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ, রিপস্যাট, ডেন্টাল কলেজ সহ বহু সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেগুলিকে ভিত্তি করেই আগামীদিনে রাজ্যে মেডিক্যাল হাব গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সমস্ত অংশের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে সরকার আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। রাজ্যের প্রধান হাসপাতাল জিবিপি ও আইজিএম হাসপাতালে রেফারেল রোগীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে জেলা ও মহকুমা হাসপাতালগুলিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা হাসপাতালগুলিতে দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ক্যান্সার রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান আরও সহজতর করার লক্ষ্যে অটলবিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার সেন্টারে 'মেরা হাসপাতাল' পোর্টাল চালু করা হয়েছে। শুধু তাই নয় রোগীদের সার্বিক চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে জিবিপি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৭২৭ থেকে বাড়িয়ে ১৪১৩ করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে নতুন ১০০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে একটি নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার সংকল্প নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজের উদ্বোধন করেন। সেদিন রাজ্যবাসীর দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। রাজ্যবাসীর এই স্বপ্নপূরণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ শালু রায় ও ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার সভাপতি ডাঃ সমীর রঞ্জন দত্ত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডঃ সন্দীপ আর রাঠোর, ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিসের অধিকর্তা ডাঃ সুপ্রিয় মল্লিক, মেডিক্যাল এডুকেশনের অধিকর্তা ডাঃ এইচ পি শর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ অধিকারের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা দিলীপ কুমার চাকমা প্রমুখ।