Share Whatsapp

প্রাইড অফ ত্রিপুরা হিসাবে টিএসআর বাহিনী রাজ্যে নিজেদের স্বতন্ত্রতা প্রতিষ্ঠিত করতে পেয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, ডিসেম্বর ২, : ত্রিপুরাবাসী ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের (টিএসআর) জন্য গর্ব বোধ করে৷ প্রাইড অফ ত্রিপুরা হিসাবে টিএসআর বাহিনী রাজ্যে নিজেদের স্বতন্ত্রতা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। শুধু ত্রিপুরা রাজ্যে নয়, সারা দেশেই এই বাহিনীর সুনাম রয়েছে। এই বাহিনী ত্রিপুরার গর্ব। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মোকাবিলায় টিএসআর বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। ১ ডিসেম্বর আর কে নগরস্থিত এ সি রামারাও ট্রেনিং সেন্টারে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের ১৪ ও ১৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের পাসিং আউট প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মোকাবিলায় টিএসআর’র অনেক জওয়ান আত্মবলিদান দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নিরাপত্তা রক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এমনকি সামাজিক কাজেও টিএসআর বাহিনীর জওয়ানরা তাদের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিয়েছেন। আগামী দিনেও তা বহাল থাকবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, টিএসআর ১৪ ও ১৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ানে মোট ১,৪১৩ জনকে নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে মহিলা জওয়ান রয়েছেন ১৩৭ জন। নরসিংগড়ের কেটিডিএস পুলিশ ট্রেনিং একাডেমি, আর কে নগর টিএসআর ট্রেনিং সেন্টার, কচুছড়ায় কাউন্টার ইনসারজেন্সি ও অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কুল এবং জম্পুইজলাস্থিত টিএসআর ৭তম ব্যাটেলিয়ানের সদর দপ্তরে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আজ এসি রামারাও ট্রেনিং সেন্টার আর কে নগর থেকে মোট ৪৫৮ জন জওয়ান পাস আউট হলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৮৪ সালে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন সময়ে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর স্বল্পতার কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ন্যায় টিএসআর বাহিনী গঠন করা হয় মূলত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মোকাবিলার জন্য। টিএসআর বাহিনীর মূল লক্ষ্যই হল ‘বীরতা ও বন্ধুত্ব ’ এই থিম নিয়ে জওয়ানরা এগিয়ে চলেছে। ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টিএসআর বাহিনীর দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ান গড়ে তোলা হয়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে প্রায় ৮৫৬ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। বিএসএফ এর পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় টিএসআর জওয়ানদের দ্বারা দ্বিতীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছিল। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মোকাবিলায় টিএসআর বাহিনীর ভূমিকা সবসময় প্রশংসনীয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মোকাবিলা ছাড়াও বর্তমানে এই বাহিনী রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, বিপর্যয় মোকাবিলা, শিল্প নিরাপত্তা, ভিআইপি নিরাপত্তা ও নেশা বিরোধী অভিযানে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ১৪ ও ১৫ ব্যাটেলিয়ান বাহিনীর জওয়ানরা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। এনডিআরএফ এর ট্রেনিং সেন্টারে বিপর্যয় মোকাবিলা এবং আইন শৃঙ্খলার বিষয়ে সিআরপিএফ এর রেপিড অ্যাকশন ফোর্স-এর ট্রেনিং সেন্টারে টিএসআর জওয়ানরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বর্তমানে টিএসআর এর এক ব্যাটেলিয়ান ওএনজিসি'তে এবং এক কোম্পানী ওটিপিসি-তে নিরাপত্তার কজে যুক্ত রয়েছেন। তাছাড়া রাজ্যের শিল্পাঞ্চল এলাকার নিরাপত্তার' স্বার্থে টিএনজিসিএল এবং নিপকোতে টিএসআর বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চাহিদা অনুসারে দিল্লিতে পর্লামেন্ট স্ট্রিট, আদালত চতুর, বিভিন্ন দূতাবাস এলাকায় দিল্লি পুলিশের সাথে টিএসআর জওয়ানরা কাজে নিযুক্ত আছে ও দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনে আমাদের এই টিএসআর বাহিনীর জওয়ানদের নিযুক্ত করা হয়। রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামে প্রশাসনিক সুবিধা পৌঁছে দিতে টিএসআর বাহিনীর ক্যাম্পগুলি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলিত হয়ে সিভিক অ্যাকশন কর্মসূচিও পালন করছে। সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলি সম্পর্কে টিএসআর জওয়ানরা জনগণকে সচেতন করছেন। শহর এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতির লক্ষ্যে টিএসআর জওয়ানদের শহর এলাকায় নিয়োজিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এছাড়াও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য আগরতলা উদয়পুর, ধর্মনগর, আমবাসা, কুমারঘাট এবং বিলোনীয়ায় টিএসআর জওয়ানদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। টিএসআর বাহিনীর পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনয়ানদের শপথবাক্য পাঠ করান এ সি রামারাও ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ডেন্ট নারায়ণ রায় চৌধুরী। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন আইজিপি জি কে রাও। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জীতেন্দ্র কুমার সিনহা। মুখ্যমন্ত্রী এ সি রামারাও টিএসআর ট্রেনিং সেন্টারের একটি স্মরণিকার আবরন উন্মোচন করেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.