Hare to Whatsapp
সচিব পদ মর্যাদার অফিসার ছাড়া কোন সরকারী আধিকারিক মিডিয়ার সাথে কথা বলতে পারবেননা: এই সিদ্ধান্তে অফিসিয়েল তথ্য সঙ্কট আগামী দিনে আরও বাড়বে
By Our Correspondent
আগরতলা, এপ্রিল ১০, : লকডাউন রেগুলেশনস শুধু সাধারন মানুষের জন্যই নয়, লকডাউনের সময় গুলিতে রাজ্য সরকারেরও বেশ কিছু গুরত্বপূর্ন দায়িত্ব রয়েছে। লকডাউনের সময় সাধারন মানুষের যেসব নিয়ম বিধি মেনে চলতে হবে এখন পর্যন্ত এলক্ষ্যে রাজ্য সরকারের তরফে একত্রিত ভাবে কোথাও কোন লিফলেট প্রচার করা হয়েছে এমনটি এখন পর্যন্ত কোথাও চোখে পড়েনি। অধিকাংশ সরকারী সারকুলারই জারী হচ্ছে ইংরেজী তে। কিন্তু লকডাউনের সময় সাধারন মানুষের জন্যে যে একটি রিলিফ প্যাকেজ -এর লিফলেট বাংলাতে ঘোষণা করা হয়েছিল তার দশ লক্ষ কপি নাকি গ্রাম শহরে বিলি বন্টন করা হয়েছে। এরকম একটি লিফলেট অবশ্য আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। কিন্তু এই লিফলেটে বর্নিত যেসব সুবিধা সাধারন মানুষের জন্যে ঘোষণা করা হয়েছিল তার মধ্যে কতটি সুবিধা এখন পর্যন্ত রাজ্য সরকার বাস্তবায়ন করতে পেরেছে তা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর গুলিকে খতিয়ে দেখতে হবে। কেননা, বিভিন্ন জায়গা থেকেই অভিযোগ আসছে বহু রেশন দোকান বিপিএল, এপিএল ছাড়াও ৫০ হাজার গরীব মানুষকে দ্রুত বাছাই করে তাদেরও বিপিএল দর অনুযায়ী চাল, ডাল দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের খাদ্য দপ্তর এটা স্পষ্ট করে বলছেনা ৫০ হাজার লোককে চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা। কেননা বহু জায়গাতেই চলার পথে গরীব যারা ৫০ হাজারের কোটায় নুতন করে বিপিএল -এর সুবিধা পেতে পারে তারা এখন পর্যন্ত সেই সুবিধা পায়নি বলে অভিযোগ করছেন।
তার মধ্যে রাজ্য সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বীমার বাইরেও রাজ্য সরকার প্রতিটি ডাক্তার স্বাস্থ্য কর্মীদের 4 লাখ টাকা করে বীমার সুবিধা দেবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই সরকারী সার্কুলার প্রকাশ্যে আসেনি। স্টেট পোর্টালের কোথাও এই সার্কুলার দেখা যায়নি।
গত ৯ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী জিবি হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন যে, প্রয়োজনে স্বাস্থ্য কর্মীদের করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় মারা গেলে তার পরিবারকে সরকারী চাকুরি দেওয়া হবে। কিন্তু এব্যপারেও কোন সার্কুলার চোখে পরেনি।
একই রকম ভাবে গত ৩রা এপ্রিল রবীন্দ্র ভবনের ২ নং হলে রাজ্যের তথ্য সচিব শৈলেন্দ্র সিং সাংবাদিকদের সাথে কোভিড-১৯ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় কথা দিয়েছিলেন দিনে অন্তত তিন বার কোভিড-১৯ নিয়ে সাংবাদিকদের অফিসিয়ালি তথ্য দেওয়া যায় কিনা তিনি রাজ্য সরকারে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এজেন্সীর সাথে কথা বলে দেখবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিদিন একবার স্বাস্থ্য সচিব যে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন-সেখানেও সাংবাদিকদের সব প্রশ্নের উত্তর তারা দিতে পারছেন না। পুলিশের কোন প্রতিনিধি ওই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত না থাকায় পুলিশ সংক্রান্ত কোন তথ্যও সাংবাদিকরা পাচ্ছেন না।
তাছাড়া পূর্বে পুলিশ প্রতিদিন সন্ধ্যায় ই-মেল করে সংবাদপত্র অফিস গুলিতে প্রতি দিনের সব ঘটনাবলী নিয়ে যে প্রেস রিলিজ পাঠাতেন তাও ইদানিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার গত ৯ এপ্রিল নোটিশ জারী করে বলে দিয়েছেন যে, ডিজিপি, পিসিসিএফ, ড়ি এম বা সচিব পদমর্যাদার কোন অফিসার বা তাদের উপরের অফিসাররা ছাড়া কোন সরকারী আধিকারিক মিডিয়ার সাথে কথা বলতে পারবেননা।
সচিব পর্যায়ের অফিসারদের সব সময় হাতের নাগালে পাওয়া যায়না। তারা নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন বলে অনেকে ফোনও উঠাননা। এই অবস্থায় আগামী দিন গুলিতে অফিসিয়েল তথ্য সঙ্কট যে আরও বাড়বে তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।
আমার মনে হয়, অন্তত লকডাউনের দিন গুলিতে অন্তত পুলিশ দপ্তর, খাদ্য দপ্তর, স্বাস্থ্য দপ্তর , সাধারন প্রশাসন দপ্তর তাদের একজন অফিসারকে অফিসিয়েল তথ্য প্রদানের দায়িত্ব দিলে ভালো হবে। অন্যথায় সোশ্যাল মিডিয়ার মতো বিভিন্ন প্রথাগত প্রচার মাধ্যম গুলিতেও ভুল তথ্য প্রচারের সম্ভাবনা থেকেই যাবে। সব সময় সব সাংবাদিক ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য দেন না, অনেক সময় অফিসিয়েল তথ্যের অভাবেও অনিচ্ছাকৃত ভাবে ভুল হয়ে যায়। আর তখনই সরকার উঠে পড়ে লাগেন কিভাবে সেই প্রচার মাধ্যমকে দোষী সাব্যস্ত্য করে বাগে আনা যায়। এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসনের তাই উচিৎ হবে কোথাও যাতে কোন ভুল বার্তা না যায় সেজন্যে আগে বাগেই সত্য নিষ্ঠ অফিসিয়েল তথ্য যেন মিডিয়া পেয়ে যায় ।
তথ্য জানার অধিকার আইন- এর 4 নং ধারা অনুসারে সরকারী প্রশাসন বিভিন্ন সরকারী সিদ্ধান্ত না চাইতেই প্রদান করতে হবে জনগণকে। কিছু কিছু দপ্তর তা তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করলেও বহু দপ্তর তা করছেনা।