গুণমান বজায় রেখে যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে : পরিবহণ মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মে ৪, : পরিবহণ দপ্তর বর্তমানে সারা রাজ্যে ১৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ণের কাজ করছে। তবে এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ণের কাজ গুণগতমান বজায় রেখে ও যথাসময়ে করতে হবে। আগামীদিনে পরিবহণ দপ্তরের আরও নতুন নতুন প্রকল্প রাজ্যের জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ৩ মে রাজ্য সোনারতরী অতিথি নিবাসের কনফারেন্স হলে পরিবহণ দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন। পর্যালোচনা সভায় ‘স্পেশাল এসিসটেন্স টু স্টেটস ফর ক্যাপিটেল ইনভেস্টমেন্ট' ২০২৪-২৫ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে রয়েছে বিভিন্ন মোটর স্ট্যান্ড নির্মাণ, জেলা পরিবহণ ভবন নির্মাণ, সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ উদযাপন, আঞ্চলিক ড্রাইভিং টেস্টিং সেন্টার, ই-চালান, বাহন ও সারথী প্ল্যাটফর্ম, ইন্টার স্টেট বাস টার্মিনাল, গুড সামারিটন, কমিশনারেট বিল্ডিং নির্মাণ প্রভৃতি প্রকল্প। পর্যালোচনা সভায় পরিবহণ দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া, পরিবহণ দপ্তরের কমিশনার সুব্রত চৌধুরী, পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত বাদল নেগী, ট্রাফিক সুপার কান্তা জাহাঙ্গীর, পূর্ত দপ্তরের (আর এন্ড বি) অতিরিক্ত মুখ্য বাস্তুকার অনুপ কুমার দাস, এস বি আই ব্যাঙ্ক এর রিজিওন্যাল ম্যানেজার তমাল কিশোর দেববর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও জেলা পরিবহণ আধিকারিক, জেলা ট্রাফিক আধিকারিক, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি, এনআইসি, গ্রামোন্নয়ন, আইটি, মোটর ভ্যাহিকেল পরিদর্শকগণ, ত্রিপুরা আবাসন ও নির্মাণ পর্ষদের আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
পর্যালোচনা সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, পরিবহণ দপ্তরের সাথে অন্যান্য দপ্তরের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংযোগ রয়েছে। সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে সারা রাজ্যে যে সকল প্রকল্পের কাজ চলছে তার গুণমান বজায় রেখে সঠিক সময়ে যেন কাজ সম্পন্ন করা হয়। কোথাও যাতে কোন ধরণের গাফিলতি না থাকে। তিনি বলেন, জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য পরিবহণ দপ্তর ও ট্রাফিক দপ্তর প্রতি বছর সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করে। এই জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানকে স্কুল, কলেজ সহ তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দিতে হবে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় আহত হলে স্থানীয় জনগণের সাহায্যে আহতদের উদ্ধার করে কিভাবে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া যায় ও জীবন বাঁচানো যায় সে লক্ষ্যে বিগত দিনে কেন্দ্ৰীয় সরকার ‘গুড সামারিটান' বিষয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। এক্ষেত্রে যে ব্যক্তি আহতকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতেন কেন্দ্রীয় সরকার তাকে নগদে ৫ হাজার টাকা দিতেন। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এই স্কিমটার নাম বদলে ‘রাহ বীর’ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার এই নতুন স্কিমকে আরও অধিক জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে এই অর্থ ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করেছে।
তবে বর্তমানে ‘রাহ বীর' স্কীম সম্পর্কে রাজ্যের অনেকেই অবগত না হওয়ায় জেলা পরিবহণ আধিকারিক ও পুলিশকে এবিষয়ে জনগণকে আরও সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, পরিবহণ দপ্তর ক্যাশলেস সিস্টেম চালু করেছে। গত অর্থ বছরে পরিবহণ দপ্তর ১৫৫ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। ক্যাশলেস সিস্টেম চালু হবার পর তাতে স্বচ্ছতা এসেছে। রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ই-চালানের বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ট্রাফিক দপ্তর, এন আই সি, পরিবহণ প্রভৃতি দপ্তর মিলে নতুন ভাবে এস ও পি তৈরী করে ই-চালানকে আরও স্বচ্ছতার সাথে কিভাবে করা যায় এর চিন্তা ভাবনা চলছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থানুকূল্যে গোমতী নদীর মহারাণীতে নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য ড্রেজিং এর কাজ চলছে। মহারাণীতে জেটি ও আরও নৌকা দেবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে ছবিমুড়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষনীয় করে তোলা যায়। পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পর্যালোচনা সভায় বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক রাজেশ দাস। সভায় পরিবহণ দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া, পরিবহণ কমিশনার সুব্রত চৌধুরী, ট্রাফিক সুপার কান্তা জাহাঙ্গীর সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ আলোচনায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন...