Hare to Whatsapp
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ২, : আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ সহ ৩টি প্রকল্পের উদ্বোধনের ফলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় আমরা ভারত ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সাফল্য একত্রিতভাবে উদযাপন করছি। ১ নভেম্বর রাজ্যের বহু প্রতীক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একথা বলেন। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ ছাড়াও ভারত সরকারের অর্থানুকুল্যে নির্মিত আরও ২টি প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন। ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, বিদেশমন্ত্রী ডঃ সুব্রক্ষ্মনিয়াম জয়শঙ্কর এবং ভারত ও বাংলাদেশের রেলওয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ ছাড়াও ভারতের অর্থানুকুল্যে নির্মিত খুলনা-মংলাবন্দর রেল সংযোগ এবং মৈত্রী থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটের আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীগণ। আগরতলার সচিবালয়ে এই ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী ও অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, গত নয় বছরে উভয় দেশ পরিকাঠামোগত উন্নয়নসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একসঙ্গে যে সমস্ত কাজ করেছে তা আগের দশকগুলিতেও করা সম্ভব হয়নি। সীমান্তে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য উভয় দেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যা দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিলম্বিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় থেকেই ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আমরা গর্বিত যে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতের বড় অংশীদার। গত নয় বছরে উভয়দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বর্তমানে তিনগুন বেড়েছে। গত নয় বছরে ঢাকা, শিলং, আগরতলা, গুয়াহাটি এবং কলকাতার সাথে তিনটি নতুন বাস পরিষেবা চালু হয়েছে। আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ স্থাপনের ফলে ঢাকার মধ্যদিয়ে কলকাতার সঙ্গেও সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব হবে। এছাড়াও গত নয় বছরের সময়কালে চিটাগাঙ ও মংলা বন্দরের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতকে সংযুক্ত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত সরকার গত নয় বছরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৪টি নতুন ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট স্থাপন করেছে, যা উভয়দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও মজবুত করবে। নয় বছরের এই সময়কালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৩টি নতুন ট্রেন পরিষেবাও চালু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা' গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত সরকার সব সময়ই বাংলাদেশের পাশে থাকবে। কারণ আমাদের লক্ষ্য হল, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস নীতিতে কাজ করা।
আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের ভার্চুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বেশ মিল থাকায় হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ত্রিপুরার জনগণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে সহযোগিতা করেছে তা কখনো ভোলা যায় না। বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের কাছেও এই ইতিহাস তুলে ধরা প্রয়োজন। আজ যে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের জনগণ ও ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের জনগণও উপকৃত হবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি প্রদানের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসাও করেন। সম্প্রতি নয়াদিল্লীতে আয়োজিত জি-২০ দেশের শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আপ্যায়ন ও অতিথেয়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। দুদেশের প্রধানমন্ত্রী বোতাম টিপে এই তিনটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই অনুষ্ঠানে তিনটি প্রকল্পের উপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।