Share Whatsapp

ত্রিপুরাইনফো মেগা ক্যুইজ: ত্রিপুরার ছাত্র এবং যুবকদের মেধার প্রশংসায় উপ মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ উপস্থিত গুণীজনরা

By Our Correspondent

আগরতলা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯: আগরতলা, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯: গতকাল আগরতলা টাউন হলে প্রচুর দর্শকের উপস্থিতিতে ত্রিপুরাইনফো মেগা কুইজের ১৪তম সংস্করণে উপস্থিত সমস্ত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ত্রিপুরার ছাত্রছাত্রী এবং যুবকদের মেধার ভুয়শি প্রশংসা করেছেন। তাদের মতে, ত্রিপুরায় প্রতিভার অভাব নেই। তবে সময়ের প্রয়োজনে রাজ্যের জন্য এসব প্রতিভার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলের বর্তমান নেতা মানিক সরকার বলেছেন যে তিনি ২০০৫ সাল থেকে ত্রিপুরাইনফো ডটকম দ্বারা আয়োজিত সমস্ত মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান কালে তিনি বলেন, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে ত্রিপুরা প্রতিভা ও উন্নত মানবসম্পদে সমৃদ্ধ; ত্রিপুরার ছেলে-ময়েরা বহু ইউরোপীয় দেশ সমূহ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো জায়গায় বহু উচ্চ মেধার পেশাদার কাজে নিযুক্ত আছেন। ত্রিপুরার এই দুর্দান্ত মানবসম্পদকে রাজ্যের স্বার্থে দ্রুত কাজে লাগানো দরকার বলে তিনি বলেন। তিনি কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের এবং আয়োজকদের প্রশংসা করেন এবং তা প্রতি বছর চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

একই অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মাও বলেন যে ত্রিপুরার ছেলে-মেয়েরা বিশ্বজুড়ে সমস্ত পেশার ক্ষেত্রে পারদর্শিতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন ত্রিপুরার নতুন সরকারের নীতি হ'ল প্রতিভা যথাযথভাবে প্রস্ফুটিত করা, যা রাজ্য তথা দেশের এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশকে সহায়তা করবে। উন্নয়নের জন্য ত্রিপুরার সমৃদ্ধ প্রতিভার ভিত্তিকে আরও জোরদার করার ওপর তিনি জোর দিয়েছেন। তিনিও মেগা ক্যুইজের আয়োজকদের প্রশংসা করেন এবং তা প্রতি বছর চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

মেগা কুইজের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রবীণ সাংবাদিক শেখর দত্ত ত্রিপুরার ছেলে মেয়েদের বিরল প্রতিভার বেশ কিছু উদাহরণ দেন। তার মতে ত্রিপুরার ছেলে-মেয়েরা বিশ্বজুড়ে আজ নানা কাজে উজ্জ্বল। তিনি বলেন, গত শতাব্দীর ষাটের দশকের গোড়ার দিকে ব্রজগোপাল দেবনাথ ত্রিপুরা থেকে প্রথম আইআইটিতে পড়াশুনা করতে যান এবং তার কিছুদিন পরেই এক্ষনে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিজিপি অমিতাভ কর আইআইটিতে পড়াশুনা করতে যান; ত্রিপুরার সিদ্ধার্থ পুরকায়স্থ ১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (ডাব্লুবিএসই) উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিল; এই উজ্জ্বল উদাহরণ গুলি ত্রিপুরার অগণিত অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীদের কাছে অনুসরণ যোগ্য হয়েছিল। তার সুস্পষ্ট অভিমত ত্রিপুরার ছেলেমেয়েদেরও যথেষ্ট প্রতিভা রয়েছে এবং এখনও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে; যা ত্রিপুরাইনফোর মেগা ক্যুইজে এলে প্রতিযোগীদের মেধা দেখে বোঝা যায়।

ত্রিপুরাইনফোর ক্যুইজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এমন অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন বিধায়ক দিলীপ দাস, ওএনজিসি ত্রিপুরার প্রধান নির্বাহী পরিচালক ওপি সিংহ, রাজনৈতিক নেতা রাজীব ভট্টাচার্জি, প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার ও মন্ত্রী পবিত্র কর, প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন, রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট অ্যাডভোকেট পীযুষ বিশ্বাস, ত্রিপুরা শিশু অধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন নীলিমা ঘোষ, ডিজিপি (ইনচার্জ) রাজীব সিং, সিইও (আইএলএস)হসপিটাল কিশোর আম্বুলি, হলিক্রস স্কুলের অধ্যক্ষ ফাদার ববি জন এবং 'দৈনিক সংবাদ' পত্রিকার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ দত্ত-ভৌমিক, হেডলাইন ত্রিপুরা 'নিউজ চ্যানেল – এর সম্পাদক প্রণব সরকার এবং আরও অনেক অবসরপ্রাপ্ত আইএএস, আইএফএস এবং আইপিএস অফিসার প্রমুখ।।

আগের বছর গুলির মতো এবছরও, 'স্কুল অফ সায়েন্স'-এর অধ্যক্ষ শ্রী অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য-ত্রিপুরাইনফো ডটকম-এর সাথে মেগা ক্যুইজের সহযোগী সংগঠক ছিলেন-এবং ক্যুইজ মাস্টার হিসাবে তার পারদর্শিতা তুলে ধরেন। অন্য দু'জন প্রখ্যাত ক্যুইজ মাস্টার হলেন, ত্রিপুরা স্বনামধন্য ক্যুইজ মাষ্টার নন্দু পানিককর এবং হাযদ্রাবাদের ভরত জৈন। ডঃ এম জে পানিককর যিনি বর্তমানে মধ্য প্রাচ্যের ওমানে চাকরিতে রয়েছেন এবং 'মেগা ক্যুইজ'-এর প্রাক্তন ক্যুইজ মাস্টার ছিলেন, ত্রিপুরায় ছুটিতে এসেও তিনি এই মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠানে ক্যুইজ মাস্টার হিসাবে কিছুক্ষণের জন্যে যোগ দিয়েছিলেন।

এছাড়া মেগা ক্যুইজ ইভেন্টটি পরিচালনা করার জন্য অ্যাঙ্কর হিসাবে আগের মত এবছরও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার খ্যাতনামা অ্যাঙ্কর মধুরীমা ভট্টাচার্য্য ও গোল্ডেন মাইক পুরস্কারপ্রাপ্ত রেডিও জকি কলকাতার প্রবীণ শেঠিয়া।

ত্রিপুরাইনফো মেগা ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় এবছর প্রথম পুরষ্কার দুটি ল্যাপটপ পেয়েছেন অমলান গুপ্ত এবং সৌপ্তিক চক্রবর্তী জুটি, দ্বিতীয় পুরষ্কার দুটি এলইডি টিভি সেট পেয়েছেন রঞ্জন পাল এবং দেবাঙ্কুর ভৌমিক জুটি এবং তৃতীয় পুরস্কার দুটি স্মার্ট মোবাইল সেট পেয়েছেন দীপঙ্কর কর ও তাপস চন্দ্র দেব জুটি। নগদ পাঁচ হাজার টাকার সেরা অডিয়েন্স – এর পুরস্কারটি পেয়েছেন দীপজয় দাস। হলিক্রস স্কুল এবছরও সেরা পারফরম্যান্সকারী স্কুল হিসাবে ১০ হাজারের নগদ পুরস্কার জিতেছে এবং রাফেল রাউন্ডে একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য সৈকত চৌধুরী জয়ী হয়েছেন এবং পুরস্কার হিসাবে ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন । আগরতলা টাউন হলে প্রচুর দর্শকের উপস্থিতিতে সামগ্রিকভাবে 'ত্রিপুরাইনফোর মেগা ক্যুইজ' এবছরও তার স্বাভাবিক সাফল্য ধরে রেখেছে।






You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.