Share Whatsapp

গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া দেশ ও রাজ্যের সার্বিক বিকাশ সম্ভব নয় : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, অক্টোম্বর ৪, : ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের মানুষের সমস্যাসমূহ শুনে আন্তরিকভাবে সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, কাজের মধ্য দিয়েই জনপ্রতিনিধিদের মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করতে হবে। তাই এমন কাজ করে যেতে হবে যাতে মানুষের কাছে সেগুলি ভবিষ্যতে স্মরণীয় হয়ে থাকে। ৩ অক্টোবর অরুন্ধুতিনগরে গ্রাম স্বরাজ ভবনে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটিগুলিকে ডিজিটাল লেনদেনে সক্ষম হিসাবে ঘোষণা এবং জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কার ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) রাজ্যভিত্তিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য অতিথিবর্গ। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েতরাজ প্রতিষ্ঠানগুলিতে ইউপিআই লেনদেন এবং অরুন্ধুতিনগর পঞ্চায়েতরাজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আধুনিক প্রশিক্ষণ মাধ্যম এবং পরিষেবা যেমন পঞ্চায়েত দর্শন (থ্রি-ডি মডেল ভিলেজ), থ্রি ফিগার স্ট্যাচু এবং গ্রাম সভা মডেল, ওয়াক লাইব্রেরী, ওয়ার্ক স্টেশন এবং চাইল্ডকেয়ার রুম ইত্যাদি পরিষেবা বোতাম টিপে উদ্বোধন করেন।

গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত দপ্তর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া দেশ ও রাজ্যের সার্বিক বিকাশ সম্ভব নয়। কারণ দেশের অধিকাংশ এলাকাই গ্রামাঞ্চল। গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত রাজ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার স্বচ্ছ নীতিতে বিশ্বাস করে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বচ্ছ নীতি গ্রহণ করে সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, বিগত সরকার সমস্যাসমূহকে জিইয়ে রেখে ক্ষমতায় থাকত। এই সরকার মানুষের মৌলিক সমস্যাবলীর সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এটাই বর্তমান ও বিগত সরকারের মধ্যে মূল পার্থক্য। বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশিত পথে সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডিজিটাল ভারত গড়ে তোলার আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্যে ই-অফিস, ই-ক্যাবিনেট পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতগুলিতে আজ ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে কাগজবিহীন বিষয়টিও যুক্ত হলো। ভারতবর্ষের মধ্যে ত্রিপুরাই প্রথম রাজ্য যেখানে এই ধরণের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। রাজ্য সরকারের আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আধিকারিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় তা সম্ভবপর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের মানুষের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতে হবে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মৈত্রী সেতু, বাংলাদেশের সাথে রেল সহ বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে ত্রিপুরার চেহারা বদলে যাবে। ত্রিপুরা আগামী দিনে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, কাজের কোন বিকল্প হয় না। গ্রামোন্নয়ন এবং পঞ্চায়েত দপ্তরের সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার ফলেই জাতীয় এবং রাজ্যস্তরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কারে সম্মানিত হচ্ছে রাজ্য। তিনি বলেন, জাতীয়স্তরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্রিপুরা পুরস্কৃত হলে আমাদের সকলেরই অত্যন্ত গর্ববোধ হয়। আগামী দিনে সারা দেশের প্রায় ২.৫ লক্ষ পঞ্চায়েতের কাছে ত্রিপুরার পঞ্চায়েতসমূহ রোল মডেল হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত রাজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভূয়সী প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গ্রাম এলাকার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। রাজ্যের অন্যান্য পঞ্চায়েত রাজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকেও শক্তিশালী করার উপরও মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, রাজ্যের ১১৭৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটিগুলিতে ইউপিআই ভিত্তিক লেনদেন ব্যবস্থা চালু করে ত্রিপুরা সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে৷ সম্প্রতি জি-২০ সম্মেলনে ভারতের পাবলিক ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারের বিষয়ে সারা বিশ্ব ভারতের প্রশংসা করেছে। তিনি বলেন, রাজ্যে ই- ক্যাবিনেট পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যে ৫৬টি দপ্তর ও সংস্থা সম্পূর্ণ ই- অফিস চালু করার ফলে শংসা পত্র লাভ করেছে। স্বাগত বক্তব্যে গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব ডা. সন্দীপ আর রাঠোর জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) প্রায় ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ২টি ঘর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই সাফল্যের জন্য ভারত সরকার আরও ১,৩০,০০০ ঘর বরাদ্দ করেছে। অনুষ্ঠানে ইউপিআই লেনদেনের উপর নির্মিত একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। রাজ্য সরকারের পদস্থ আধিকারিকগণও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ৮ জেলার জিলা পরিষদের সভাধিপতিগণ, সহকারি সভাধিপতিগণ, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, জেলাশাসকগণ সহ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতস্তরের জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.