Share Whatsapp

পর্যটন শিল্পের বিকাশে সর্বাগ্রে প্রয়োজন শান্তি নিরাপত্তা ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২৮, : পর্যটন শিল্পের বিকাশে সর্বাগ্রে প্রয়োজন শান্তি-নিরাপত্তা ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাজ্যে এখন শান্তির পরিবেশ রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও প্রভূত উন্নতি হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনাও বেড়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর আগরতলার উজ্জয়ন্ত প্যালেসে রাজ্যভিত্তিক বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৩’র উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। রাজ্যভিত্তিক বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৩’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের সার্বিক বিকাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি কার্যকর করেছে। এই পলিসি কার্যকর হওয়ার পর ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের পর্যটন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিকাশে গতি এসেছে। যা আগে পরিলক্ষিত হয়নি। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলি রাজ্যের পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন। এটা রাজ্যের পর্যটন শিল্পের প্রচার ও প্রসারে একটা উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। পর্যটন ক্ষেত্রগুলিতে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে রাজ্য সরকার ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে এখন উন্নত রেল, সড়ক ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। খুব দ্রুত আগরতলা থেকে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবাও চালু হবে। আগরতলা-আখাউড়া রেল যোগাযোগ এবছরই চালু হবে। সারুমে মৈত্রী সেতু চালু হয়ে গেলে ত্রিপুরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে। রাজ্যের শান্তির পরিবেশ বিনিয়োগকারীদের পর্যটন শিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগে উৎসাহিত করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্প আগামীদিনে রাজ্যের জিডিপি বাড়াতেও সহায়ক ভূমিকা নিতে সক্ষম হবে। আমাদের রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রগুলি এই সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে। আমাদের রাজ্যে প্রত্নতত্ত্বের যে সম্ভার রয়েছে তা পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে আকৃষ্ট করতে জনজাতি সম্প্রদায়গুলির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশেও সরকার প্রচেষ্টা নিয়েছে। তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের বিকাশ শুধু সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, এই কাজে জনসাধারণকেও এগিয়ে আসতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে ত্রিপুরাকে তুলে ধরতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি আগামী অক্টোবর মাসে দু'দিনের সফরে রাজ্যে আসবেন। ত্রিপুরার পর্যটন শিল্পের প্রচার ও প্রসারে তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে পর্যটন শিল্পের প্রচার ও প্রসারে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহায়তায় ১৬৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পর্যটন ক্ষেত্রগুলিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে স্বদেশ দর্শন-১ প্রকল্পে ৯০ কোটি টাকা এবং স্বদেশ দর্শন-২ প্রকল্পে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এ উপলক্ষে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের উদ্যোগে গ্রামীণ পর্যটনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য রাজ্যের মোহনপুর ব্লকের বিদ্যাসাগর ভিলেজ পুরস্কৃত হয়েছে। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, পর্যটনের মাধ্যমে সুস্থায়ী জীবিকার সংস্থান সম্ভব। পর্যটন শিল্পে কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেই রাজ্য সরকার পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, রাজ্যে গত ৩দিন ধরে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য পর্যটন শিল্পের বিকাশ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে পর্যটন দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। রাজ্যে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে এ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালে পর্যটনকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হয়। রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশে এখন পর্যন্ত ৩৯টি লগহাট নির্মাণ করা হয়েছে। ছবিমুড়ায় আরও ১০টি লগহাট নির্মাণ করা হবে। পর্যটন শিল্পের বিকাশে আগামী ৫ বছরে ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। অনুষ্ঠানে রাজ্যের পর্যটনকে জনপ্রিয় করতে বিশেষ ভূমিকা নেওয়ার জন্য ৬টি স্টেক হোল্ডারকে সম্মানিত করা হয়। তাছাড়াও বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে পাপিয়া সোম, অভিষেক দেবনাথ ও ঋতম জনপদি। অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কারগুলি তুলে দেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.